জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের পুত্র রিফাত আবদুল্লাহ খানকে তিন দিনের জন্য রিমান্ডে নিয়ে সরকার তার পড়ালেখায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।
রোববার এক প্রেস বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের পুত্র রিফাত আবদুল্লাহ খান একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। তাকে আটক করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ করার বিধান থাকলেও সরকার তাকে আটক করার তৃতীয় দিনে আদালতে হাজির করে আইন লঙ্ঘন করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকার গত বছর ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রহসনের নাটক করে দেশের জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন অবৈধভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেশের জনগণের মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাজনৈতিক স্বার্থে অন্যায় ও অবৈধভাবে ব্যবহার করে তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত করেছে। তাদের প্রতি দেশের জনগণের কোনো আস্থা ও বিশ্বাস নেই। পেশাগত দক্ষতা, সততা ও নিরপেক্ষতা হারিয়ে তারা আওয়ামী লীগের দলীয় বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে পেট্রল বোমা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় টিকে থাকার ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে রাজশাহীর তানোর উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর জনাব রমযান আলী ও কক্সবাজার জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম নোমানের গ্রেফতারের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
মহানগর জামায়াতের নিন্দা
এদিকে, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী রিফাত আব্দুল্লাহ খানকে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে কোন মামলা ছাড়াই গ্রেফতারের পর তিনদিনের রিমান্ডে নেয়ার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল হালিম এবং সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুল।
আজ (রোববার) এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে কোন মামলা ছাড়াই মহানগরী আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে রিফাত আব্দুল্লাহ খানকে গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
তারা বলেন, আটককৃত রিফাতের বাবা-মা, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে তার মুক্তির দাবী জানানো হলেও গত শুক্রবার গ্রফেতার করলেও অস্বীকার করে অজ্ঞাত স্থানে রেখে তাকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করার পর আজ রোববার তাকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
বিবৃতিতে জামায়াত নেতারা বলেন, সরকার গণ-আন্দোলন মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েই জামায়াত নেতার নিরাপরাধ সন্তানকে এভাবে টার্গেট করেছে। জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষা অংশ নিতে গিয়েই এভাবে আটককৃত এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ না দিয়ে উল্টো রিমান্ডে নেয়ার ফলে এখন তার পরবর্তী পরীক্ষাগুলোও অনিশ্চয়তার সম্মুখীন।
তারা বলেন, শিশু অধিকার, শিক্ষা সম্প্রসারনের কথা সরকার বারবার বললেও এভাবে একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীকে আটক সরকার তার আচরণের চরম বৈপরীত্য জাতির সামনে উন্মোচন করলো, যা আওয়ামী সরকারের নীচু মানষিকতার আরো একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।
নেতৃদ্বয় বলেন, স্বৈরাচারী-ফ্যাসিষ্ট সরকার পতনের দাবীতে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের ভূমিকা যখন সরকারকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে তখন আদর্শের লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে তাকে মানষিকভাবে আঘাত করতেই তার নিরাপরাধ সন্তানকে আটক ও রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
তারা বলেেন, আমরা অবিলম্বে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই কাপুরোষোচিত কর্মকান্ডের নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে আটককৃত রিফাত আব্দুল্লাহ খানের মুক্তি দিয়ে তাকে পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।
শিবিরের নিন্দা
এদিকে, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের পুত্র এসএসসি পরীক্ষার্থী রিফাত আবদুল্লাহ খানকে মিথ্যা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার ও সেক্রেটারি জেনারেল আতিকুর রহমান বলেন, কোন অন্যায় ছাড়াই একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর উপর যে নির্মম অমানবিক আচরণ করা হয়েছে তাতে দেশবাসী স্তব্ধ।
তারা বলেন, রিফাত আবদুল্লাহ খান একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। আটক করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ করার বিধান থাকলেও সরকার তাকে আটক করার তৃতীয় দিনে আদালতে হাজির করে আইন লঙ্ঘন করেছে। একজন কিশোর ছাত্রকে ৩ দিনের জন্য রিমান্ডে নিয়ে সরকার তাকে নির্যাতন ও পড়ালেখায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। এটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।
তারা বলেন, পুলিশের এ নজীরবিহীন অমানবিক আচরণ ও আদালতের এমন আদেশ জাতিকে হতবাক করেছ। অবৈধ সরকার একের পর এক অমানবিক আচরণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করলেও সরকারের আজ্ঞাবহ মানবাধিকারের বুলি আওড়ানো সংগঠনগুলোর নিরবতা অবৈধ সরকারকে উৎসাহিত করছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, একদিকে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রীদের মায়াকান্না, অন্যদিকে পরিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করে নির্যাতন জাতির সাথে তামাশা ব্যতিত কিছু নয় ।
তারা বলেন, অবিলম্বে তার উপর অন্যায় ভাবে আরোপিত রিমান্ড বাতিল করে তাকে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় এই জুলুমের উপযুক্ত জবাব দিতে ছাত্রসমাজ এক কাতারে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধের প্রাচির গড়ে তুলবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন