বাংলাদেশ বার্তাঃ অবাধ, অংশ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিভিন্ন প্রস্তাবনা ও সুপারিশ থাকলেও সরকার তা আমলে নিচ্ছে না। সদ্য গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যে সাত দফা দিয়েছে তাতে ক্ষমতাসীনেরা নেতিবাচক অবস্থানই গ্রহণ করেছে।
অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে যে অংশীজনের মধ্যে বড় ধরনের আস্থার সঙ্কট রয়েছে তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। খুব সঙ্গত কারণেই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহল থেকে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের তাগিদ দেয়া হলেও সরকার নাকের ডগায় মুলা আর পিঠে কুলা ঝুলিয়েছে। ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে সরকার সংবিধান রক্ষা করতে গিয়ে প্রয়োজনে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে নামতেও প্রস্তুত।
ক্ষমতাসীনদের ভাবনায় এ কথা বোধহয় স্থান পেয়েছে যে, মানুষের জন্য সংবিধান নয় বরং সংবিধানের জন্যই মানুষ। তাই সংবিধান রক্ষার জন্য যদি রাম-রাবণের যুদ্ধ শুরু হয় তাতেও সমস্যা নেই। সংবিধান রক্ষার গরজ বলে কথা।
মহাভারতে বর্ণিত কুরুক্ষেত্র মহাসমর সংঘটিত হয়েছিল কৌরব ও পাণ্ডব পক্ষের মধ্যে। কাহিনী পৌরাণিক হলেও এই লড়াই শুরু হয়েছিল রাজশক্তি অর্জনকে কেন্দ্র করে ধৃতরাষ্ট্রের পুত্র দুর্যধন ও পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে। কিন্তু তা কারো জন্যই ইতিবাচক হয়নি। পৌরাণিক বর্ণনায় ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ছিল কুরুক্ষেত্র মহাসমর। যুদ্ধের ফলাফল এতোটাই ভয়াবহ হয়েছিল যে, যুদ্ধ সমাপ্তিতে একমাত্র জীবিত ব্যক্তি ছিলেন পঞ্চপাণ্ডবের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির। যে রাজদণ্ডের জন্য এই প্রাণঘাতী মহাসমর যুদ্ধশেষে সে রাজদণ্ড প্রয়োগের কোনো উপযোগিতা অবশিষ্ট থাকেনি। একমাত্র জীবিত ব্যক্তি ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির এই মর্তলোকে থাকার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাননি।
অনেকটা অনুতাপ নিয়েই ধর্মরাজ হিমালয় শীর্ষ হয়ে জীবতাবস্থায় স্বর্গারোহণ করেছেন বলে কাশিরাম দাসের মহাভারতের বর্ণনায় পাওয়া যায়। স্বর্গলোকই যখন ধর্মরাজের গন্তব্য তখন মর্তলোকের ক্ষমতার জন্য এই প্রাণঘাতী লড়াইয়ের যৌক্তিকতা প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু আমরা এই পৌরাণিক কাহিনী থেকেও মোটেই শিক্ষা গ্রহণ করিনি। চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর যে অবস্থান তাতে আমরাও বোধহয় আত্মঘাতী যুদ্ধের দিকেই অগ্রসর হচ্ছি। আমাদের দেশের একশ্রেণীর রাজনীতিকেরা একেবারে পূঁজারী ব্রাহ্মণে পরিণত হয়েছেন। তারা মরে গেলেও টিকি দিতে রাজি নন। মূল সমস্যাটা সেখানেই।
অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য যেসব প্রস্তাবনা দেয়া হচ্ছে সেসব অসাংবিধানিক তকমা লাগিয়ে সরকার দায়মুক্ত থাকতে চাইছে। কিন্তু এ কথা বিস্মৃত হলে চলবে না যে, আমাদের দেশে যতবারই রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে তার কোনোটিই সাংবিধানিক পদ্ধতি বা কাঠামোতে সমাধান সম্ভব হয়নি। এমনকি সংবিধান মেনে আমরা স্বাধীনতাও অর্জন করতে পারিনি। ১৯৯০ সালে গণ-আন্দোলনের সফলতার পর তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী যে সরকার গঠিত হয়েছিল তাও ছিল সাংবিধানিক কাঠামোর বাইরে। উপ-রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও কর্মরত প্রধান বিচারপতিকে উপ-রাষ্ট্রপতি নিয়োগ, পরক্ষণেই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, রাষ্ট্রপতি হিসেবে উপ-রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ এবং শেষ পর্যন্ত তার স্বপদে ফিরে যাওয়া কোনোটাই সংবিধানসম্মত ছিল না। তাই পরবর্তী সংসদের এসব রেটিফাই করে নিতে হয়েছিল।
এতে প্রমাণ হয় যে, সংবিধান কোনো স্বর্গীয় প্রত্যাদেশ নয় যে পরিবর্তন করা যাবে না। বরং যা জনগণের জন্য কল্যাণকর সে আদলেই সংবিধান সংশোধন একটি চলমান প্রক্রিয়া হওয়ায় কাক্সিক্ষত। আর এই প্রক্রিয়াকে রুদ্ধ করা উন্নয়ন, অগ্রগতি, প্রগতি ও গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক হতে পারে না। আর সংবিধান অনুযায়ী জনগণই রাষ্ট্রের মালিক। তাই সংবিধান প্রণীত হতে হবে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আবেগ-অনুভূতি, বোধ-বিশ্বাস, তাহজিব-তামদ্দুনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে। সংবিধানে সে কথারই স্বীকৃতি রয়েছে। সংবিধানের ৭(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, All powers in the Republic belong to the people …’ অর্থাৎ প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। তাই গণস্বার্থকে জিম্মি করে সংবিধান রক্ষার মাতম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
১৯৯৬ সালে রাজনৈতিক সঙ্কটের যেভাবে সমাধান চাওয়া হয়েছিল তাও সংবিধানসম্মত ছিল না। তাই সে সঙ্কটের সমাধানের জন্য ১২ ফেব্রুয়ারি একতরফা নির্বাচন ও নির্বাচনের পর নির্দলীয় সরকারের অনুকূলে সংবিধান সংশোধন করে সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তদানীন্তন ক্ষমতাসীনেরা সে নির্বাচনকে নিয়মরক্ষার নির্বাচন বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা দশম সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনুরূপ প্রতিশ্রুতি দিলেও সে প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা করেননি বরং একটি বিতর্কিত নির্বাচনকে ভিত্তি ধরেই তারা এখন মেয়াদপূর্তির দ্বারপ্রান্তে। যা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। ২০০৬ সালে ৪ দলীয় জোট সরকার মেয়াদপূর্তির পর যে রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল তারও সমাধান হয়েছিল সংবিধান লঙ্ঘন করেই। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কেয়ারটেকার সরকারপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করলেও সে সরকার টিকে থাকেনি বরং একটি সংবিধানবহির্ভূত জরুরি সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে দীর্ঘ দুই বছর ক্ষমতায় থেকেছে। আজ যারা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা বলে দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূলবোধকে খাদের কিনারে নিয়ে গেছেন তারাও কিন্তু সে অসাংবিধানিক সরকারের সরাসরি সুবিধাভোগী। এ বিষয়ে তাদের আত্মস্বীকৃতিও রয়েছে।
ফলে সরকারের সংবিধান রক্ষার আকুতি কেউই ভালো চোখে দেখছেন না। দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। সে মতে রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও রাজপথে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার হলেও দেশের মানুষ সে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব সরকারের হলেও সরকার সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। আইন ও সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার থাকলেও দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি এখন প্রায় অপ্রতিরোধ্য। ক্ষমতাসীন দলের সংবিধান রক্ষার ধারণা ইতিবাচকই; কিন্তু তা তখনই সফল ও সার্থক হয়ে উঠবে যখন সরকার জনগণের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে পারবে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো।
সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় পার্টি (জাপা) একই সাথে সরকার ও বিরোধী দলে থেকে সংসদে দায়িত্ব পালন করতে পারে কিনা তা নিয়েও তো দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে গুরুতর প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি এ নিয়ে একজন নির্বাচন কমিশনারও জোরালো আপত্তি তুলেছেন। একই সাথে সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি কতটুকু সম্ভব তা নিয়েও প্রশ্নটা সর্বমহলেই। শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দায়ের করার সাংবিধানিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্নটা কেউই অযৌক্তিক মনে করছেন না।
মূলত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ একটা বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে এতে কোনো সন্দেহ করা চলে না। এর পর থেকে দেশে যত নির্বাচন হয়েছে কোনো নির্বাচনই জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। এমনকি আন্তর্জাতিক মহলও বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলছে এবং তারা অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক জোর তাগিদ দিয়ে আসছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যাসন্ন হওয়ায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহল তাদের তৎপরতা বাড়িয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতকে নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভিন্ন কথা থাকলেও তারা এখন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপরই গুরুত্ব দিচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এমন একটি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়, যেখানে জনগণের ইচ্ছের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটবে। গণচীনও অনুরূপ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পক্ষে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসির সক্ষমতা আছে কিনা বা বর্তমান ইসি নির্বাচন নিরপেক্ষ করার বিষয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সর্বমহলে। কারণ, বর্তমান ইসি এখন পর্যন্ত নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করতে পারেনি।
সংসদ বহাল রেখে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয় বরং সংসদ ভেঙে বা মেয়াদান্তে নতুন নির্বাচনের ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকার সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার কথা উল্লেখ করলেও এ কথাও সর্বাংশে সঠিক নয়। সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ রয়েছে। সংবিধানের ১২৩ এর ৩(খ) অনুচ্ছেদে বিষয়টি খুবই স্পষ্ট। এ বিষয়ে সংবিধানে দু’টি বিকল্প রয়েছে। সংবিধানে ১২৩ (ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, সংসদ রেখে নির্বাচন করা যাবে। ১২৩ (খ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে সংসদ ভেঙে নির্বাচন করা যাবে। তাই সংসদ ভেঙে নির্বাচন অসাংবিধানিক এ কথাটাই অসাংবিধানিক ও সত্যের অপলাপ ছাড়া কিছু নয়। অন্যান্য সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে সংসদ ভেঙে দেয়ার রেওয়াজ রয়েছে। কিন্তু নেতিবাচক রাজনীতির কারণেই আমরা সাংবিধানিক উদারতাগুলো থেকে উপকৃত হতে পারছি না।
সরকার ও বিরোধী পক্ষগুলো আসন্ন নির্বাচন নিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে অপসহীন থাকায় মূলত রাজনৈতিক সঙ্কটের মূল কারণ। তাই উভয়পক্ষের দূরত্ব কমানোর জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহল আসন্ন নির্বাচন তিন মাস পিছিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করেছে। মার্কিন উপসহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলস বাংলাদেশ সফরকালে বিভিন্ন মহলে এরকম একটি প্রস্তাব নিয়ে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। সংবিধানের ১২৩(৩) (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মেয়াদ অবসানের আগের নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। আবার (খ)-তে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরের নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। ২৮ জানুয়ারি বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ওই সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে, সংসদ ২৯ জানুয়ারি আপনা আপনি ভেঙে যাবে।
সংসদ ভেঙে গেলে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তত্ত্বাভিজ্ঞ মহল মনে করে নির্বাচন ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পেছালে, বিরোধী দলগুলোর বেশ কিছু দাবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে। সম্প্রতি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে সাত দফা দাবি দিয়েছে তার প্রথম দাবিই হলো বর্তমান সংসদ তফসিল ঘোষণার সাথে সাথে ভেঙে দিতে হবে। চলমান রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে এই সুযোগটাকে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। এ বিষয়ে বিরোধী পক্ষকে ইতিবাচক মনে হলেও সরকারের অবস্থানটা বেশ নেতিবাচক।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেকোনো নির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্বশর্ত হলো অংশগ্রহণকারী সব পক্ষের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দল যে সুবিধা ভোগ করছে, বিরোধী দল সংবিধান প্রদত্ত অধিকার ভোগ করতে পারছে । শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও তাদের বাধা দেয়া হচ্ছে। বিরোধী দলের কমিটি ধরে ধরে মামলা দায়ের কিংবা গায়েবি মামলা দায়ের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এমতাবস্থায় নির্বাচনকালীন জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির অধীনে ন্যস্ত করার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। কেউ কেউ অর্থ, তথ্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কেও নির্বাচন কমিশনের আওতায় আনার সুপারিশ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব অর্পিত হলে জাতীয় নির্বাচনে জনগণের আস্থা বেড়ে যাবে এবং নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে সহায়ক হবে। মূলত নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচন করাসহ যেকোনো সমস্যার সমাধানে সংবিধান কোনোভাবেই বাধা বা প্রতিবন্ধক নয় বরং রাজনৈতিক সদিচ্ছাই এ জন্য যথেষ্ট হবে। অতীতে আমাদের দেশে এমন নজির রয়েছে।
এজন্য চাই সমস্যা সমাধানে আন্তরিকতা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা। তবে উভয় ক্ষেত্রেই আমাদের দুর্বলতা বেশ প্রকট। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই আমাদের সেই দুর্বলতা থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন