শুক্রবার রাতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সংগঠনটির অন্তত দুইজন নেতা নিহত এবং কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হওয়ার পর হরতালের ডাক দিল ছাত্রশিবির।
শুক্রবার বিকেলে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে নির্বিচারে নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম, গুলি, নির্যাতন, বাড়িঘর ভাংচুর ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।’
বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার ও সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান বলেন, ছাত্রজনতার মুক্তির আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে নৃশংসতা ও অমানবিকতার পথ বেছে নিয়েছে অবৈধ সরকার। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে নেতাকর্মীদের বাসা থেকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। অনেককে গ্রেপ্তারের পর অস্বীকার ও মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের পর রাতের আঁধারে বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো কোনো নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করার পর গাড়ির নিচে ফেলে হত্যার নাটক সাজাতেও দ্বিধা করেনি।
বিবৃতিতে জানানো হয়, চলমান আন্দোলনে এক মাসে চট্রগ্রামে ২, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২, ঢাকায় ১, রাজশাহীতে ১, ও কুমিলস্নায় ১ জনসহ ছাত্রশিবিরের ৭ জন নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা ও শতাধিক নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে পায়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেছে রাষ্ট্রীয় বাহিনী।
শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ২ নেতাকর্মীকে হত্যা ও ১৪ জনকে পায়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা হয়েছে, যারা বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছিলেন।
গতরাতে ছাত্রশিবিরের ২ নেতা মেধাবী ছাত্র, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য সম্পাদক শাহাবুদ্দিন এং কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সভাপতি সাহাব উদ্দিন পাটোয়ারীকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে যৌথবাহিনী।
বিবৃতিতে বলা হয়, এর পাশাপাশি সারাদেশে ডাকাতের মত নেতাকর্মীদের বাড়ী ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংesচুর ও লুটপাট করছে যৌথবাহিনী ও সরকার দলীয় ক্যাডাররা। চলছে নির্বিচারে গণগ্রেপ্তার। একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের অসভ্য আচরণ কল্পনা করা না গেলেও এদেশে তা প্রতিদিনই ঘটছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এভাবে চলতে দেয়া যায়না। তাই নির্বিচারে বিরোধী নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম, গুলি, বাড়িঘর ভাংচুর ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধের দাবিতে আগামীকাল শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ এবং ৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করা হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা দেশের ছাত্রসমাজসহ সর্বস্তরের জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে হরতালকে শতভাগ সফল করার মাধ্যমে অপশাসন ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার আহবান জানাচ্ছি আমাদের হরতাল হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। কিন্তু সরকার যদি বাধা দেয়, তাহলে উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির দায় তাদের ওপরই বর্তাবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন