স্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জ
বাড়ির নাম মুন্সী বাড়ি,
রাত তিনটার দিকে পুলিশ,RAB, বিজিবির যৌথ বাহিনীর দরজায় জোরে জোরে বুটের লাথি, আর বাহিরে তখন তান্ডব চালাচ্ছে মুখোশ পড়া কয়েকটি ছেলে, এরা সবাই স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের রাজনীতি করে, তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যৌথ বাহিনী কে জোটের নেতা-কর্মীদের অবস্থান এবং বাড়ির ঠিকানার সন্ধান দেয়ার জন্য, আর এর পুরুস্কার হিসাবে তারা পাচ্ছে, জোটের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে লুটপাটের ফ্রি লাইসেন্স!!!
দরজা খুলে বের হয়ে এলেন নবাপুর গ্রামের ৭ নং ইউনিয়নের যুবদলের সভাপতি আবদুল বাতেনের মা হনুফা আকতার, ভেতরে তখন বড় বড় চোখে আতংকিত হয়ে হনুফা আকতারের পিছনে দাঁড়িয়ে আছে যুবদল সভাপতি বাতেনের নবম শ্রেনীতে পড়া ভাই মোরশেদ, দুই বোন, আর বাতেনের সদ্য জন্ম নেয়া তিন মাসের পুত্র সন্তান কোলে দাঁড়িয়ে বাতেনের স্ত্রী। দায়িত্ব রত অফিসার সরাসরি বাতেনের ভাই মোরশেদের তলপেট বরাবর লাথি দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন
-খানকির পোলা বাতেন কই?
আর পিছনে থাকা সিপাহীরা দ্রুত ঘরে প্রবেশ করলেন,সাথে প্রবেশ করলো ছাত্রলীগ, যুবলীগের সেই নেতারা, শুরু হয়ে গেলো এক ভয়ংকর বিভিষিকা, আলমারি, সিন্দুক, ফ্রিজ,টিভি সব একে একে ভেংগে ফেলতে লাগলো তারা, পাক্কা আদা ঘন্টা ধরে চলেছে এই কতিথ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার অভিজান। আর সর্বশেষ চলে যাওয়ার সময় বাড়ির আঙ্গিনায় বাতেনের মোটরসাইকেল টি তে আগুন ধরিয়ে দিল তারা, সাথে করে নিয়ে গেল বাতেনের ছোট ভাই মোরশেদ কে।। যৌথ বাহিনীর অফিসার বলে গেছে বাতেন কে ধরিয়ে দিলে মোরশেদের মুক্তি দেবে।।
সকাল ৭ টা বাজে, হনুফা আকতার চোখের পানি মুছে বাতেনের ছোট সন্তানকে কোলে নিয়ে উঠানে বসে আছেন, তিনি নির্বাক হয়ে আছেন, কিছুক্ষন পরে বাতেনের স্ত্রী কে ডাক দিয়ে বললেন,
-বউ চুলায় ভাত বসাও, বাতেনের জন্য ভাত পাঠাতে হবে,
সময় ১৯৭১ নয়, সময় ২০১৫। তবে আশার কথা ১৯৭১ সালেও বাতেনরা পরাজিত হয় নাই। ২০১৫ সালেও বাতেনদের পরাজয় হবে না।
সালাম জানাই এমন বাতেনের জন্ম দেয়া রত্মগর্ভা মা হনুফা আকতারকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন