সোমবার বিবৃতিতে তিনি বলেন, জনতার নিরাপোষ অবিরাম আন্দোলনে সরকার দিশেহারা হয়ে রাজধানীর মীরপুরে একসঙ্গে ৪ জনকে হত্যা করেছে। হত্যা-গুম-গ্রেফতার চালিয়ে অতীতে কোনো স্বৈরাচারই টিকতে পারেনি; বরং লাশের ভারেই পতন দ্রুততর হয়েছে। দখলদার শাসকদেরও সেই পরিণতির দিকে মৃত্যুযাত্রা শুরু হয়েছে। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় রক্ষিবাহিনী ৩০ হাজার লোককে হত্যা করেও বাকশালকে রক্ষা করতে পারেনি তাই ক্রসফায়ারের নামে গণহত্যা চালিয়েও কোনো বাহিনী বিনাভোটের দখলদার সরকারের অনিবার্য পতনকে ঠেকাতে পারবে না।
মহানগরী আমীর বলেন, যে সরকার জনগণের নির্বাচিত নয় গণআকাক্সক্ষার মর্মবাণীও তারা বুঝতে পারে না। ২০ দলের লাগাতার আন্দোলন সম্পর্কে যদি সরকার মনে করে থাকে জুলুম-নির্যাতন, হামলা-মামলা, গ্রেফতার কিংবা হত্যা করে জনতার নায্য দাবি আদায়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে স্তিমিত করে দিবে, তাহলে সরকার ভুলের রাজ্যে বসবাস করছে। সরকারের এটা মনে রাখা উচিত, নির্যাতিত মানুষ যখন নিজেদের হৃত অধিকার আদায়ে মাঠে নামে, তখন জীবন বাজি রেখেই নামে। জনতার স্বতস্ফূর্ত আন্দোলনকে জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে দমানোর ব্যর্থ চেষ্টা বাংলাদেশের জমীনে অতীতের স্বৈরাচারী শক্তিগুলোও করেছিলো। কিন্তু যারা যুগে যুগে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিয়েছে, সেই জাতিকে অত্যাচার নির্যাতন করে স্তব্ধ করা যাবে না। নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই গণশক্তির উত্থান ঘটিয়েই ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানো হবে। দখলদার সরকার দেশকে গুম, খুনের বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ মোকাবিলায় পুরো জাতি প্রস্তুত। শিগগিরই জনতার সর্বাত্মক প্রতিরোধ সংগ্রামে পুতুল সরকারের পতন হবে।
জনগণের তীব্র আন্দোলনে অতীতের অন্যান্য স্বৈরাচারী সরকারগুলোর মতো আওয়ামী লীগও ইতিহাসের আস্তাকূঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। মাওলানা খান বলেন, সরকার গণতন্ত্র হত্যার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ীই দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, আমার দেশ, চ্যানেল ওয়ানসহ সত্যানুসারী গণমাধ্যমগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। মিডিয়া বন্ধ করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। বিবৃতিতে জনাব খান আরো বলেন, পুলিশ পাহারায় গানপাউডার দিয়ে গাড়িতে আগুন দিয়ে যাত্রী হত্যার দায় এসব বাহিনী প্রধানরা এড়াতে পারবেন না। জনগণের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের কেউই জনতার রুদ্র রোশ থেকে রেহাই পাবে না।
মহানগরী আমীর বলেন, সরকারের তীব্র বাঁধা, হুমকি-ধমকি, জুলুম-নির্যাতন, গণগ্রেফতার সত্ত্বেও লাগাতার অবরোধ এবং ৭২ ঘন্টা লাগাতার হরতালের ২য় দিন গতকাল জামায়াতের থানায় থানায় কেন্দ্রঘোষিত বিক্ষোভ মিছিলের অংশ হিসাবে রাজধানীর মহাখালী, উত্তরা, বাড্ডা, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ি, মালিবাগ, তেঁজগাও, সবুজবাগ, রমনা, গুলশান, পল্টন, মতিঝিল, মগবাজার, খিলগাও, রামপুরা, মিরপুর, শেরে বাংলা নগর, ডেমরা, কোতয়ালী, সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়াসহ বিভিন্ন থানা ও এলাকায় জামায়াতের কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল, পিকেটিং ও রাজপথ অবরোধ করে। প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে সরকার পতনের চূড়ান্ত মুহূর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রতিরোধ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করতে তিনি দেশের সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী মহল, সাংবাদিক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিচারক ও ব্যাংক-বীমার কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-ছাত্র, আইনজীবী, মেহনতি মানুষ, কৃষক, শ্রমিকসহ সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষকে গণহত্যা, নৃশংসতা ও মানবতা বিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে আসার আহক্ষান জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন