বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার নগরীতে আওয়ামী লীগের সমাবেশস্থলের আশপাশে দফায় দফায় ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটেছে। এসময় জনতা উত্তেজিত আমিনুর রহমান (২৫) নামে এক যুবককে ধরে গণপিটুনি দিয়েছে।
এসময় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মারামারি ও চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ির ঘটনা ঘটে। ককটেল বিস্ফোরণ ও মারামারির ঘটনায় সমাবেশে আসা লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর খুলশী থানার পাহাড়তলী এলাকায় শহীদ শাহজাহান মাঠে খুলশী থানা আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করে।
প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম জানান, বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে সমাবেশের মঞ্চে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য রাখছিলেন। এসময় মঞ্চের ডান পাশে সীমানা দেয়ালের মধ্যে রেলওয়ের একটি অফিসের উপর থেকে একটি ককটেল ছুঁড়ে মারা হয়। ককটেলটি সীমানা দেয়ালের সঙ্গে লেগে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়।
বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে রেলওয়ে কার্যালয়ের ভেতর থেকে আমিনুরকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
এরপর লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুম একটি মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যাবার পর দুই পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় উভয়পক্ষে চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি ও মারামারি শুরু হয়। চেয়ার পড়ে সময় টেলিভিশনের একটি ক্যামেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মারামারির সময় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনসহ সিনিয়র নেতারা মঞ্চে ছিলেন। প্রায় ২০ মিনিট ধরে মারামারির পর আ জ ম নাছিরসহ জ্যেষ্ঠ্য নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এরপর বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে নগর মহিলা লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন মঞ্চে বক্তব্য রাখছিলেন। এসময় সমাবেশস্থলে অদূরে আরেকটি ককটেল বিস্ফোরণ হলে আরেক দফা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী দ্রুত বক্তব্য দিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তিনি উপস্থিত হননি।
খুলশী থানার ওসি মাইনুল ইসলাম ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, দিদারুল আলম মাসুম একটি মিছিল নিয়ে আসার পর চেয়ারে বসা নিয়ে উত্তেজনা ও চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি হয়েছে। ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটেছে কিনা আমার জানা নেই। সম্ভবত কোথাও ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণের শব্দ হয়েছে।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণ সম্প্রতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী গ্রুপে যোগ দিয়েছেন। তিনি এতদিন সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ডা.আফছারুল আমিনের গ্রুপে ছিলেন। এ নিয়ে খুলশী থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে কয়েকটি পক্ষের সৃষ্টি হয়েছে। এর জের ধরে ককটেল বিস্ফোরণ ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
নিজেদের মধ্যে মারামারির বিষয়টি বক্তব্যে উল্লেখ করেন মহিলা লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা শান্ত হোন। আমরা যদি নিজেরা মারামারি করি তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার জঙ্গীবাদী কর্মকান্ড, ককটেল-পেট্রলবোমা মেরে নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে মারা প্রতিরোধ করব কিভাবে ?
উৎসঃ ফেইসবুক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন