আমার মা, দুই ভাই ও আমাকে আমার চাচা, ফুপুসহ আট জন ধরে প্রচুর মারধোর করে। মারতে মারতে আমার এক ভাইয়ের হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। অন্যদিকে আমার মা অজ্ঞান হয়ে গেছে। এ বিষয়ে বংশাল থানায় মামলা করতে গেলে সবকিছু শোনার পর মামলা নিবে বলে জানিয়ে লেখার জন্য প্রস্তুত কিন্তু যখনই জানতে পারে আমার চাচা বংশাল থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সিরাজউদ্দিন ওরফে বাদলসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা করবো তখন পুলিশের কলম থেকে যায়। দশ দিন পার হয়ে গেলেও মামলা নেইনি পুলিশ। এমনটিই বলছিলেন হামলার শিকার জয়নব সোহা(২৫)।
তিনি জানান, এক বছর আগে জয়নব সোহা’র বাবা নাসিম আহমেদ মারা যাবার পর থেকেই মা ও তাঁরা তিন ভাইবোন পুরান ঢাকার চানখাঁরপুল লেনে নিজের পৈতৃক ৬০/১ নং বাড়িতে বসবাস করে আসছেন।
কিন্তু তার চাচা বংশাল থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সিরাজউদ্দিন ওরফে বাদলসহ তার ফুপুরা তাদের এই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য প্রথম থেকেই বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছে। এক পর্যায়ে গত ১৩ মে তাঁর চাচা বাদল, আবুল, মনির, শাহীন, তাঁর ফুপু দিলজাহান, ফরিদা ও তাদের সন্তানরাসহ ওই বাড়ি থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করতে বেধড়ক মারধোর করেন। এতে তাঁর ভাই কলেজপড়ুয়া জুবায়েরের(২০) বাঁ হাত ভেঙে গেছে এবং তার খাদিজা বেগমের (৪৭)উপর নির্যাতনে তিনি পড়ে গিয়ে প্রচুর ব্যাথা পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যান।
সাত দিন পরে মা ও ছোটভাই আকিব(১৪) কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও বর্তমানে ভাই জুবায়ের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জয়নব আরও জানান, তার ভাই ও মায়ের হাসপাতাল কর্তৃক প্রেসক্রিপশনের ফাইলটি তিন দিন আগে কাউন্টার থেকে হঠাৎ করেই চুরি হয়ে যায়। পরে এটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করে আবার নতুন একটি প্রেসক্রিপশনসহ ফাইল প্রদান করা হয়।
থানায় মামলা না নিয়ে উল্টা হুমকির অভিযোগ করে জয়নব বলেন, হামলার ঘটনায় মামলা করতে পর পর কয়েকদিন তিনি বংশাল থানায় গেছেন। কিন্তু মামলা নেওয়া তো দূরের কথা, সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) গ্রহণ করেনি থানা-পুলিশ। থানার ওসি হুমকি দিয়ে বলেছেন, কোনো মামলা নেওয়া যাবে না। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হাসপাতাল থেকে হাজতে এনে ইয়াবা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে।
অবশ্য বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কুদ্দুস এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিটমাট করে ফেলা হবে স্থানীয়দের এমন অনুরোধে তিনি মামলা নেননি।
আওয়ামী লীগের নেতা বাদল বলেন, তাঁর ভাই মনিরের সঙ্গে ভাতিজা আকিবের (জুবায়ের ও জয়নবের ছোট ভাই) পারিবারিক বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে। এতে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
আহত পরিবারের সদস্যরা বলেন, বাদলসহ অন্যান্যরা এখন আমাদেরকে বিভিন্ন লোকদিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা যেন বাড়িতে ফিরে না যায়। তাছাড়া এতবড় ঘটনা যে ঘটাল আমরা এখন অনেক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা এ বিষয়ে উপর মহলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা চায়।
এদিকে স্থানীয় বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, বাদলের ‘মৌমাছি সঞ্চয় সমিতি’ নামে একটি প্রতিষ্টান ছিল যেখানে শত শত সদস্যদের প্রায় কয়েক কোটি টাকা আত্নসাৎ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় দেড় বছর আগে বন্ধ করে দিয়ে তিনি কয়েকমাসের জন্য লাপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন। এখন টাকা পাওনা সদস্যরা ভয়ে তার কাছে টাকা চাওয়ার সহস করেনা।
ঢাকার নিউজ এর সৌজন্যে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন