বাংলাদেশ বার্তা : ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধের ১২তম দিনেও অচল রয়েছে গোটা দেশ। গতকাল শনিবার অবরোধ চলাকালে ঢাকা মহানগরী, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, কুষ্টিয়া, পাবনা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, রংপুর, বগুড়া, যশোর, ঝিনাইদহ, দিনাজপুর, লক্ষ্মীপুর, সাতক্ষীরা, সিলেট, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গণগ্রেফতার অভিযান চালিয়ে ২০ দলীয় জোটের প্রায় তিন শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেফতার করেছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। অবরোধের সমর্থনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মিছিল সমাবেশ হয়েছে।
২০ দলীয় জোটের ডাকে ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবসের কর্মসূচি পালন করতে না দেয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে গত ৬ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। ৫ জানুয়ারির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সরকার একদিন আগে থেকেই সারাদেশে সড়ক ও নৌপথে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। সভা সমাবেশ বন্ধ করে। বেগম জিয়াকে তার ২ দিন আগে থেকেই তার গুলশানস্থ অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখে।
উত্তরা : রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার ফুজি টাওয়ারের বিপরীতের সড়কের ওপর ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে কে বা কারা। শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে সড়কের ওপর এ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ খোঁজ খবর নিলেও কাউকে আটক করেত পারেনি। এর আগে সকালের দিকে উত্তরার মিছিল ও রাস্তা অবরোধ করে বাংলাদেশ ইসলমী ছাত্রশিবির। এ সময় তারা মিছিল, শ্লোগানের মাধ্যমে প্রায় ২০ মিনিট রাস্তা অবরোধ করে রাখে। এতে রাস্তায় রিকশাসহ সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
মিরপুর : গতকাল কাফরুল থানাধীন মিরপুর ১৩ নম্বর এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেয় কে বা কারা। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই বাস শ্রমিকরা আগুন নিভিয়ে ফেলে। ফায়ার কর্মকর্তারা বিষয়টি স্বীকার করলেও থানা পুলিশ তা অস্বীকার করে। রাজধানীর দারুসসালাম থানাধীন টেকনিক্যাল মোড়ে একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে শনিবার বিকেল ৫টার দিকে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে কে বা কারা। এতে বাসটিতে আগুন ধরে যায়। তবে দারুসসালাম থানার ওসি রফিকুল ইসলাম পেট্রোল বোমার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সামান্য অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
গাবতলী : টার্মিনাল থেকে গাড়ি ছাড়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রচ- চাপ থাকা সত্ত্বেও গাবতলী থেকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি। একাধিক গাড়ির মালিক জানান, সরকারের কথায় ভরসা করতে পারছেন না তারা। কারণ একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হলে ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারের পেছনে পেছনে ঘুরার সময় নেই গাড়ির মালিকদের। বরং রাজনৈতিক অচলবস্থা নিরসনে সরকারের এগিয়ে আসাকে স্বাগত জানাতে চান তারা। এছাড়া আগারগাঁও মিরপুর-১, সনি সিনেমার হলের সামনের গোলচক্কর, মিরপুর ১০ নং গোলচক্কর, কাজীপাড়া শেওরাপাড়ার রাস্তা ছিল রিকশা, টেম্পু এবং ঠেলাগাড়ির দখলে।
মহাখালী : গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় ঢাকা ময়মনসিংহ রোডে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীশূন্য দু’একটি বাস ছেড়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো বাসে দু-একজন যাত্রী থাকলেও তাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ছাপ। তবে বাসের হেলপার অভয় দিচ্ছেন ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে কেউ গাড়িতে আগুন দেয় না। কিন্তু হেলপারের এই অভয় বাণীতে সন্তুষ্ট নয় ওই যাত্রী। টার্মিনাল থেকে গাড়িতে ওঠলেও কিছুদূর গিয়ে বাস থেকে নেমে যান শেরপুরের সালেহা। নামতে নামতে বলেন, বাড়ি যাওয়ার চেয়ে জীবনের দাম অনেক বেশি।
উৎসঃ -সংগ্রাম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন