২০ দলীয় জোটের সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ, গণবিরোধী সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়কসরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীতে অবরোধকারীদের ওপর পুলিশ ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের হামলা, গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধাদান ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ, গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি এবং সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে অবরোধ কর্মসূচির ত্রয়োদশ দিন সার্বিকভাবে সফল ও সার্থক করায় সর্বস্তরের নগরবাসীর প্রতি অভিনন্দন জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে মহানগরী আমীর বলেন, সরকার গণআন্দোলনে এখন দিশেহারা হয়ে দলন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। তারা চলমান গণআন্দোলনকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে দমনের জন্য পুলিশ ও দলীয় সন্ত্রাসীদের জনগণের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে কাফরুল থানার সেক্রেটারি আব্দুল মতিন খানকে নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেলেও এখনও তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি বা কোনো সন্ধানও পাওয়া যাচ্ছে না। অবরোধের ত্রয়োদশ দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কথিত অভিযানে গোটা নগরীতে ত্রাসের রাজত্ব ও জনমনে ভীতির সঞ্চার করেছে। কথিত তল্লাশির নামে নিরীহ জনগণ ও সাধারণ পথচারীকে হয়রানি করা হয়েছে। কিন্তু মুক্তিকামী জনতা রাজধানীর শাহজাহানপুর, পল্লবী, যাত্রাবাড়ী, সূত্রাপুর, মোহাম্মদপুর, মতিঝিল, রূপনগর, গুলশান, বনানী, লালবাগ, ডেমরা, গুলশান, মিরপুর, শেরেবাংলানগর, তেজগাঁওসহ বিক্ষুব্ধ জনতা অবরোধের সমর্থনে রাজপথে নেমে এসে অবরোধ কর্মসূচি সার্বিকভাবে সফল করেছে। তারা আর মুহূর্তের জন্যও এই ফ্যাসিবাদী ও গণবিরোধী সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। কিন্তু গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রত্যয়ী বিক্ষুব্ধ জনতা সরকারের শত জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করে অবরোধের ত্রয়োদশ দিন সর্বাত্মকভাবে সফল করেছে। তিনি কাফরুল থানার সেক্রেটারি আব্দুল মতিন খানের সন্ধান ও আটককৃত জোট নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও জনতার দাবি মেনে নিয়ে সরকারকে পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের জোর দাবি জানান।
তিনি বলেন, সরকারের অবৈধ ক্ষমতালিপ্সা চরিতার্থ করতেই জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছে। নির্বাচন কমিশনে বসানো হয়েছে দলীয় আনুগত্যশীল ও সেবাদাস লোকদের। পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনীতির ময়দানে নামানো হয়েছে। জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা এখন আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো বক্তব্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক সংকটকে আরও জটিল হতে জটিলতর করে তুলেছেন। যা আইনের শাসন, সংবিধান ও চাকরি বিধির মারাত্মক লঙ্ঘন ও পরিপন্থী। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহল চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দিলেও সরকার বলপ্রয়োগ, পেশীশক্তি ও রাষ্ট্রীয় শক্তির অপব্যবহার করে অবৈধ ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু তাদের সে ষড়যন্ত্র জনগণ কখনোই সফল হতে দেবে না বরং যেকোনো মূল্যে সরকারের দেশ ও জাতিসত্তাবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দেবে। তিনি সময় থাকতে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে অবিলম্বে গণদাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন