আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইলে তফসিল পেছাতে পারে। এটা ইসির বিষয়। পেছালেও দলীয়ভাবে আপত্তি জানাবে না আওয়ামী লীগ। তবে এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন আছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ পেছানোর ব্যাপারে সংসদীয় বোর্ডে আলোচনা হবে।
রবিবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন পেছানোর বিষয়টা ইসির। তারা পেছাবেন কি না সেটা তাদের বিষয়। সিডিউলের বিষয়টা সম্পূর্ণভাবে ইসির এখতিয়ার।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের পেছানোর সময় এবং দাবি যৌক্তিক হতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা সময় ও বাস্তবের দিকে চেয়ে যথাযথভাবে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন সিডিউল পেছালে আমরা আপত্তি করবো না। দলীয়ভাবে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। তবে সব দলের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে নির্বাচন কমিশন এটা ইসির কথা।
ক্রিকেটার মাশরাফির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক আগে থেকেই মাশরাফির বিষয়টা ভাবা হচ্ছে। মাশরাফি তার নিজ এলাকায় কাজ করছেন। তবে সাকিবকে দেশের স্বার্থে আরও খেলতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মণি, সাংগঠনিক সম্পাদক একে এম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।
এদিকে জোটগত প্রার্থীর বিষয়ে সময় বাড়ানোর আবেদন করতে রবিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল।
রবিবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।
এর আগে শনিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
১৯৮৭ সালের এই দিনে তৎকালীন সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে রাজধানীর রাজপথে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ নূর হোসেন নিহত হন। তার রক্তদানের মাধ্যমে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন বেগবান হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, ‘সামনে আগামী জাতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের এ অভিযাত্রায় অনেক ঝুঁকি রয়েছে। তবুও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা যে যাত্রা শুরু করেছেন তা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ যে কোন ধরনের ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের গণতন্ত্রের পথ কখনো ফুল বিছানো ছিল না। অনেক সংগ্রাম, ত্যাগ, জেল-জুলুম ও আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে অর্জন করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের এ সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেেব। আজকের গণতন্ত্র দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছে। দেশে আইপিইউ ও সিপিএ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ দু’টি সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকতা ফুটে উঠেছে। এ প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দলের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে এত হতাশা কেন তা আমরা জানি না। তবে তাদের এ হতাশার মধ্যেও আশার আলো রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে তাদের ঘোষণা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।’
নির্বাচনে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন নেই, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছে। এখন সব কিছুই নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে গেছে। ইসি নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
কাদের আরো বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কতৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে আমরাও নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে যাবো।
এর আগে ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামনুন নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের সদস্য আকতারুজ্জামান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ ও মোটর চালক লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান।
উৎসঃ rtnn
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন