দেশী বিদেশী মিডিয়ায় ফুটে উঠেছে ৩ সিটি নির্বাচনে সরকারের নানামুখি ভোট জালিয়াতির চিত্র। ‘এক নয়া মডেলের নির্বাচন। উৎসব তো বটেই। দখলের উৎসব। একেবারেই খোলামেলা। কোন রাখডাক নেই। সকাল সকাল প্রায় প্রতিটি কেন্দ্র থেকেই হাওয়া বিএনপি সমর্থক এজেন্টরা। কেউ ঢুকতে পেরেছেন, কেউ পারেননি। তবে থাকতে পারেননি কেউই। হুমকি, মারধর, হামলা আর গ্রেফতারের শিকার হয়েছেন তারা। কাউকে কাউকে আটকে রাখা হয় আগেই। রক্তাক্ত এজেন্ট যেন একটি নির্বাচনেরই প্রতিচ্ছবি। আভাস পাওয়া গিয়েছিল আগের রাতেই। খবর আসছিলো, ব্যালট পেপারে সিল মারার। যদিও তার সংখ্যা ছিল কম। তবে গতকাল দিনের শুরুতেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়।’ এভাবেই ‘ডিজিটাল জামানায় এনালগ কারচুপি’ শিরোনামে নির্বাচন চিত্র তুলে ধরেছে দৈনিক মানবজমিন।
প্রথম আলো : ‘জিতল আ. লীগ, হারল গণতন্ত্র’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি বুথ। বেলা দেড়টা। ভোটারের অপেক্ষায় দুই নির্বাচনী কর্মকর্তা (ডানে) ও ক্ষমতাসীন দল-সমর্থিত প্রার্থীর প্রতিনিধি (বায়ে) - ছবি: আবদুস সালাম। তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ঘিরে মানুষের মধ্যে যে শঙ্কা ছিল, শেষ পর্যন্ত তা-ই সত্যি হলো। প্রশ্নবিদ্ধ এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত তিন মেয়র প্রার্থী বিজয়ী হলেও গণতন্ত্রের পরাজয় হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
জাতীয় রাজনীতিতে ঝড় তোলা এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটের খেলায় গণতন্ত্র হেরেছে। সরকার-সমর্থকেরা বিরোধীদের বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রের কাছেই যেতে দেননি। অনেকটা ফাঁকা মাঠে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উন্মুক্ত কারচুপি করেছেন তারা। আর বিরোধী দল বিএনপি-সমর্থক প্রার্থীরা ভোট শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। চট্টগ্রামে মনজুর আলম বর্জনের ঘোষণা দেয়ার ঘণ্টা খানেক পরই ঢাকায় একই ঘোষণা দেন মির্জা আব্বাসের পক্ষে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস এবং তাবিথ আউয়াল।
প্রধান খবরে আরও বলা হয়, তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে যে শঙ্কা ছিলো তাই সত্যি হলো। প্রশ্নবিদ্ধ এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত তিন মেয়র প্রার্থী বিজয়ী হলেও গণতন্ত্রের পরাজয় হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জাতীয় রাজনীতিতে ঝড় তোলা এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটের খেলায় গণতন্ত্র হেরেছে। সরকার-সমর্থকেরা বিরোধীদের বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রের কাছেই যেতে দেননি। অনেকটা ফাঁকা মাঠে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উন্মুক্ত কারচুপি করেছেন তারা।
বিবিসি বাংলা : ‘তেজগাঁওয়ে কেন্দ্রের বুথ দখল করে গণহারে ভোট’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের একটি ভোট কেন্দ্রের বুথ দখল করে একদল কর্মীকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর মার্কায় গণহারে সিল মারতে দেখা গেছে। এসময় ভোট-গ্রহণের দায়িত্বে থাকা সর্বোচ্চ কর্মকর্তা প্রিজাইডিং অফিসার নিস্ক্রিয় হয়ে বসেছিলেন। তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের একটি ভোট কেন্দ্রে বিবিসির সংবাদদাতা ফারহানা পারভীন এই ভোট জালিয়াতি প্রত্যক্ষ করেন।
দৈনিক যুগান্তর : ‘ভোট জালিয়াতির মহোৎসব’ শিরোনামে লিখেছে, সকালেই অধিকাংশ ভোট কেন্দ্র দখল, প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল, অংশ নেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তারাও, কেন্দ্রে কেন্দ্রে সরকারদলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ-গুলি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দল সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করতে দিনের প্রথম ভাগেই তিন সিটির অধিকাংশ ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে নেয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সামনেই তারা ছিনিয়ে নেয় ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স। অস্ত্রের মহড়ার পাশাপাশি জোর করে বের করে দেয় বিএনপিসহ প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্টদের। চলে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিলমারাসহ জাল ভোটের মহোৎসব ও নজিরবিহীন কারচুপি।
দৈনিক ইত্তেফাক : ‘কেন্দ্র ২৭০০, হাঙ্গামা ৫৫টিতে’ শিরোনামে লিখেছে, বিচ্ছিন্ন কিছু গোলযোগের ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। ঢাকার দুই সিটির এক হাজার ৯৮২টি কেন্দ্রের মধ্যে গোলযোগ হয়েছে অর্ধশত কেন্দ্রে। দুই সিটিতে মোট ভোটার ৪২ লাখের বেশি। বিপরীতে হাঙ্গামা হওয়া কেন্দ্রগুলোতে মোট ভোটার এক লাখের বেশি নয়। ঢাকায় তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ২৫টির মতো কেন্দ্রে সাময়িকভাবে ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল।
দৈনিক সমকাল : ‘প্রশ্নবিদ্ধ ভোট, বিএনপির বর্জন’ শিরোনামের খবরে বলা হয়, শেষ পর্যন্ত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই সম্পন্ন হলো তিন সিটি করপোরেশনের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ নির্বাচন। ভোটকেন্দ্র দখল, কারচুপি, জাল ভোট, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া, হামলাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গত মঙ্গলবার ভোট শুরুর সাড়ে তিন ঘণ্টা পর নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বর্জনের ঘোষণা দিল বিএনপি। প্রতিবাদে ফের হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে পারে দলটি। বিএনপির পাশাপাশি নির্বাচনকে ‘ভোট ডাকাতি’ ও ‘প্রহসনের নির্বাচন’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন বিভিন্ন দলসমর্থিত মেয়র প্রার্থীরাও।
দৈনিক নয়া দিগন্ত: ‘জালিয়াতির মহোৎসব, বিএনপির বর্জন’ শিরোনামে প্রকাশিত মূল প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্র দখল আর নজিরবিহীন কারচুপির মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হলো ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাজধানীতে সকাল ৮টা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় সব ভোটকেন্দ্রের দখল নেয় সরকারদলীয় লোকজন। বেশির ভাগ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি বিএনপি প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের।
দৈনিক ইনকিলাব : ‘নজিরবিহীন অভিনব ভোট’ শিরোনামে লিখেছে, অভিনব কায়দায় অনুষ্ঠিত হলো তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। আলোচিত এ নির্বাচনে ভোটগগ্রহণ নাটক-সিনেমার গল্প ও আলাদিনের দৈত্যকেও হার মানিয়েছে। সকাল ৯টার মধ্যেই ফলাফল নিশ্চিত হওয়ায় ভোটের ইতিহাসে যোগ হলো নতুন অধ্যায়। অর্ধশত প্রার্থী প্রচারণায় নামতে না পারার ঘটনা ছিল নজিরবিহীন। আর নির্বাচনও হলো নজিরবিহীন। আগের রাত থেকেই ইশারা-ইঙ্গিত পাওয়া যায় ব্যালট পেপারে সিলমারার খবর।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : ‘সবকিছু ছিল আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে’ শিরোনামে লিখেছে, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাঠ থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সবকিছুতেই ছিল আওয়ামী লীগের উপস্থিতি। কেন্দ্রের আশপাশে প্রার্থীদের পক্ষে নীরব প্রচারণা, সাধারণ ভোটারদের সহায়তা ও কেন্দ্রের এজেন্ট সব ক্ষেত্রেই এটা চোখে পড়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে মহানগরীর সাধারণ কর্মী সবাই ছিলেন সরব। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর এবং মেয়র- তিন পদেই ছিল আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সমর্থকদেরই প্রাধান্য।
‘অভিযোগবিদ্ধ ভোটে জয় সরকার সমর্থকদের’ শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম লিখেছে, ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট বর্জনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তিন সিটি করপোরেশনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরাই মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। মঙ্গলবার ভোটের মাঝখানে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে প্রায় সব কেন্দ্র দখল ও কারচুপির অভিযোগ এনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। একই অভিযোগ তোলে বাম দলগুলোও।
দৈনিক মানবজমিন : ‘আপা সিল দেন টাইম কম’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “সকাল ১০টা ২৫ মিনিট। রাজধানীর বঙ্গবাজারসংলগ্ন সিটি করপোরেশন পরীক্ষাগার। এটি ঢাকা দক্ষিণের ২০নং ওয়ার্ডের ২নং কেন্দ্রে। এ কেন্দ্রের আশপাশ থেকে বোঝা যাচ্ছিল কেন্দ্রে কিছু একটা হচ্ছে। পরিবেশ বুঝতে ভেতরে যাওয়ার পথে কেন্দ্রমুখেই বাধা। আনসার এগিয়ে এসে বলে ভাই কই যাবেন। সাংবাদিক বলার পর ভেতরে যাওয়ার অনুমতি মিললো। ভেতরে প্রবেশ করেই চোখে পড়লো ভিন্নচিত্র। ছোট একটি রুম। গাদাগাদি অবস্থা। পা রাখার জায়গা নেই। চারদিকে হাউমাউ আওয়াজ। কারও কথা কেউ শুনছে না। এর মধ্যে বুথের ভেতর থেকে আওয়াজ এলো আপা সরেন। তাড়াতাড়ি সিল মারতে হবে। টাইম কম। লাইনে অনেক লোক। বুথের ভেতরে সিল মারছেন স্বপন নামে এক যুবক। পরে জানা যায়, তিনি স্থানীয় যুবলীগ নেতা। স্বপন এক নারী ভোটারকে বলছেন, আপনি সরেন, টাইম কম। তাড়াতাড়ি মারতে হবে। পেছনে এই প্রতিবেদনকে দেখার পর বলেন, ভাই এখানে কোন গ-গোল নেই। সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে। এ ভোটার তার পছন্দের প্রার্থীকে চিনতে পারছিলেন না। তাই একটু সাহায্য করলাম। আপনি কার লোক বলেন, আমি সাঈদ খোকন এবং রতন ভাইয়ের লোক। এখানে কেউ যেন গোলমাল না করতে পারে সেজন্য পাহারা দিচ্ছি। গতকাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বঙ্গবাজারসংলগ্ন ফুলবাড়িয়ার সিটি করপোরেশন পরীক্ষাগার-৩-এর ২নং কেন্দ্রে গিয়ে এসব চিত্র দেখা যায়।”
বিশ্ব মিডিয়ায় সিটি নির্বাচন : যুক্তরাজ্যের বার্তা সংস্থা রয়টার্স গত মঙ্গলবার নির্বাচন চলাকালীন বিএনপির বর্জনের পরপরই এ নিয়ে একটি খবর প্রকাশ করে। খবরটির শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে বিরোধীদের মেয়র নির্বাচন বর্জন।'
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকার শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে স্থানীয় নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা, ক্ষমতাসীনদের বিজয়, বিরোধীদের বর্জন।’
ফরাসী বার্তা সংস্থা এএফপি’র শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে বিরোধীদের সিটি নির্বাচন বর্জন।’ একই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দ্য ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়া।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচেভেলের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে বিরোধীদের মেয়র নির্বাচন বর্জন।’চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়ার মঙ্গলবারের এক খবরের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে বিএনপির বয়কট সত্ত্বেও সিটি নির্বাচন চলছে।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে বিএনপির মেয়র নির্বাচন বর্জন।’ একই শিরোনামে খবর প্রকাশ করে ইকোনমিক টাইমস ও ডিএনএ ইন্ডিয়া।
পাকিস্তান টুডে’র শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে বিরোধীদের মেয়র নির্বাচন বর্জন।’
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে বর্জনের নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের জয়ী ঘোষণা।’ গাল্ফ নিউজের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে বিরোধীদের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন বর্জন।’
এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী আরও কয়েকটি গণমাধ্যমে বাংলাদেশের সিটি নির্বাচনের খবর প্রকাশিত হয়েছে। সব প্রতিবেদনেই বহুদিন পর বিএনপির নির্বাচনে ফিরে আসা এবং ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে ওই দিনই তা বর্জনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।সূত্র-সংগ্রাম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন