দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার ও সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন স্থানে ছাত্রীদের উপর নারকীয় যৌন নির্যাতনে দেশের মানুষ শংকিত ও বিক্ষুদ্ধ। কিছু ক্ষেত্রে যৌন হয়রানীর মাত্রা এত নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছেছে যাতে গোটা জাতি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ৫ই মে রাজধানীর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করা হয়। এর আগে ৪ মে একই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রতিষ্ঠানটির এক ক্যান্টিন বয় যৌন নির্যাতন করে। জাতির জন্য লজ্জার বিষয় হলো এসব অন্যায়ের বিচার আবেদন করলে যথাযথ উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো অভিভাবকদের সাথে কুরুচীপূর্ণ ব্যবহার করেন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা। এর প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করে অভিবাক ও শিক্ষার্থীরা। এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ভিকারুন্নেছা নূন স্কুলের শিক্ষক পরিমল জয়ধরের লালসার শিকার হয়েছিল এক ছাত্রী। কিন্তু তাকে উপযুক্ত শাস্তি না দিয়ে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় ছাড় দেয়া হয়েছে। তাছাড়া সম্প্রতি পহেলা বৈশাখ উদযাপন করার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দিনে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে নারীরা। যা জাতিকে হতবাক করে দিয়েছে। এমনকি ভিডিও ফুটেজে অনেক অপরাধীকে সনাক্ত করা হলেও তাদের অজানা কারণে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি। ছাত্রী ও নারীদের যৌন নির্যাতন এখন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। জাতির জন্য আরও লজ্জার বিষয় হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সনাক্তকৃত লম্পটদের গ্রেপ্তার না করে পুলিশের আইজি এ ঘটনাকে ‘দুষ্ট ছেলেদের দুষ্টামী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সরকারও এমন ভয়াবহ বিষয়ে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা না করে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রহস্যজনক দায়িত্বহীনতা এমন অপরাধকে সরাসরি উৎসাহ যোগাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, লম্পটরা ছাত্রী ও নারীদের ইজ্জতের উপর হামলে পড়বে আর রাষ্ট্রীয় শক্তি পাশকাটিয়ে যাবে তা হতে পারেনা। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই উদাসিনতা লম্পটদের সরাসরি সহযোগিতা করার নামান্তর। একদিকে সরকার নারীর অধিকার নিয়ে গলাবাজি করছে,অন্যদিকে নারীনির্যাতন কারীদের বিচারের ক্ষেত্রে তারা নিরব। সরকারের এহেন অনাকাঙ্খিত ভূমিকার কারণ কি জাতি জানতে চায়।
নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি দাবী জানিয়ে বলেন, কর্তাব্যাক্তিদের মনে রাখা উচিৎ আর যাই হোক জনগণ তাদের ইজ্জত বিসর্জন দিতে প্রস্তুত নয়। অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র নারীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘৃণিত কাজ না হয় তার জন্য কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় নারীর ইজ্জতের হেফাজতের জন্য ছাত্রজনতা জনগণকে সাথে নিয়ে যে কোন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। আর তখন সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য সরকারকেই দায়ভার বহন করতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন