বাংলাদেশ বার্তা : ২০ জানুয়ারি ২০১৫
২০ দলীয় জোটের দেশব্যাপী ঘোষিত মিছিল, সমাবেশ ও গণঅবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রেখে ব্যর্থ, অকার্যকর, সন্ত্রাসী সরকারের পতন ঘটানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান আজ ২০ জানুয়ারী নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেনঃ-
“২০ দলীয় জোটের দেশব্যাপী ঘোষিত মিছিল, সমাবেশ ও গণঅবরোধ কর্মসূচি মোকাবেলায় ব্যর্থ আওয়ামী মহাজোট সরকার নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পন্থা পরিহার করে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। ক্ষমতাসীন ব্যর্থ, অকার্যকর, সন্ত্রাসী, ফ্যাসিবাদী সরকার সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষা এবং বাঁচার অধিকার আদায়ের আন্দোলন দমনের জন্য আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেফতার, অপহরণ, গুম এবং নৃশংসভাবে হত্যা করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নড়াইল পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি এড. ইমরুল কায়েসকে গুলি করে হত্যা করার পরে ১৯ জানুয়ারী রাতে ঢাকা মহানগরীর খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস জামাল জনিকে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে এবং রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ আমবাড়ি এলাকার একটি ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জনাব বুলবুল আহমাদ মিন্টুকে গ্রেফতার করার পর বিনা উস্কানিতে ঠা-া মাথায় তার পায়ে গুলি করে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ধরনের ঘাতকসুলভ নৃশংস আচরণের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মাননীয় সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী আজ ২০ জানুয়ারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী দেখতে গিয়ে ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘এখন আর আইনের মাধ্যমে বিচার নয়, দেখা মাত্র গুলি করে কঠোরভাবে দমন করা হবে।’ সরকারের মন্ত্রী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানগণের অসাংবিধানিক, বেআইনী ও উস্কানিমূলক সন্ত্রাসী বক্তব্যের কারণেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আজ বেপরোয়া খুনী ঘাতক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেফতার, অপহরণ, গুম ও গুলি করে হত্যা করে দেশের আইন, সংবিধান ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক সন্ত্রাস সৃষ্টি করে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে গণআন্দোলন দমন করার ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছে। গণ-প্রত্যাখ্যাত সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার ষড়যন্ত্র করছে। ফ্যাসিবাদী সরকারের এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
আজও অবরোধ চলাকালে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, কুমিল্লা মহানগরী, কুমিল্লা দক্ষিণ, পাবনা, সিলেট বগুড়া, সুনামগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম দক্ষিণ, মাগুরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, সাতক্ষীরা, গাজীপুর, দিনাজপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়ে জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোটের আড়াই শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোটের গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান করার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
সরকারের হামলা, মামলা, গণগ্রেফতারসহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী তা-ব উপেক্ষা করে ২০ দলীয় জোটের ঘোষিত মিছিল, সমাবেশ ও গণঅবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রেখে জালেম সরকারকে পদত্যাগের বাধ্য করার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন