বাংলাদেশ বার্তা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোটাররা দুজন মুসলিম নারীকে নির্বাচিত করলেন। তারা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম যুগ্ম মুসলিম কংগ্রেসওমেন। মার্কিন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টিটিভ এর প্রথম মুসলিম নারী সদস্য (এম.পি)। এর আগে কোন মুসলিম নারী আমেরিকার সংসদে নির্বাচিত হননি। তারা ডেমোক্র্যাটিক দলের টিকিটে রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীকে সহজেই পরাজিত করলেন।
এমন এক সময় ঐতিহাসিক ঘটনাটি ঘটলো , যখন দেশটিতে মুসলিম ও অভিবাসন বিরোধী প্রচার প্রচারণা দিন দিনই বাড়ছে। খবর এএফপি’র। সোমালি শরণার্থী ইলহান ওমর, ডেমোক্র্যাট এই নেত্রী ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মধ্য পশ্চিম অঙ্গরাজ্য মিনেসোটা থেকে তার দলের থেকে জয়ী। ইলহাম হলেন সোমালিয়ায় জন্মগ্রহণকারী শরণার্থী।
ইলহান ওমরের একটি প্রগতিশীল রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে। তিনি অবৈতনিক কলেজ শিক্ষা, সবার জন্য বাসস্থান এবং অপরাধী বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের সমর্থক।
হিজাব পরিহিতা মিনেসোটার এই আইনপ্রণেতার ব্যক্তিগত পরিচয় তার নির্বাচনী প্রচারণায় একটি বড় ভূমিকা রাখছে।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সোমালি আমেরিকান বিধানসভার সদস্য।
গৃহযুদ্ধের কারণে ইলহান মাত্র আট বছর বয়সে তার পরিবারের সাথে দেশ ত্যাগ করেন। পরে তার পরিবারের সঙ্গে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন।
অল্প বয়সে দাদার সঙ্গে প্রথমবারের মতো ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সময়ই রাজনীতির প্রতি ইলহানের আগ্রহ জন্মে।
সেপ্টেম্বর মাসে এলে পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমি রাজনীতির প্রেমে পড়ে গেছি।’
২০১৬ সালে ৩৬ বছর বয়সী এই নারী তার নিজ অঙ্গরাজ্য মিডওয়েস্টার্নের একটি আসনে জয়লাভ করেন। সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সোমালী বাস করে।
অন্যদিকে ফিলিস্তিন অভিবাসী বাবা-মার সন্তান ডেট্রোয়েটে জন্মগ্রহণকারী রশিদা তাইব একটি হাউসের আসনে বাধাহীনভাবে জয়লাভ করেছেন। তিনি একজন সমাজ কর্মী। মিশিগানের ১৩তম কংগ্রেশনাল ডিসট্রিক্ট থেকে লড়েছেন ফিলিস্তিনি-আমেরিকান তিলাইব।
তাইব ডেট্রোইটে জন্মগ্রহণ করেছেন ও বেড়ে উঠেছেন। তিনি তার বাবা মায়ের ১৪ সন্তানের মধ্যে সবার বড়।
২০০৮ সালে তিনি প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে মিশিগান রাজ্যের আইনসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালে তিনি প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে মিশিগান রাজ্যের আইনসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
৪২ বছর বয়সী এই নারী নিজেকে শ্রমিক শ্রেনীর বিজয়ী ও ট্রাম্পের কট্টর বিরোধী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ডেট্রোয়েটে তিনি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জোরালো বক্তৃতা দেন।
তাইব আগস্ট মাসে আফ্রিকান আমেরিকান অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রাথমিক নির্বাচনে জয়লাভ করেন।
তাইব ও ওমর দুজনেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকান পার্টির বিরোধী পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তারা ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির বিরোধিতা করছেন, তারা সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা পদ্ধতিকে সমর্থন দিচ্ছেন। রিপাবলিকানরা এই পদ্ধতির বিরোধী। এছাড়াও তারা অভিবাসন ও সীমান্তে যে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে তার বিলুপ্তি চান।
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে যখন মুসলিম বিরোধী মনোভাব তুঙ্গে, ঠিক সেই মুহূর্তে এই নির্বাচনী মাইলফলক হতে যাচ্ছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) জানিয়েছে, ২০১৮ সালের প্রথম ছয় মাসে মুসলিম বিরোধী ঘৃণাজনিত অপরাধ ২১ শতাংশ বেড়েছে।
ট্রাম্প আমলে বর্ণ ও নারী অধিকার এবং ক্ষমতায়নের বিষয়টি ডেমোক্র্যাটদের জন্য একটি অন্যতম প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই দুই নারী যেন তারই প্রতিচ্ছবি।
সৌজন্যে: বিবি নিউজ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন