ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শনিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

"বাবাকে না পেয়ে ছেলেকে গুলি করে মারল পুলিশ"

বাবা: হাবিবুল হক দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ১ নম্বর পুনট্রি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি কমিটির সভাপতি।
ছেলে: রেজোয়ান স্থানীয় ব্রহ্মপুর মাদ্রাসার ফাজিল ক্লাসের শিক্ষার্থী।
রেজোয়ানের দাদি হনুফা দাবি করেন, গতকাল জুমার নামাজের পর পাঞ্জাবি পরা পাঁচ-ছয়জন সশস্ত্র ব্যক্তি তাঁদের বাড়িতে ঢোকে। তারা কিছু না বলে সরাসরি হাবিবকে পাকড়াও করে তাঁর হাতে হাতকড়া পরাতে যায়। এ সময় ঝাঁকি দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে হাবিব দৌড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। হাবিব ছুটে যাওয়ায় বাড়িতে আসা লোকজন রেজোয়ানকে ধরে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকে। ছাড়া পেতে ধস্তাধস্তি শুরু করেন রেজোয়ান। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে পড়ে যান। এ সময় সশস্ত্র ব্যক্তিদের একজন তাঁর বুকের ওপর পা চেপে ধরে পেটে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। কমপক্ষে আটটি গুলি করা হয়েছে। পরে অস্ত্রের বাঁট দিয়েও তাঁর মাথায় আঘাত করে তারা। ঘটনাস্থলেই রেজোয়ান মারা যান।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার শারিরিক অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।


আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১০ দিনের রিমান্ডে ডিবি অফিসে আটক নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। মান্না দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত। বাইরে থাকা অবস্থায় নিয়মিত ফিজিওথেরাপিসহ চিকিৎসার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আটকের পর থেকে এই চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউই এখন পর্যন্ত দেখা করার সুযোগও পাচ্ছে না। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী তার প্রতিদিনের ওষুধপত্রও তাকে দেয়া যাচ্ছে না। ডিবি অফিসের গেটে ওষুধপত্রসহ খাবার রেখে আসতে হচ্ছে। এ অবস্থায় তার শারীরিক সুস্থতা নিয়ে নাগরিক ঐক্যর নেতাকর্মীরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রিমান্ডের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের নির্দেশও কার্যকর না হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মাহমুদুর রহমান মান্নার সাথে তার পরিবারের সাক্ষাতের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানিয়ে সরকারকে সর্তক করে দিয়ে বলেন, মান্নার যেকোনো ক্ষতির জন্য কর্তৃপক্ষকেই দায় বহন করতে হবে।
নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতিকুর রহমান সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন।

৫ই জানুয়ারির নির্বাচন প্রধানমন্ত্রীর মতেই ছিল অপূর্ণাঙ্গ: ব্যারিস্টার মঈনুল

৫ই জানুয়ারির নির্বাচন তার (শেখ হাসিনা) মতেই ছিল অপূর্ণাঙ্গ। সূতরাং প্রধানমন্ত্রীকে সেই প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দিতে আমাদের লজ্জা কেন হবে বলে মন্তব্য করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন।
শনিবার দুপুরে রাজধানীতে প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মূসার স্মরণে আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মঈনুল হোসেন বলেছেন, চলমান সঙ্কটের উৎস নির্বাচন। এই সঙ্কটের সমাধান তো প্রধানমন্ত্রীর হাতে। তিনি নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে আবার পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন দেয়া হবে।
তিনি বলেন, এখন কথা বলতে গেলে ভয় পাই। মূসা ভাই নীরব থাকা সমর্থন করেননি। এজন্য বলছি, নির্বাচন দিলে সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ হতে বাধ্য। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা নির্বাচন বাদ দিয়ে পুলিশি কায়দায় সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ করছেন। এই অবস্থায় সুযোগ নিচ্ছে, সুবিধাবাদীরা।
ব্যারিস্টার মঈনুল বলেন, আজকে আমরা সাংবাদিক-আইনজীবীরা নিজেদের শক্তি হারিয়ে দলীয় শক্তিতে পরিণত হয়েছি। এতে কেবল নিজেরাই শক্তিহীন হইনি, পুরো জাতিকে শক্তিহীন করছি। গণতন্ত্র মাঠে মারা যাচ্ছে। গণতন্ত্র রক্ষার শক্তি রাজনীতিবিদরা নন। সাংবাদিক ও আইনজীবীদের এ কাজ করতে হবে।
এবিএম মূসা ও সেতারা মূসা ফাউন্ডেশন আয়োজিত সভায় ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, চলমান সঙ্কট ভয়াবহ রূপ নেয়ার আগেই সতর্ক করে গেছেন প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মূসা। তিনি এই সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলেছিলেন। অস্ত্রের ভাষা যে রাজনীতির ভাষা হতে পারে না, এ কথাও জোর দিয়ে বলে গেছেন। তিনি বলেন, অস্ত্রে ভাষা যদি রাজনীতির ভাষা হয়, তাহলে তার মোকবিলার ভাষা কি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সাহসী ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করেছেন মূসা ভাই। তিনি সত্যকে সত্য বলেছেন। বিরোধিতা করলে, সেটাও ছিল তথ্যনির্ভর। আমরা এখানে বিতর্ক সৃষ্টি করতে আসিনি। তাই, তার রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আলোচনা করছি না।
সৈয়দ আবুল মকসুদের সভাপতিত্বে ও রোবায়েত ফেরদৌসের পরিচালনায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন- প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রবীণ সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীর, বৈশাখী টিভির সিইও মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি কাজী রওনক হোসেন, সাংবাদিক আব্দুর রহীম, গোলাম মর্তুজা প্রমুখ।
সূত্রঃ  লন্ডন বাংলা নিউজ

দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ভেঙে যেতেও পারে- এবনে গোলাম সামাদ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক কিছুর হিসাব মেলানো কঠিন। আমরা কেউ ধারণা করতে পারিনি যে, বাংলাদেশের এক কালের দুই কার্ল মার্কস ভক্ত নেতা, জাসদের হাসানুল হক ইনু আর ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেনন, তাদের পুরনো ধ্যান-ধারণা একেবারে পরিত্যাগ করে আওয়ামী লীগের সাথে হাত মেলাবেন। হবেন মন্ত্রী। কেউই ভাবতে পারেননি যে, এই দুই নেতা হজ করতে যাবেন এবং হবেন আলহাজ। আলহাজ হওয়া দোষণীয় নয়। কিন্তু মার্কসবাদ বলে ধর্ম হচ্ছে আফিমের নেশার মতো, ধর্ম মানুষকে পরকালবাদী করে তোলে। আর ইহজাগতিক সমস্যা সম্পর্কে করে তুলতে চায় উদাসীন। জানি না, এই দুই নেতা এখন কী ভাবছেন, মার্কসবাদের এই মৌল দর্শন নিয়ে। ধর্ম সম্পর্কে এদের মনোভাব, অনুমান করা চলে, নিশ্চয় আর আগের মতো নেই। হাসানুল হক ইনু এক সময় বিশ্বাস করতেন বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে। কিন্তু বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে হাসানুল হক ইনুর দল জাসদ অনেক আগেই আস্থাহীন হয়ে পড়েছিল। রাশেদ খান মেনন কিছু দিন আগেও বলেছেন, দুনিয়ার মজদুর এক হও। কিন্তু এখন তিনি আওয়ামী লীগের সাথে হাত মিলিয়েছেন। তার বক্তব্য, তিনি বাংলাদেশকে একটি মুসলিম মৌলবাদী দেশ হিসেবে দেখতে চান না। তিনি হজ করে ফিরেছেন নিজেকে একজন খাঁটি মুসলমান প্রমাণ করার জন্য। তিনি খাঁটি মুসলমান হলেও ইসলামি মৌলবাদে আস্থাবান নন। সমস্ত আওয়ামী লীগ এখন পরিচালিত হতে চাচ্ছে এক কালের দণিপন্থী (মস্কোপন্থী) কম্যুনিস্টদের চিন্তাচেতনার দ্বারা। এ রকমই এখন সাধারণ জনরব। সাবেক আওয়ামী লীগ নেতারা আর আওয়ামী লীগে আগের মতো আদ্রিত নন। আওয়ামী লীগে চলেছে গুরুতর মতবাদিক দ্বন্দ্ব; যা আওয়ামী লীগকে ভেঙে দিতেই পারে।
আওয়ামী লীগ এখন পরিচালিত হচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। শেখ হাসিনাকে বাদ দিলে আওয়ামী লীগে এমন আর কোনো নেতা নেই, যাকে বলা যেতে পারে প্রকৃত আওয়ামী লীগপন্থী। কিন্তু শেখ হাসিনা একজন মানুষ। যেকোনো মানুষ যেকোনো সময় মৃত্যুবরণ করতে পারেন। শেখ হাসিনার অবর্তমানে আওয়ামী লীগ হয়ে পড়বে নেতাহীন। নেতাহীন আওয়ামী লীগ ভেঙে পড়তেই পারে। এটাও একটা বিশেষ সম্ভাবনা। আওয়ামী লীগে কোনো বিকল্প নেতৃত্ব গড়ে উঠছে না। এর ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ হয়ে পড়ছে দুর্বল। তোফায়েল ও আমির হোসেন আমু দু’জন খুবই প্রাচীন আওয়ামী লীগ নেতা। কিন্তু এদের প্রভাব আওয়ামী লীগের মধ্যে খুব প্রবল বলে মনে হচ্ছে না। এদের পে সম্ভব হবে না আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব প্রদান করা। কারণ এদের দু’জনের কারোরই নেই শেখ হাসিনার তুল্য ভাবমূর্তি। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় আছেন। কিন্তু জয় কি আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিতে পারবেন? অনেকে ভেবেছিলেন কংগ্রেসে নেহরু পরিবার চিরদিন নেতৃত্ব দিয়ে যাবে। কিন্তু রাহুল গান্ধী এখন পড়েছেন চরম রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে। আমরা দেখতে পেলাম রাজধানী দিল্লিতে কংগ্রেসের কোনো পদপ্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হতে পারলেন না। নেহরু পরিবারের ঐতিহ্য আর এখন আগের মতো জনপ্রিয় নেই। জয় হলেন দ্বি-নাগরিক। তিনি যেমন বাংলাদেশের নাগরিক, তেমনি আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন বলে যে, তার দেশের নাগরিক অন্য কোনো দেশে গিয়ে রাজনৈতিক পদ দখল করতে পারবে না। জয়কে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে ছাড়তে হবে মার্কিন নাগরিকত্ব। কেননা, মার্কিন আইন এমনটাই বলে।
তোফায়েল আহমেদ একসময় ছিলেন সারা বাংলাদেশের একজন খুবই জনপ্রিয় নেতা। তিনি শেখ মুজিবকে সভা ডেকে প্রদান করেছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের অনুকরণে, ‘বঙ্গবন্ধু’ শিরোপা। যেটা এখন আওয়ামী লীগ ব্যবহার করে চলেছে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট তোফায়েল আহমেদ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের এক অংশ তুলেছিলেন গুরুতর অভিযোগ। তারা বলেছিলেন, তোফায়েল আহমেদ যদি নিষ্ক্রিয় না থেকে যথা সময়ে রীবাহিনীকে ডাকতেন, তবে শেখ মুজিবের মৃত্যু হতো না। রীবাহিনীর অলিখিত ভার ছিল তোফায়েল আহমেদেরই ওপর। এখনো আওয়ামী লীগে অনেকে আছেন যারা মনে করেন, তোফায়েল আহমেদকে বিশ্বাস করা যায় না। তাই শেখ হাসিনার স্থান তোফায়েল আহমেদ নিতে পারবেন, এমন অনুমান করা যথেষ্ট সঙ্গত নয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের অভাবে ও আদর্শিক দ্বন্দ্বের কারণে ভেঙে যেতেই পারে। শেখ হাসিনার উচিত আওয়ামী লীগে তার অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দিতে পারেন এমন নেতা তৈরি করে যাওয়া। কিন্তু তিনি তা করছেন বলে মনে হচ্ছে না। অবশ্য আমরা এ কথা বলছি, বাইরে থেকে দেখে। আওয়ামী লীগের ভেতরের কথা আমরা ঠিক সেভাবে যে জানি, তা নয়। তবে বিশ্বের নানা দেশের ইতিহাসে দেখা যায়, উপযুক্ত নেতার অভাবে একটি রাজনৈতিক দলের বিলুপ্তি ঘটতে পারে। আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও সেটা ঘটা অসম্ভব নয়।
দেশে এখন বিতর্ক উঠেছে, আওয়ামী লীগ উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে কি করে না, এই প্রশ্ন নিয়ে। কেননা, আওয়ামী লীগ বলছে আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র। যা এক সময় দেশে দেশে কম্যুনিস্টরা বলতেন। রাশিয়ার কম্যুনিস্ট পার্টি এই যুক্তি তুলে ক্ষমতায় ছিল প্রায় ৭৪ বছর। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়েছে। এখন খোদ রাশিয়ার মানুষ চাচ্ছেন তাদের দেশে বহুদলীয় উদার গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা। শেখ মুজিব কেন বাকশাল গড়েছিলেন, আমরা তা জানি না। কারণ তিনি এক সময় দেশে পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছিলেন। আর সেই কারণে পেতে পেরেছিলেন বিপুল জনপ্রিয়তা। শেখ মুজিব তার গণতান্ত্রিক দর্শন পরিত্যাগ করে যদি বাকশাল গঠন না করতেন, তবে তার রাজনৈতিক জীবনের ও রকম করুণ বিয়োগাত্মক পরিণতি ঘটতে পারত বলে ভাবা যায় না। হয়তো তিনি নির্বাচনে মতা হারাতেন, কিন্তু আবার নির্বাচনের মাধ্যমেই আসতে পারতেন মতায়। নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল হতে পারে এক দলের হাত থেকে আর এক দলের হাতে রক্তপাতহীনভাবে মতার হস্তান্তর। যতগুলো কারণে দেশে দেশে মানুষ গণতন্ত্র চেয়েছে এবং চাচ্ছে, তার একটা বড় কারণ হলো এটাই। বিলাতের বিখ্যাত রাজনীতিবিদ চার্চিল নির্বাচনের মাধ্যমে মতা হারিয়েছিলেন। আবার মতায় আসতে পেরেছিলেন নির্বাচনের মাধ্যমে। তিনি বলেছিলেন গণতন্ত্রে গলদ আছে অনেক, কিন্তু মানুষ এর চেয়ে ভালো রাজনৈতিক পদ্ধতি এখনো আবিষ্কার করে উঠতে পারেনি। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে চার্চিলের এই বক্তব্য আমার মনে পড়ছে।
বাংলাদেশে আমার মনে হয় একটা অন্তর্বর্তী নির্বাচন হওয়া হবে যুক্তিযুক্ত। তাতে আসবে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কটের একটা সমাধান। তা না হলে দেশের রাজনৈতিক সমস্যা আরো জটিল হয়েই উঠবে। এমনকি আওয়ামী লীগের মধ্যেও সঙ্কট দেখা দিতে পারে। ভেঙে পড়তে পারে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি জোট বেঁধেছে আরো ১৯টি দলের সাথে। কিন্তু এই মোট ২০টি দলের মধ্যে আছে মূল্যবোধের একটি সাধারণ ঐক্য। যাকে বলা হচ্ছে, ইসলামি মূল্যবোধ। কিন্তু ১৪ দলের মধ্যে এ রকম মূল্যবোধের ঐক্য আছে বলে মনে হচ্ছে না। হাসানুল হক ইনু আর রাশেদ খান মেনন হাসিনার সাথে অনেক বিষয়েই পারছেন না ঐকমত্য গড়তে। এ রকমই মনে হচ্ছে আমাদের বাইরে থেকে দেখে। ২০ দলে যে পরিমাণ তাত্ত্বিক আছেন, ১৪ দলের ঐক্যজোটে আছেন তার চেয়ে অনেক বেশি। নিকট ভবিষ্যতে ১৪ দলের জোটে তাই মতবাদিক দ্বন্দ্ব দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন দিলে আওয়ামী লীগ তাই উপকৃত হতে পারবে। এ রকমই আমাদের বিশ্বাস।

লেখক : প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট
সূত্র : নয়া দিগন্ত

খালেদা গ্রেফতার হলে দলের হাল ধরবেন ডা·জোবায়দা

বেগম খালেদা জিয়া গ্রেফতার হলে দলের হাল ধরতে পারেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ড· জোবাইদা রহমান। সূত্র জানায়, বিএনপির চেয়ারপার্সনের অনুপস্থিতিতে কে দলের দায়িত্ব পালন করবেন এ নিয়ে এরইমধ্যে আলোচনা শুরম্ন হয়েছে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী হয়তো লন্ডন থেকে দেশে ফিরে দলের হাল ধরবেন তার পূত্র বধূ ডা· জুবায়দা । দুটি মামলায় হাজির না হওয়ায় গত বুধবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর পর থেকেই গুঞ্জন চলছে, যেকোনো সময় খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
এদিকে, দুটি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্বেও সম্্‌ভবত আদালতে আত্ম সমর্পন করবেন না বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, ‘‘নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই সম্্‌ভবত আদালতে যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া। কারণ আদালতে হাজির হওয়ার মতো স্বাভাবিক পরিস্থিতি নেই। তিনি তো এমনিতে তার গুলশান অফিসে বন্দি হয়ে আছেন। তিনি আদালতে আত্মসমর্থন করবেন কিভাবে’’ ? তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে হয়রানি করার জন্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তার বিরম্নদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়। খালেদা জিয়ার এ পারিবারিক আইনজীবী আরো বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন তো পালিয়ে যান নি, তাহলে কেন তার আত্মসমর্পনের প্রশ্ন উঠবে ? নিরাপত্তা জনিত কারণে তিনি তার অফিসের বাইরে যেতে পারছেন না, সরকার তাকে তার অফিসে দীর্ঘ দিন ধরে বন্দি করে রেখেছে। তবে খালেদা জিয়া যেকোন সময় গ্রেফতারের জন্য প্রস্তুত।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের অপর আইনজীবী সানাউলস্নাহ মিয়া বলেন, খালেদা জিয়া আদালতে আত্মসমর্পন করবেন কি না সেব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্তô নেয়া হয় নি। খালেদা জিয়ার উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করার জন্যই এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির হাই কমান্ড ও খালেদার আইনজীবীরা এ ব্যাপারে সরকারের কৌশল নিবিড়ভাবে পর্যবেড়্গন করছেন এমনকি দলের প্রধানের বিরম্নদ্ধে সরকারের ভবিষ্যত যেকোন পদড়্গেপ মোকাবেলায় প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তারা।এমনকি খালেদা জিয়া গ্রেফতার হলে তার অনুপস্থিতিতে কে দলের দায়িত্ব নিবেন সে বিষয়েও আলোচনা চলছে।
দলের এক নেতা বলেন, সরকার চায় না খালেদা গ্রেফতার হোক। তাকে কেবল চাপের মধ্যে রাখার জন্য এসব করা হচ্ছে। তবে তাকে গ্রেপ্তার করা হলে চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে যাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আর কর্মসূচির মধ্যে অবরোধের সঙ্গে হরতাল ও অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণাও থাকতে পারে। সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া গ্রেফতার হলে দলের পরবর্তী পদড়্গেপ কি হবে এবং চলমান আন্দোলনের কৌশল কি হবে তা নিয়ে এরইমধ্যে দলের দুই শীর্ষ নেতার সাথে আলোচনা করেছেন খালেদা জিয়া। তার এই নির্দেশনার ভিত্তিতে দলের শীর্ষ নেতারা তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের প্রয়োজনীয় নিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।

ডেইলি সান

যুক্তরাজ্য হোম অফিসের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ: 'বাংলাদেশে ভিন্নমত পোষণকারীরা নিরাপত্তাহীন'

সরকারের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে- এমন ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতারা বাংলাদেশে নিরাপত্তাহীন। যুক্তরাজ্যের হোম অফিসে বাংলাদেশ সম্পর্কে সংরক্ষিত হালনাগাদ তথ্যে এমন চিত্র উঠে এসেছে। ‘কান্ট্রি ইনফরমেশন অ্যান্ড গাইডেন্স, বাংলাদেশ: অপজিশন টু দ্য গভর্নমেন্ট’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনটি গত সোমবার প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশের কোনো নাগরিক যুক্তরাজ্যে মানবিক বা রাজনৈতিক বিবেচনায় কিংবা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় চাইলে তাঁদের আবেদন কীভাবে বিবেচিত হবে, এর দিকনির্দেশনা হিসেবে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
ইংরেজি গণমাধ্যম, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদন এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংরক্ষণ করা বাংলাদেশ-সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে ব্রিটিশ হোম অফিসের এই প্রতিবেদনে সন্নিবিষ্ট করা হয়।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিরোধী রাজনীতিক ও নারীদের রক্ষা এবং সহিংসতা দমনে ব্যর্থ বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো দায়ভার ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে, নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায় করে। তারা গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত। এ বছরের গত ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
গত বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরবর্তী অবস্থা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই নির্বাচনে কারচুপির আশঙ্কায় নির্বাচন বর্জন করার কারণে বর্তমান সংসদে বিএনপির কোনো আসন না থাকলেও দলটি এখনো প্রকৃতপক্ষে সরকারের প্রধান বিরোধী পক্ষ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে ঢাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয় এবং খালেদা জিয়াকে তাঁর কার্যালয় থেকে বের হতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সহিংসতায় ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ২৭ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে নোয়াখালীতে পুলিশের গুলিতে দুজনের মৃত্যু হয়। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি দলের লোকেরা পেট্রলবোমাসহ ধরা পড়লেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি- এমন তথ্যও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা মামলা প্রত্যাহার করার ব্যাপারে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত পাঁচ বছরে সরকার নিজ দলের লোকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মোট সাত হাজার ১৭৭টি মামলা প্রত্যাহার করেছে। এর মধ্যে অন্তত ১০টি হত্যা মামলাও রয়েছে। কিন্ত অন্য কোনো দলের কোনো মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি।
বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, যখন যেই দল ক্ষমতায় যায়, তখন সেই দলের ছাত্রসংগঠনের অস্ত্রধারীরা মানবাধিকারের সবচেয়ে বড় লঙ্ঘনকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়।
খুন, হত্যা, অপহরণ ও চাঁদাবাজিসহ নানা কারণে গত বছর ছাত্রলীগ বারবার খবরের শিরোনাম হয়েছে উল্লেখ করে হোম অফিসের নির্দেশনায় বলা হয়, গত ছয় মাসে ছাত্রলীগ ২৫০ বার নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, আর অন্য সংগঠনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ১৫০ বারের বেশি। অস্ত্রধারী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতার বড় কারণ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে হোম অফিসের দিকনির্দেশনামূলক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সরকার ভিন্নমত এবং সমালোচনাকে সহ্য করে না, বরং এ বিষয়ে সরকার মারাত্মকভাবে আক্রমণাত্মক।
ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন অ্যাক্ট (আইসিটি) ২০০৬ (সংশোধিত ২০০৯ ও ২০১৩) এবং জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার কারণে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশে ,
যারা বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অত্যাচার আর অবিচারের শিকার। যারা যুক্তরাজ্যে পালিয়ে এসেছেন তাদের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে সহজ হবে ।

অভিজিৎ হত্যায় জামায়াতকে জড়ানোর প্রতিবাদ

দু-একটি অনলাইন মিডিয়ায় নিহত অভিজিৎ রায়ের বাবার বরাত দিয়ে “আমার ছেলেকে হত্যার জন্য উগ্র জঙ্গিবাদীরাই দায়ী।
আর এদের মদদ দিয়েছে জামায়াত।” মর্মে যে বক্তব্য প্রচারিত হচ্ছে তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতির মাধ্যমে তিনি এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
তিনি বলেন, “নিহত অভিজিৎ রায়ের বাবার বরাত দিয়ে প্রচারিত বানোয়াট, মিথ্যা ও কাল্পনিক বক্তব্যের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অভিজিৎ রায়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। জামায়াত সব সময়ই এ সমস্ত হত্যাকাণ্ডসহ কাপুরুষোচিত সকল হত্যাকাণ্ড এবং উগ্র কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়। জামায়াতকে জড়িয়ে যে সব খবর প্রচারিত হচ্ছে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি আরো বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে, কোথাও কোন কিছু ঘটলেই কোন ধরনের তদন্ত ছাড়াই তার জন্য জামায়াতকে দায়ী করে মিথ্যা প্রচারণা চালানো এক শ্রেণির মিডিয়ার দূরারোগ্য ব্যধিতে পরিণত হয়েছে। এ অপপ্রচার ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’ সেই প্রবাদ বাক্যের কথাই আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়।
আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত ব্যতীত একতরফাভাবে জামায়াতকে দোষারোপ করার এ প্রবণতা প্রকৃত দোষীদের আড়াল করার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এতে প্রকৃত দোষীরা আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। এ বদ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
সেই সাথে অভিজিৎ রায়ের খুনের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনীদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”

জন কেরির সফর পাল্টে দেবে সব হিসাব! - গোলাম মাওলা রনি

বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের শীতল সম্পর্কের বরফ মনে হয় গলতে শুরু করেছে। নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের নিয়োগ এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সৌহার্দ্যপূর্ণ সাক্ষাতের খবরে ঢাকার কূটনৈতিক মহলে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। বার্নিকাটের পূর্বসূরি ড্যান ডব্লিউ মজীনার সময় বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে পৌঁছে। সেই শীতল সম্পর্কের মূলে বেশির ভাগ লোক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যুকে বড় করে দেখলেও পর্দার অন্তরালে ভূতাত্ত্বিক রাজনীতির আরও অনেক বিষয় জড়িত ছিল।
প্রথাগতভাবে মার্কিন মুলুকের ডেমোক্রেটিক দলের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ভালো বলে সবাই ধারণা করেন। অন্যদিকে রিপাবলিকানদের সঙ্গে রয়েছে বিএনপির সখ্য। কাকতালীয় ব্যাপার কিনা জানি না। ১৯৯১ সাল থেকে বাংলাদেশে যখন যে দল ক্ষমতায় ছিল তখন মার্কিন মুলুক এবং ভারতেও তাদের মিত্ররা ক্ষমতায় ছিলেন। ঐতিহ্যের সেই ধারাবাহিকতায় ওবামা সরকারের সঙ্গে প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগ সরকারের পারস্পরিক সম্পর্ক থাকবে চমৎকার- এই ধারণার পুরোপুরি উল্টোটিই ঘটেছে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের শেষ দিন পর্যন্ত।
২০১৫ সালে এসে পরিস্থিতি প্রতিকূল থেকে অনুকূলে আসতে শুরু করে নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগের পর থেকে। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করে এলেন সেই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির নিমন্ত্রণে। ওয়াশিংটনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের বাইরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এই সফরের দুটো উল্লেখযোগ্য বিষয় আমি লক্ষ্য করছি। প্রথমত, জন কেরি বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা সানন্দে গ্রহণ করেছেন। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত এক বছরের মধ্যে এই প্রথম যথেষ্ট ভাব ও গাম্ভীর্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে মেপে মেপে কথা বলেছেন। সমালোচনা করা যায় কিংবা সন্দেহ করা যায় এমন একটি বাক্যও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে উচ্চারিত হয়নি।
এখন প্রশ্ন হলো, জন কেরি হঠাৎ করেই বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে আগ্রহসহকারে বাংলাদেশে আসার জন্য তোড়জোড় শুরু করলেন কেন। ২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা তো প্রথম দিন থেকেই বর্তমান সরকারের কড়া সমালোচনা করে আসছিলেন। তারা ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনকে কোনো মানদ-েই গ্রহণ করতে রাজি নয়। সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তারা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে বার বার চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। এ দেশে বসবাসরত পশ্চিমা লবির লোকজন আশা করত, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা জাতিসংঘের মাধ্যমে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে। এদিকে গত প্রায় দুই মাস ধরে দেশে হরতাল-অবরোধের নামে চলছে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ হত্যা, অগ্নিসংযোগ, অরাজকতা। ফলে সরকারি হিসাবে এযাবৎকালে ক্ষতির পরিমাণ ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। বাস্তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। এ অবস্থায় পশ্চিমের এদেশীয় মিত্ররা আশা করেছিলেন মার্কিন মুলুক থেকে ভয়াবহ কোনো বার্তা আসবে। কিন্তু সেটা না হয়ে উল্টো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে নতুন করে ভাব করতে যাচ্ছে। কূটনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ যুক্তরাষ্ট্রের হঠাৎ এই বায়ু পরিবর্তনে ভারি আশ্চর্য হয়ে নানা কার্যকারণের হিসাব মেলানোর চেষ্টা করেছেন। অনেকে আশ্চর্য হলেও জন কেরির আসন্ন বাংলাদেশ সফরের খবরে আমি কিন্তু আশ্চর্য হইনি। সাম্প্রতিককালের মার্কিন অর্থনীতি, আগামীর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, রাশিয়ার সঙ্গে নতুন করে বিরোধ এবং মধ্যপ্রাচ্যে সীমাহীন গ-গোল ও আইএসের উত্থানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র তার বিরোধের অনেকগুলো দরজা খুব দ্রুত বন্ধ করতে চাচ্ছে। তারা ইতিমধ্যে কিউবার সঙ্গে প্রায় ৬০ বছরের দীর্ঘ বিরোধের নিষ্পত্তি করতে চাচ্ছে এমনকি কিউবার যে দ্বীপগুলো বিশেষ করে গুয়ানতামো বের মতো বিতর্কিত স্থানগুলোর দখল পর্যন্ত হস্তান্তর করতে চাচ্ছে। প্রতিবেশী মেঙি্কাে এবং ল্যাটিন আমেরিকার অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করেছে। ইরানের সঙ্গে চলে আসা দীর্ঘ ৩৫ বছরের বিরোধও নিষ্পত্তির দ্বারপ্রান্তে। খুব তাড়াতাড়ি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান পরমাণুর ব্যবহার-সংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদন করতে যাচ্ছে।
এশিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের অতি পুরনো এবং পরীক্ষিত বন্ধু হলো পাকিস্তান। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কোনো সরকার বা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন না করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে সেই ১৯৫০ সাল থেকে। অনেকবার ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের রাজনীতিতে বহুবার সরকার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু মার্কিন ম“ থাকার কারণে সেনাবাহিনীর গায়ে ন্যূনতম কাঁটার আচড় লাগেনি। অন্যদিকে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন- সেনাবাহিনীর অকুণ্ঠ সমর্থন ও প্রভাবের কারণে মার্কিন নীতি সবসময়ই একই রকম ছিল এবং আছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ক ভালো ছিল না। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এই দুটি দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র চমৎকার একটি সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এ অবস্থায় পুরো এশিয়ার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশের সঙ্গে গত ৫-৬ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সরকারিভাবে খারাপ ছিল না- এমনকি রাশিয়ার সঙ্গেও নয়। ইউক্রেন, সিরিয়া এবং ইরান ইস্যু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে মারাৎদক উত্তেজনা, কূটনৈতিক বাহাস এবং মতদ্বৈধতা সত্ত্বেও দেশ দুটির পররাষ্ট্রনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অন্যান্য আন্তঃমহাদেশীয় সম্পর্ক আছে ঠিক আগের মতো।
এ কথা সত্য যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা সবসময়ই গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের ব্যাপারে উচ্চকণ্ঠ থাকে। কিন্তু তাদের যেখানে স্বার্থ আছে সেখানে ওসবের কিছুই দরকার পড়ে না। এমনকি তাদের বন্ধুরা মারাৎদক কোনো অপরাধ করলেও তারা চোখ বুজে থাকে। সাদ্দাম যখন কুর্দি বিদ্রোহীদের ওপর গ্যাস প্রয়োগ করেছিলেন তখন যুক্তরাষ্ট্র কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। অন্যদিকে, ভারত ও পাকিস্তান যখন প্রায় একই সঙ্গে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটাল তখনো তারা মৃদুকণ্ঠে স্বল্পকালীন প্রতিবাদ জানাল। সৌদি আরব, মিসর, সিরিয়া, কুয়েত, জর্ডান এবং লিবিয়াতে তাদের একেক রকম নীতি। আফ্রিকার ব্যাপারে তারা তেমন একটা মাথা ঘামায় না। যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সকে সেখানকার মাতুব্বরি দিয়ে তারা আফ্রিকার ব্যাপারে নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়। অন্যদিকে তারা সবসময়ই শক্তের ভক্ত এবং নরমের জমের নীতিতে অটুট থেকেছে। রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, চীন, ভেনেজুয়েলা, কিউবা এবং ইরানের ব্যাপারে বহুবার রণহুঙ্কার ছুড়েছে কিন্তু একটা বুলেট তো দূরের কথা একটা গুলতিও ছোড়েনি। বাংলাদেশের মানুষের দরিদ্রতা, মনমানসিকতা, অভ্যাস এবং ক্ষুদ্র পরিসরের অর্থনীতির জন্য দেশটিকে প্রথম থেকেই যুক্তরাষ্ট্র তাচ্ছিল্য করে আসছিল। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক নেতৃত্বের বহুবিধ দুর্বলতা, অযোগ্যতা এবং সীমাহীন নতজানু নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র গাঙ্গীয় উপত্যকার এই বৃহত্তম দ্বীপ তথা দুনিয়ার সবচেয়ে বড় বদ্বীপ। সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনের দেশ, সবচেয়ে বড় বাঘ ও মিঠা পানির দেশ, সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত, পেশিবহুল মানুষ, স্বল্পভূমিতে, স্বল্প আশঙ্কাসম্পন্ন সুখী মনের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী এবং সবচেয়ে সুন্দরতম আবহাওয়া ও জীববৈচিত্র্যের প্রকৃতিপ্রদত্ত সম্পদকে দৃষ্টিসীমায় আনেনি।
যুক্তরাষ্ট্র তার চিরায়ত স্বভাব বা অভ্যাস মতে বাংলাদেশকে সবসময় নিয়ন্ত্রণ এবং প্রভাবিত করতে চেয়েছে দূর থেকে হুমকি-ধমকি প্রদানের মাধ্যমে। গত ছয়টি বছরে তাদের শত ক্রোধ, হুমকি-ধমকি, প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং দেশ-বিদেশের নানামুখী চাপ ও তাপ প্রয়োগের পরও ক্ষমতাসীন সরকারকে একটুও নতজানু তো দূরের কথা ভয়ও দেখানো যায়নি। অধিকন্তু, সরকার পরিস্থিতি যেভাবে সামাল দিয়েছে তাতে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস, ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্র দফতর এমনকি হোয়াইট হাউস পর্যন্ত বার বার আশ্চর্য হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্কিন কর্তারা একাধিকবার আক্ষেপ করে বলেছেন, এমন বিরূপ পরিস্থিতিতে তারা কোনো দেশে কোনো কালে পড়েননি।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে গত ছয় বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক, পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতি এবং মার্কিন মুলুকের আগামীর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে যদি হিসাবের মধ্যে ধরা হয় তাহলে জন কেরির সম্ভাব্য বা আসন্ন বাংলাদেশ সফর এক সুদূরপ্রসারী বার্তা বহন করছে। কূটনীতিবিদরা মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো মূল্যে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কটি নির্ভরতা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং পারস্পরিক সম্পর্কের সর্বোচ্চ চূড়ায় নিয়ে যেতে চায়। তারা বাংলাদেশকে তাদের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে পেতে চায় ঠিক জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো। তারা ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের সব বাধা অতিক্রম করে সম্পর্কটি এমন একটি মানদ-ে উন্নীত করতে চায় যেখান থেকে একে অপরের কাছে অনেক বেশি চাওয়া যায়, পাওয়া যায় এবং আসা করা যায়।
যুক্তরাষ্ট্র জানে যে, আগামী ১০ বছরে তাদের সঙ্গে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের বিরূপ সম্পর্ক হবে? তারা এও জানে যে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কটি হবে সমতার ভিত্তিতে। অন্যদিকে আগামী ৫০ বছরে তাদের জন্য জলে, স্থলে অন্তরীক্ষে সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে চীন-রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়া, সে অবস্থায় ভারত মহাসাগরে তাদের দরকার একটু নিরাপদ আশ্রয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিপদ-আপদকালীন পা রাখার একটু জায়গা, যা কিনা বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোথাও সম্ভব নয়। আমি নিশ্চিত কেরি এবং তার সফরসঙ্গীরা একটি পরিবর্তিত মনমানসিকতা এবং ভিন্নমাত্রিক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই বাংলাদেশে আসছেন। আমাদের কর্তাব্যক্তিরা যদি পেশাগত দক্ষতা, আন্তরিকতা এবং সৌজন্যবোধ দ্বারা কেরিকে বরণ করে নিতে পারেন তাহলে আগামীর রাজনীতির সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে যাবে। 
লেখক : কলামিস্ট

ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতেই আতঙ্কবাদী শাসন চালাচ্ছে

আমৃত্যু রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতেই সরকার সারাদেশে বিরোধীদল নির্মূলের আতঙ্কবাদী শাসন চালাচ্ছে।
এর মাধ্যমে সরকার দেশকে এক ভয়াল অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমীর রফিকুল ইসলাম খান।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতির মাধ্যমে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, একদলীয় কর্তৃত্ববাদী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতেই বহুদলীয় গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে এমন অপরিণামদর্শী রাজনীতি দেশের গণতন্ত্র ও আইনের শাসনকেই গিলে খেতে পারে। অবিলম্বে পদত্যাগ করে সবার অংশগ্রহনে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিলেই কেবল দেশকে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
মাওলানা খান তাঁর বিবৃতিতে আরো বলেন দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতেই ২০ দলীয় জোট দখলদার সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন চায় সরকার যদি এখনই তার রাজনৈতিক ক্রোধ, গুম-খুন-গণগ্রেফতার ও একগুয়েমী থেকে ফিরে না আসে তাহলে ক্ষমতাসীন দলেরই রাজনৈতিক অপমৃত্যু ঘটবে। রাজনীতিতে বিরোধীজোটের নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েই দেশে অরাজকতা ছড়াচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ক্ষমতা ধরে রাখতেই সরকার জনগণের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন বাহিনীর বেআইনী নিপীড়নে সারাদেশ এখন অগ্নিগর্ভ। ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পূনরুদ্ধারের সংগ্রামে পুরোজাতি এখন ঐক্যবদ্ধ। তাই বিরোধীজোটের দাবীর প্রতি সাড়া না দিয়ে সরকার যদি আন্দোলন দমনে শক্তি প্রয়োগের পথ বেছে নেয় তাহলে শাসকগোষ্ঠী জনরোষের নির্মম পরিণতি এড়াতে পারবেনা।
জামায়াত নেতা আরো বলেন, গণতন্ত্রের বিকল্প কেবলই অধিকতর গণতন্ত্র। জনগণের উপর আস্থা না থাকার কারণেই বিভিন্ন স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নির্বাহী আদেশে বরখাস্ত করছে। কোন অগণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আনার ষড়যন্ত্র দেশবাসী রুখে দেবে। শীর্ষ নেতৃত্বকে গ্রেফতার করলে সরকার রাজনৈতিক সমঝোতার সকল পথ বন্ধ করে রাজনৈতিক আত্মহত্যার শিকার হবে।
মাওলানা খান বলেন, শক্তিপ্রয়োগ করে জনগণের আন্দোলন দমনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। জীবন বাজি রেখেই দেশবাসী রাজপথের লড়াই অব্যাহত রেখেছে। তাই সরকারের পতন অনিবার্য।
দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও বিপন্ন গণতন্ত্রকে এখনই অবৈধ আওয়ামী সরকারের হিং¯্র থাবা থেকে উদ্ধার করতে হবে। এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আওয়ামী সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে বজ্র কঠিন শপথ নিতে হবে। প্রতারণার মধ্য দিয়ে যারা নিজেদেরকে টিকিয়ে রাখতে চায় তারা বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না। এই অবৈধ সরকারেরও পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। সরকার পতনের চূড়ান্ত মুহূর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিরোধ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করতে তিনি দেশের সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী মহল, সাংবাদিক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিচারক ও ব্যাংক-বীমার কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-ছাত্র, আইনজীবী, মেহনতি মানুষ, কৃষক, শ্রমিকসহ সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষকে গণহত্যা, নৃশংসতা ও মানবতা বিরোধী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।
চলমান আন্দোলন সফল করতে পহেলা মার্চ রোববার সকাল ৬টা থেকে ৭২ঘন্টার হরতাল ও একইদিন রাজধানী সহ সারাদেশে গণমিছিল সফল করতে সকল শ্রেনী পশোর নগরবাসীর প্রতি আহবান জানান তিনি।

বিনা বিচারে গণহত্যা চালাচ্ছে সরকার

“স্বৈরাচারী সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বে-আইনীভাবে ব্যবহার করে দেশে বিনা বিচারে মানুষ হত্যা করে গণহত্যা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
আজ শুক্রবার ২৭ ফেব্রুয়ারী এক বিবৃতির মাধ্যমে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারের দলীয় সন্ত্রাসীরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় দেশের মানুষকে অপহরণ ও গুম করছে। সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা বাসে ও ট্রাকে পেট্রলবোমা হামলা চালিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা এবং আহত করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেফতার করা সত্ত্বেও বিচার না করে ছেড়ে দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সরকার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে বিচার করার পরিবর্তে ২০ দলীয় জোটের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। দেশের জনগণ এখন অনেক বেশী সজাগ ও সচেতন। কাজেই ২০ দলীয় জোটের বিরুদ্ধে তথ্য সন্ত্রাস চালিয়ে স্বৈরাচারী সরকার পার পাবে না।
দেশবাসী ভাল করেই জানে যে, স্বৈরাচারী সরকার দেশে বিরোধীদলের কোন অস্তিত্ব মানতে রাজী নয়। সরকার নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে। স্বৈরাচারী সরকারের গণহত্যা ও মনবতাবিরোধী অপরাধের কারণে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং সরকারকে আলোচনার মাধ্যমে বিরাজমান রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার পরামর্শ দিচ্ছে।
কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত না করে দেশকে রাজনীতি শূন্য করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সরকারের এ আত্মঘাতি সর্বনাশা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সকলকেই রুখে দাঁড়াতে হবে।
সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য আজও রাজধানী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলায় গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোটের দেড় শতাধিক নেতা-কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। এভাবে গ্রেফতার করে গণআন্দোলন দমন করা যাবে না।
গণহত্যাকারী স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ২০ দলীয় জোটের ঘোষিত দেশব্যাপী গণঅবরোধ ও হরতালসহ সকল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করে গণআন্দোলন আরো তীব্র করে সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশের জনগণকে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”

কেন্দ্র গিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ চায় রিফাতের মা

এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্র থেকে আটক জামায়াত নেতার ছেলে রিফাত আব্দুল্লাহকে কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিতে সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তার মা।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে রিফাতের মা মাহফুজা ইয়াসমিন বলেন, আমার ছেলে রিফাত আব্দুল্লাহ খান হলিচাইল্ড স্কুলের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র। উত্তরা হাইস্কুল কেন্দ্রে গত ২০ ফেব্রুয়ারি গণিত পরীক্ষা চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার মামলা ছিল না।
তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষার কেন্দ্র ঘুরে ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিজ্ঞা করছেন। আর আমার ছেলেকে পরীক্ষার হল থেকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করা হল। আমার ছেলেকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার দায়ে তিনিও দোষী হবেন।
তার নিজের ছেলে হলে কি এমনটি হতে পারতো?
তিনি আরো বলেন, আটকের দু’দিন পর রিফাতকে আদালতে হাজির করে আইসিটি আইনে গ্রেফতার দেখিয়ে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। সে একজন কিশোর। তার প্রথম রিমান্ড শেষে পরবর্তীতে আদালতে হাজির করে একই মামলায় আবারো দু’দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এ সময় তার আইনজীবীরা শুক্রবার ও কাল শনিবার অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দানের জন্য আদালতে শুনানি করলে তা নামঞ্জুর করা হয়।
এটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে আমি মনে করি। এর ফলে আমার ছেলে দুটি পরীক্ষা দিতে পারছে না।
জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়েই এভাবে গ্রেফতার, রিমান্ড এবং পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ না দেয়া অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মনে করেন তিনি।
মাহফুজা ইয়াসমীন আরো বলেন, সন্তানের জীবনের পাবলিক পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সব বাবা-মায়েরই স্বপ্ন থাকে। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র থেকেই তাকে আটক এবং বারবার রিমান্ড ও পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করায় আমি মর্মাহত ও ব্যথিত।
অবিলম্বে সন্তানের মুক্তি দিয়ে বাকী পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জামায়াতের নিন্দা

এদিকে এঘটনার নিন্দা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এক বিবৃতিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে রিফাত আব্দুল্লাহ খান। তাকে গ্রেফতারের পর এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ না দেয়ায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল হালিম এবং সেক্রেটারী নুরুল ইসলাম বুলবুল।
তারা বলেন, এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা চলমান অবস্থায় কোন মামলা ছাড়াই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একজন নিরাপরাধ পরীক্ষার্থীকে কেবল গ্রেফতারই করেনি। বারবার রিমান্ডের নামে চালানো হচ্ছে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন। এমনকি আটক অবস্থায় তার পরীক্ষা দেয়ার সুযোগও কেড়ে নেয়া হলো।
মহানগর নেতৃদ্বয় বলেন, স্বৈরাচারী-ফ্যাসিষ্ট সরকার পতনের দাবিতে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মহানগর জামায়াতের আমীর রফিকুল ইসলাম খানের ভূমিকা রেখে চলেছেন। রফিকুল ইসলামের প্রতি প্রতিহিংসায় অন্ধ হয়ে সরকার তার ছেলের সাথে ঘৃণ্য ও কাপুরোষোচিত আচরণ করছে।
শীর্ষ নিউজ ডটকম/বিজ্ঞপ্তি/আতা

ব্লগার অভিজিতের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে হবে : ছাত্রশিবির

বিচারের অভাব ও অন্ধ দোষারোপের কারণেই বার-বার হত্যাকান্ড ঘটছে বলে দাবি করে ব্লগার অভিজিতের হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবি করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি করেছে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার ও সেক্রেটারী আতিকুর রহমান।
বিবৃতিতে তারা দাবি করেন, একের পর এক নৃশংস হতাযজ্ঞে আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে দেশ। প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষ আজ তাদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত।
তারা বলেন, শুক্রবার একুশে বইমেলার গেটে জনাকীর্ণ স্থানে সন্ত্রাসী কর্তৃক প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ব্লগার অভিজিৎ রায়কে। এখন পর্যন্ত পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পারেনি।
এর আগেও ব্লাগার রাজিব, রাবি শিক্ষক শফিউল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এসব হত্যাকা-ের সুষ্ঠু তদন্ত বা বিচার হয়নি। উল্টো অন্ধভাবে বিভিন্ন দল ও সংগঠনকে দোষারোপ করে আসল অপরাধীদের আড়াল করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
সরকারও অন্যদের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের দায় সেরেছে বিবৃতিতে বলা হয়।
শিবির নেতারা বলেন, সরকার বিরোধী বা সরকারকে কটুক্তিকারী কাউকে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে অল্প সময়ের ব্যবধানে গ্রেফতার করা হচ্ছে। অথচ থলের বিড়াল বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রহস্যজনকভাবে এসব হত্যাকারীদের একজনকেও বিচারের সম্মুখীন করেনি সরকার।

ঢাকা বার নির্বাচনে বিএনপি-জামাত সমর্থিতদের বিপুল জয়

27 Feb, 2015 ঢাকা বারের (ঢাকা জজকোর্ট) নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে। নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে আ'লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদসহ মোট ২৫টির মধ্যে ২৩টিতে জয় লাভ করেছে বিএনপি জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা বার নতুন ভবনের দ্বিতীয় ও চতুর্থ তলায় ভোট গণনা শুরু হয়। রাত ১১টায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
তিনটি প্যানেল থেকে প্রার্থীরা নির্বাচন করলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় সাদা ও নীল প্যানেলের মধ্যে।
সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক পদে ওমর ফারুকী জয়লাভ করেছেন। এছাড়াও সম্পাদকীয় পদে ১০টি এবং সদস্যপদে ১৫টির মধ্যে ১৩টিতেই জয়লাভ করেছে নীল প্যানেল। সাদা প্যানেল থেকে সদস্য পদে মাত্র দুজন জয়লাভ করেছে।
২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়।
এবারের নির্বাচনে ১৫ হাজার ৩৭২ ভোটারের মধ্যে ৯ হাজার ৯২ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
এবারের নির্বাচনে (২০১৫-২০১৬ বর্ষ) ২৫টি পদে ৬১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ১০টি সম্পাদকীয় পদের বিপরীতে ২৬ জন এবং ১৫টি সদস্য পদের বিপরীতে ৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
উৎসঃ আরটিএনএন

শুক্রবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

সরকার দেশকে রাজনীতি শূন্য করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : জামায়াত


জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, সরকার স্বৈরাচারদের মতো দেশে বিরোধীদলের কোনো অস্তিত্ব মানতে রাজি নয়। তারা নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে। 
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক মুজিব আরো বলেন, সরকারের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তারা সরকারকে আলোচনার মাধ্যমে বিরাজমান রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার পরামর্শ দিচ্ছে। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত না করে দেশকে রাজনীতি শূন্য করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সরকারের এ আত্মঘাতি সর্বনাশা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সকলকেই রুখে দাঁড়াতে হবে।
সরকার ২০ দলীয় জোটের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। দেশের জনগণ এখন অনেক বেশি সজাগ ও সচেতন। কাজেই ২০ দলীয় জোটের বিরুদ্ধে তথ্য সন্ত্রাস চালিয়ে সরকার পার পাবে না।
জামায়াতের এ নেতা ২০ দলীয় জোটের ঘোষিত দেশব্যাপী গণঅবরোধ ও হরতালসহ সব কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার আহবান জানিয়ে বলেন, গণআন্দোলন আরো তীব্র করে সরকারের পতন ঘটাতে দেশবাসীকে রাজপথে নেমে আসতে হবে। 
প্রতিবাদ : দু-একটি অনলাইন মিডিয়ায় নিহত অভিজিৎ রায়ের বাবার বরাত দিয়ে ‘আমার ছেলেকে হত্যার জন্য উগ্র জঙ্গিবাদীরাই দায়ী। আর এদের মদদ দিয়েছে জামায়াত।’ মর্মে যে বক্তব্য প্রচারিত হচ্ছে তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অভিজিৎ রায়ের নির্মম হত্যাকা-ে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। জামায়াত সব সময়ই এসব হত্যাকা-সহ সকল হত্যাকা- এবং উগ্র কর্মকা-ের নিন্দা জানায়। জামায়াতকে জড়িয়ে যেসব খবর প্রচারিত হচ্ছে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি অভিজিৎ রায়ের খুনের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনীদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
বিজ্ঞপ্তি।

পিলখানা সেনা হত্যাকান্ড স্মরণে সিটিজেন মুভমেন্টের আলোচনা : নেপথ্য হোতাদের বিচার দাবি

শেখনিউজ রিপোর্টঃ অবৈধ ও গনবিরোধী সরকারের পৈশাচিকতার শিকার হয়েছে পুরো জাতি। জাতির বিরুদ্ধে প্রভুদের নির্দেশে হাসিনা ওয়াজেদের সরকারের এই পৈশাচিকতার শুরু হয় পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে সেনা অফিসার হত্যার মাধ্যমে। এখনি এই অবৈধ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করতে ব্যর্থ হলে জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। মঙ্গলবার লন্ডনে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সেনা হত্যাকান্ডের নেপথ্যের পরিকল্পনাকারীদের বিচারও দাবি করেছেন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশী সাবেক সেনা কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক, সাংবাদিক ও আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লন্ডনের ওয়াটার লিলি অডিটোরিয়ামে সিটিজেন মুভমেন্ট আয়োজিত ‘পিলখানায় সেনা হত্যাকান্ড: একটি জাতীয় বিপর্যয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনরা এই দাবী জানান। জনাব এম এ মালিকের সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান উপস্থিত ছিলেন, তবে তিনি কোন বক্তব্য রাখেন নাই। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. কেএমএ মালিক, শিক্ষাবিদ সৈয়দ মামনুল মোর্শেদ, শেখ নিউজ ডটকম-এর প্রধান সম্পাদক শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান,বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা ইমরান চৌধুরী, মেজর (অব) সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক, মেজর (অব) ফারুক আহমেদ, মেজর (অব) জহির উদ্দিন, সেভ বাংলাদেশ’র আহ্বায়ক ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম, আইনজীবী নেতা ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি মেয়র অহিদুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দৈনিক আমার দেশ-এর বিশেষ প্রতিনিধি অলিউল্লাহ নোমান। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মুফতি শাহ সদরুদ্দীন ও কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা শামীম। আলোচনা সভায় সেনা হত্যাকান্ডের ওপর নির্মিত ১৩ মিনিটের একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শণ করা হয়।
বক্তরা বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তাকে পঙ্গু করতেই পিলখানায় সুক্ষ্ম কৌশলে সেনা হত্যাকান্ড চালানো হয়। দুনিয়ার কোন যুদ্ধে এক সাথে এত সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার নজির নেই। অথচ অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সুপারিকল্পিতভাবে পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে সেনা সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, আক্রান্ত হওয়ার পর বিডিআর ডিজি শাকিল আহমদ ও কর্ণেল গুলজার বিভিন্ন জনকে ফোন করে সাহাজ্য চেয়েছিলেন। এমনটি সেনা প্রধান এবং সরকার প্রধানের কাছেও তারা ফোন করেছিলেন। তাদের উদ্ধারের জন্য আকুতি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেন সময় ক্ষেপন করে নিহতের তালিকা দীর্ঘ করা হল এর রহস্য একদিন উদঘাটন করতে হবে।
যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর ড. কেএমএ মালিক বলেন, পিলখানা হত্যাকান্ড ছিল পরিকল্পিত। এটা আওয়ামী লীগের নীলনকশার অংশ। এ ঘটনার মাধ্যমে সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমরা দাবী করবো, বিএনপি ক্ষমতায় এলে জড়িতদের চিহ্নিত করে যথাযথ বিচার করা হবে।
শেখ নিউজ ডটকম'র প্রধান সম্পাদক শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক কূটচালের অংশ হিসেবে পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল। বিদ্রোহে অংশ নেয়া জওয়ানরা শুধু বিদ্রোহী নয়, তারা আওয়ামী লীগের এজেন্ট হয়ে এই হত্যায় অংশ নেয়। এই হত্যাকাণ্ড ছিল বাংলাদেশী জাতিস্বত্বাকে ধংসের প্রথম ধাপ। হাসিনা ওয়াজেদের প্রতিহিংসার শিকার আজ পুরো জাতি এবং সশস্ত্র বাহিনী। এই পৈশাচিক সরকারকে উৎখাতে ব্যর্থ হলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান বলেন, যারা এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে, সুষ্ঠু তদন্ত করে তাদের শাস্তি দিয়ে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে। পিলখানা হত্যাকান্ডের ছয় বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও কেন সেনাবাহিনীর তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি? সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
শিক্ষাবিদ সৈয়দ মামনুল মোর্শেদ বলেন, পিলখানা হত্যাকান্ড বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, এটি পরিকল্পিত বড় ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও দুর্বল করার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা বিডিআরকে ধ্বংস আর সেনাবাহিনীর সদস্যদের মনোবল ভাঙার জন্য এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।
বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ বলেন, আমার বাবা-মা সহ দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা শান্তি পাব না। স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাব না। আমরা সবাই জানি, কে বা কারা এই হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী এবং কারা জড়িত। দুনিয়ায় কোনদিন এর বিচার না পেলেও আখেরাতে বিচার পাব।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা ইমরান চৌধুরী বলেন, পিলখানা হত্যাকান্ডের জন্য কেবল বাইরের ষড়যন্ত্রকে দায়ী করলে চলবে না। প্রথম এবং প্রধান দায়ী হলো বাংলাদেশের সেনা বাহিনীর একটি অংশ এবং কিছু রাজনীতিক। তাদের চিহ্নিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এবং তৎকালীন সেনা প্রধান এই হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী জেনেও কেন তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হলো না - এ প্রশ্ন তোলেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।
মেজর (অব) সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর সেনাবাহিনীর যেসব কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন, তার দায়ভার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিতে হবে। আজকের বাংলাদেশে যখন প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত থেকে সেনা বাহিনীকে ‘উত্তরপাড়া’ অভিহিত করা হয়, তাতেই প্রমাণিত হয় এই শেখ হাসিনাই সেনা হত্যাকান্ডের প্রধান কুশীলব। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান তিনি।
মেজর (অব) ফারুক আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের সেনা বাহিনী বহি:শত্রুর হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে যেমন ভুমিকা রাখে, তেমনি দেশের ভেতরেও শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভুমিকায় ছিল। পিলখানা হত্যার মাধ্যমে এই দুই অবস্থান থেকেই সেনা বাহিনীকে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে।
মেজর (অব) জহির উদ্দিন বলেন, কিছু প্রশ্নের জবাব-ই প্রমাণ করে দেয়, পিলখানা হত্যাকান্ডে কে বা কারা জড়িত। সেদিন প্রধানমন্ত্রী ডিএডি তৌহিদের সঙ্গে কেন দীর্ঘ বৈঠক করলেন? কেন তাকে শেরাটন থেকে খাবার এনে খাওয়ালেন? কেন সেনা প্রধানকে ডেকে নিজের পাশে বসিয়ে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা? কেন সেনা বাহিনী তাদের সহকর্মীদের মৃত্যু থেকে রক্ষায় এগিয়ে গেল না? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে হবে। দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সেভ বাংলাদেশ’র আহ্বায়ক ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার একদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার পূর্বপরিকল্পনা হিসেবে পিলখানা হত্যাকান্ড ঘটানো হয়। আজকের সেনা বাহিনীকে নিয়ে কটাক্ষ দেখলে সেটা সহজেই অনুমেয়। বাংলাদেশে চলমান আন্দোলনের অবস্থান নিতে তিনি সেনা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।
আইনজীবী নেতা ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব চিরতরে বিনষ্ট করতে পিলখানা হত্যাকান্ড ঘটানো হয়। বাংলাদেশের মানুষ আজ তা পুনরুদ্ধারের লড়াই করছে।
টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি মেয়র অহিদুর রহমান বলেন, বাংলার চলমান মুক্তি আন্দোলনে শক্তিশালী সেনা বাহিনীর ইতিবাচক ভুমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, পিলখানা হত্যাকান্ড না হলে আজ এরশাদকে যেভাবে সেনা বাহিনীর অফিসাররা ‘নো’ বলে বিদায় নিতে বাধ্য করেছিল, তেমনি চলমান গণআন্দোলনও আরো আগেই সফল হতো।

রবিবার থেকে ফের ৭২ ঘণ্টার হরতাল

আগামী রবিবার সকাল ৬টা থেকে ৪ মার্চ বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ সর্বাত্মক হরতাল ডেকেছে ২০ দল। পাশাপাশি অবরোধ কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে।
আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া রবিবার সারাদেশে সকল জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও থানা পর্যায়ে এবং দেশের সকল মহানগরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গণমিছিল হবে।

চলমান অবরোধ, হরতাল ও গণমিছিল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আহবান জানিয়েছেন সালাহ উদ্দিন।

বাকৃবির শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতপন্থী বিজয়ী

ঢাকার নিউজ-২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৫: ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সোনালি দল। এই নির্বাচনে সোনালি দল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট সাতটি পদে বিজয়ী হয়েছে । আর সহসভাপতিসহ চারটি পদে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম। নির্বাচিতরা আগামী এক বছর শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব দেবেন ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ শেষে রাত ৯টায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন শিক্ষক সমিতির সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. আকতারুজ্জামান। নির্বাচনে ৫৪১ জন ভোটারের মধ্যে ৪২৬ জন ভোট দেন । বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. হারুন অর রশিদ এই ফলাফলের খবর নিশ্চিত করেছেন ।
নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট সমর্থিত সোনালি দলের বিজয়ীরা হলেন সভাপতি পদে কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার শরীফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক পদে ফিশারিজ, বায়োলজি ও জেনেটিক বিভাগের ড. রফিকুল ইসলাম সরদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. আবদুল্লাহ ইকবাল, কোষাধ্যক্ষ ড. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য ড. আবু জাফর মুসলেহউদ্দিন, ড. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও ড. তাহসিন ফারজানা ।
আওয়ামী লীগ-সমর্থিত গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের বিজয়ীরা হলেন সহসভাপতি পদে ড. আজাদ উল্লাহ প্রধান, সদস্য পদে ড. আবুল হোসেন, ড. মো. আবদুল আলিম ও ড. আজমল হুদা ফকির।

জনশূন্য আওয়ামীলীগের হরতাল বিরোধী অবস্থান!

ঢাকার নিউজ-২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৫: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতালের বিরুদ্ধে নগরের ২৩টি স্থানে নিয়মিত অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ। তবে এ কর্মসূচিতে নেতা–কর্মীদের তেমন দেখা যায় না। কোথাও কোথাও সমাবেশ হলেও তাতে উপস্থিত থাকেন হাতে গোনা কয়েকজন নেতা–কর্মী। বেশির ভাগ সময় দেশাত্মবোধক গান ও বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ প্রচারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে হরতাল বিরোধী চট্টগ্রাম নগরের ২ নম্বর গেট। আবার কোথাও কোথাও থাকে শুধু দলীয় ব্যানার ঝুলানো জনহীন অবস্থান।
এই এলাকার বিপ্লব উদ্যানের সামনে টাঙানো হয়েছে মাইক। এখানে হরতালবিরোধী কর্মসূচি পালন করে শুলকবহর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। গত মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিপ্লব উদ্যানের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সামিয়ানার ভেতর ছড়িয়ে– ছিটিয়ে আছে বেশ কিছু চেয়ার। তখনো নেতা–কর্মীরা কেউ আসেননি। ফাঁকা চেয়ারগুলোয় বসে ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। নেতা–কর্মীরা না এলেও মাইকে বাজছিল দেশাত্মবোধক গান। অবশ্য এর আগের দিন সোমবার বেলা একটার দিকে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সাত–আটজন নেতা–কর্মীকে সামিয়ানার নিচে বসে থাকতে দেখা য মঙ্গলবার দুপুর ১২টা। চকবাজার অলি খাঁ মসজিদের মোড়ের পাশের যাত্রীছাউনি। যাত্রী নেই। সেখানে বসে আছেন আওয়ামী লীগের ১৩ জন নেতা–কর্মী। দেয়ালে টাঙানো হয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ব্যানার। যাত্রীছাউনির বাইরে পাশে অবস্থান করছিলেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের আরও সাত–আটজন নেতা–কর্মী। চলছিল হরতালবিরোধী সমাবেশ মাইক্রোফোনে বক্তব্য দিচ্ছিলেন দলের নেতা–কর্মীরা। যাত্রীছাউনির ভেতরে ও পাশে অল্পসংখ্যক নেতা–কর্মী থাকলেও সামনের অংশ খালি পড়ে থাকতে দেখা যায় সমাবেশ পরিচালনা করছিলেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। সমাবেশ পরিচালনার একফাঁকে তিনি বলেন, সকাল নয়টা থেকে বেলা একটা এই মোড়ে দলের পক্ষ থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে গণসংগীত, বঙ্গবন্ধুর ভাষণের প্রচার ও বিক্ষোভ সমাবেশ। আওয়ামী লীগের সমাবেশের পর দুপুরে ছাত্রলীগ- যুবলীগের সভা অনুষ্ঠিত হয়। একই চিত্র দেখা গেছে আজকেও।

ডিসিসিতে মেয়র পদে প্রার্থী হচ্ছেন গোলাম মাওলা রনি

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। তিনি এরই মধ্যে মেয়র নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি আমার প্রতি জনগনের সমর্থন রয়েছে। এ কারণে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গোলাম মাওলা রনি ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর নানা কারণে তিনি ব্যাপক আলোচিত ছিলেন।
বিশেষ করে টেলিভিশন টক শো’তে দেয়া তার বক্তব্য আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছিল। ৫ই জানুয়ারির সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী ছিলেন না।  সূত্রঃ ইনসাফ

বৃহস্পতিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

সরকার ক্ষমতায় থাকতে অব্যাহতভাবে মানুষ খুন করছে:জামায়াত

২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৫: সরকার রাষ্ট্রীয় শক্তির জোরে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার উদ্দেশ্যে অব্যাহতভাবে বিনা বিচারে মানুষ খুন করছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ করে বলেন, সরকার ছাত্র-যুবকদের হাত ও পা ভেঙে পঙ্গু করে দিচ্ছে। বিনা বিচারে মানুষকে বছরের পর বছর জেলে আবদ্ধ রেখে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেই চলেছে। ‘জালেম সরকারের’ পতন ঘটিয়ে দেশকে স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, স্বৈরাচারী জালেম সরকার দেশের জনগণকে নির্বিচারে হত্যা করে ও গণহারে গ্রেফতার করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছে। সরকারের জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে ছাত্র, যুবক, কিশোর, নারী, পুরুষ কেউই রেহাই পাচ্ছে না। আত্মীয়-স্বজন রাজনৈতিক দল করার কারণে স্কুল-কলেজের কিশোর, যুবক ছাত্রদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরীক্ষার হল থেকে অন্যায়ভাবে ধরে নিয়ে তাদের শিক্ষা জীবন ধ্বংস করে দিচ্ছে। সরকারের জুলুম-নির্যাতনে দেশের জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে। গ্রামে-গঞ্জে স্বৈরাচারি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে ওঠেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিএনপি-জামায়াত দেশে গণহত্যা চালাচ্ছে’ মর্মে যে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই, বিএনপি জামায়াত নয়, বরং আওয়ামী লীগ সরকারই দেশে গণহত্যা চালিয়ে এবং দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে গাড়িতে বোমা মেরে মানুষ হত্যা করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে। সরকারের সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা প্রতিবাদ জানানো সত্ত্বেও সরকার তাতে কোন কর্ণপাত করছে না। সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়েছে। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। সেদিকে সরকারের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, অবৈধভাবে পাশবিক শক্তির জোরে ক্ষমতায় থাকার উদ্দেশ্যে সরকার বৃহস্পতিবারও রাজধানী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলায় গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোটের দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতগণের মধ্যে আছেন সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা আখতার ফারুক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মনিরুল ইসলাম। জুলুম-নির্যাতন ও গ্রেফতার অভিযান বন্ধ করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনকারী জালেম সরকারের বিরুদ্ধে ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বে গণআন্দোলন অব্যাহত রেখে অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশের জনগণকে স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
ঢাকার নিউজ

আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশকে অস্থিতিশীল করছে-আব্দুল আজিজ


২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৫: চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর শিবির নেতা আব্দুল আজিজ বলেন বাকশালী আওয়ামী লীগ ক্ষমতার লোভে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। সরকারী আদেশ পাবার পর থেকেই তারা একের পর এক বিরোধী নেতা-কর্মীদের হত্যা করছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন বর্বর আচরণে দেশ সম্ভাবনাময় মেধাবী নেতৃত্ব হারাতে বসেছে। আওয়ামী লীগ দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে বিরোধী জোটের গণতান্ত্রিক আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য মানুষের গাড়ী,বাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে তার দায় অপরের উপর চাপানোর চেষ্টা করছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা ধরা পড়লেও তাদের ছেড়ে দিচ্ছে উপরের নির্দেশেই। তাদের এমন ন্যাক্করজনক কর্ম গণমাধ্যমে প্রচার করতে সংবাদ কর্মীদের উপর অবৈধ হস্তক্ষেপ করছে। দেশের হাসপাতালের মর্গগুলো জামায়াত-শিবিরসহ বিরোধী নেতা কর্মীর লাশের শেষ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। স্বজন হারানো পরিবারের কান্নায় দেশের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। সরকারের লেলিয়ে দেয়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এ ধরণের বর্বর হত্যাকা- হানাদার বাহিনীকেও হার মানিয়েছে। ক্ষমতান্ধ বাকশালী সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করছে। আওয়ামী লীগের এমন কুকর্ম বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসনকে চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিয়েছে!
২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল ও অনির্দিষ্টকালের অবরোধের সমর্থনে চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর শিবিরের মিছিলোত্তর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নগরীর রাহাত্তারপুল এলাকা থেকে শুরু হওয়া মিছিলে শিবির নেতা এম.ইলিয়াস,কামাল হোসাইন,মামুন বিন মফিজ, জামাল উদ্দিন, এম.হোসাইন,এস.এম.রায়হান প্রমুখ নেতৃত্ব দেন।
বক্তারা বলেন জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন নস্যাৎ করতে খুনী সরকার হত্যার মতো জঘণ্য কাজটিকেই বেছে নিয়েছে। জালিম আওয়ামী সরকারের মানুষ মেরে ক্ষমতা ধরে রাখার স্বাদ দেশপ্রেমিক জনতা কখনো পূরণ হতে দেবে না। তিনি অবিলম্বে গুম, খুন,হত্যা বন্ধ এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে দ্রুত নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবী জানান। একই সাথে বিরোধী নেতৃবৃন্দ হত্যায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবী জানান। হরতালের সমর্থনে নগরীর চান্দগাঁও, পাচঁলাইশ, প্রবর্ত্তক, বায়েজীদ, রাহাত্তারপুল, চাক্তাইসহ বিভিন্ন জায়গায় শিবির কর্মীরা মিছিল-পিকেটিং করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

উইকিলিকসের গোপন নথিঃ প্রতিশোধ নিতে ও বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দূর্বল করতেই ‘র’ বিডিআর হত্যাকানেড জড়িত হয়

২৫ ফেব্রুয়ারির পিলখানায় নারকীয় সেনা হত্যাযঙ্গের কথা আজও ভুলতে পারেনি জাতি। কি হয়েছিল সেদিন? কারা বা কাদের নির্দেশে এই হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত হয়েছিল?
উইকিলিকসের সেই কথাটিই প্রকাশ করে দিয়েছিল।
সেনা হত্যা নিয়ে সেনাবাহিনীর গঠিত তদন্ত রিপোর্টে মোটামুটি উঠে এসেছিল সব কিছু। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সে তদন্ত রিপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। তবে অনলাইনের কল্যানে জনগণ সব জেনে গেছে ভেতরের গোপন কথা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিটি সৈনিক ও অফিসার জানে – কেনো, কোন্ পরিকল্পনায়, কারা পিলখানায় ৫৭ জন সেনা অফিসার হত্যা করেছে। সেটাই সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো।
১. RAW: ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘RAW’এর পরিকল্পনায় ও ব্যবস্থাপনায় ”পিলখানা হত্যাকান্ড” ঘটে। এর মূল লক্ষ্য ছিল- পাদুয়া ও রৌমারীর ঘটনার বদলা নেয়া এবং বিডিআর বাহিনী ধংস করে দেয়া। ২০০১ সালের এপ্রিল মাসে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বিডিআর-বিএসএফ যুদ্ধে ১৫০ জন বিএসএফ নিহত হয়। এর আগে পাদুয়ায় নিহত হয় ১৫ বিএসএফ। বিডিআর ডিজি মেজর জেনারেল এএলএম ফজলুর রহমানের নির্দেশে ঐ যুদ্ধে অংশ নেয় বিডিআর। ঐ ঘটনার পরে ভারতীয় ডিফেন্স মিনিষ্টার জসবন্ত সিং উত্তপ্ত লোকসভায় জানান, ”এ ঘটনার বদলা নেয়া হবে।” লক্ষ করুন, ১৯৭১ সালে যে সব শর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত সামরিক সাহায্য দেয়, তার অন্যতম শর্ত ছিল “Frontier Guards will be disbanded” (CIA Report SC 7941/71). অর্থাৎ বাংলাদেশের কোনো বর্ডার গার্ড থাকবে না। কিন্তু স্বাধীনতার পরে নানা কারনে পাকিস্তান রাইফেলস বাংলাদেশ রাইফেলসে (বিডিআর) রূপ নেয়। বিডিআর বাহিনীটি ছিলো আধাসামরিক বাহিনী, যার মূল কমান্ড ও ট্রেনিং ছিলো সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের মত। অন্যদিকে ভারতের বিএসএফ ছিলো সিভিল বাহিনী, যাদের ট্রেনিং, জনবল সবই ছিলো নিম্নমানের। এসব কারনে বর্ডারে কোনো যু্দ্ধ হলে তাতে বিডিআর সামরিক পেশাদারিত্ব দিয়ে বিজয়ী হত।
পাদুয়া-রৌমারীর বদলা নেয়ার জন্য বিডিআর বাহিনী ধংস করার পরিকল্পনা করে ভারত। এ লক্ষে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী সময়টিকে বেছে নেয়া হয়- যখন হাসিনার নতুন সরকারের ক্ষমতা গ্রহনের পর পর নাজুক সময়। অনেকেই মনে করেন, ভারতীয় পরিকল্পনায় নির্বাচন ছাড়া অপ্রত্যাশিত পদ্ধতিতে হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানোর নানা শর্তের মধ্যে একটি গোপন শর্ত থাকতে পারে “বিডিআর ধংস করা।” চুড়ান্ত ঝুকি থাকা স্বত্ত্বেও হাসিনাকে তা মেনে নিতে হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বিডিআর সৈনিকদের দাবীদাওয়ার আড়ালে মুল প্লানটি বাস্তবায়নের জন্য মোট ৬০ কোটি রুপী বরাদ্দ করে ভারত। এর মধ্যে পিলখানায় ১৫ থেকে ১৭ কোটি টাকা বিলি হয়, যাতে প্রতিটি অফিসারের মাথার বদলে ৪ লক্ষ টাকা ইনাম নির্ধারন করা হয়। ১৯ ও ২১ ফেব্রুয়ারী ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার বাছাই করা ১৫ জন শুটারকে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়, যারা পশ্চিম বঙ্গ সরকারের পাঠানো (প্রেমের নিদর্শন) ১ লক্ষ মিষ্টির সাথে বাংলাদেশে ঢুকে। একজন বেসামরিক দর্জি’র কাছ থেকে বিডিআর এর পোশাক বানিয়ে বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষে পিলখানায় উপস্থিত থাকে শুটাররা। তাদের দায়িত্ব ছিলো লাল টেপওয়ালা (কর্নেল ও তদুর্ধ) অফিসারদের হত্যা করা। তারা একটি বেডফোর্ড ট্রাক ব্যাবহার করে ৪ নং গেইট দিয়ে প্রবেশ করে ২৫ তারিখ সকালে। ঘটনার দিন সকাল ১১টায় বাংলাদেশের কোনো সংবাদ মাধ্যম জানার আগেই ভারতের “২৪ ঘন্টা” টিভিতে প্রচার করা হয় জেনারেল শাকিল সস্ত্রীক নিহত। অর্থাৎ মূল পরিকল্পনা অনুসারেই খবর প্রচার করে ভারতীয় গণমাধ্যম!
পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে বা আর্মির পদক্ষেপে শেখ হাসিনার জীবন বিপন্ন হলে তাকে নিরাপদে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতীয় ৩০ হাজার সৈন্য, ছত্রীবাহিনী ও যুদ্ধবিমান আসামের জোরহাট বিমানবন্দরে তৈরী রেখেছিলো ভারত। বিদ্রোহের দিন ভারতের বিমান বাহিনী IL-76 হেভি লিফ্‌ট এবং AN-32 মিডিয়াম লিফ্‌ট এয়ারক্রাফট নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে পূর্ণ সহায়তা দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলো। ঐ সময় প্রণব মুখার্জীর উক্তি মিডিয়ায় আসে এভাবে, “এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সব ধরণের সহায়তা দিতে ভারত প্রস্তুত। … আমি তাদের উদ্দেশ্যে কঠোর সতর্কবাণী পাঠাতে চাই, যারা বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে, তারা যদি এ কাজ অব্যাহত রাখে, ভারত হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না, প্রয়োজনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে।
উৎসঃ insidebd.net