বাংলাদেশ বার্তা: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষপদে আসীনরা এখন আইন-কানুন এবং কর্তব্যের সীমারেখা মেনে চলারও ধার ধারছে না মন্তব্য করে ২০ দলীয় জোট বলেছে, দলবাজ এসব শীর্ষ কর্তারা বিরোধীদলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক এজেন্ডার পক্ষে কাজ করছে। পুলিশের আইজি, বিজিবি মহাপরিচালক এবং র্যাবের ডিজি রীতিমত রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন। কাজেই এ ধরনের দলবাজ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সন্ত্রাস ও নাশকতা রোধে কোনো নিরপেক্ষ ভূমিকা আশা করা যায় না। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান কর্তৃক ২০ দলের পক্ষে স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব মন্তব্য করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ, সহিংসতা বন্ধ এবং বিরোধী দল ও জনগণের মৌলিক মানবিক অধিকার রক্ষার আহ্বান জানিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে তার প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আমরা এটিকে স্বাগতঃ জানাই। সমস্যাটি যে রাজনৈতিক এবং বিরোধী দলের কর্মসূচি পালনে ক্ষমতাসীনদের বাধা প্রদান ও নির্যাতন থেকে উদ্ভূত তারা তা অনুধাবন করেছেন।
তবে সহিংস ঘটনাবলীর নিরপেক্ষ ও কার্যকর তদন্তের যে আহ্বান ক্ষমতাসীনদের প্রতি জানানো হয়েছে, সে ব্যাপারে আমাদের এবং বাংলাদেশের জনগণের সংশয় রয়েছে। কারণ, ভোটার-বর্জিত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনী প্রহসনে ক্ষমতা জবরদখলকারীরা প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহ ও তদন্ত প্রক্রিয়াসহ সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রথা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চরম দলীয়করণের মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতা রক্ষার হাতিয়ারে পরিণত করেছে। এদের মাধ্যমে কোনো নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও কার্যকর তদন্ত সম্ভব নয়। কাজেই রিয়াজ রহমানসহ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের ওপর গুলী ও বোমা হামলা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর প্রহরাধীনে চলাচলরত যানবাহনে রহস্যজনক হামলায় মানুষ পুড়িয়ে মারার মত নৃশংস ঘটনাবলীর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এদের দ্বারা সম্ভব নয়। এমন পৈশাচিক কার্যকলাপ অতীতে আন্দোলনের নামে তারাই করেছে, বর্তমানে যারা ক্ষমতাসীন। সাম্প্রতিক কালে তাদের দলভুক্ত সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন স্থানে ঘটনাস্থলে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলী, বোমাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হলেও তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আর মিথ্যা মামলায় বাড়ি-ঘরে হানা দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে নির্যাতন, গুম ও হত্যা করা হচ্ছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের স্থাবর অস্থাবর সম্পদ ধ্বংস এবং পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষপদে এমন সব চরম দলবাজ লোকদের বসানো হয়েছে যে, তারা এখন আইন-কানুন এবং তাদের আওতা, পরিধি ও কর্তব্যের সীমারেখা মেনে চলারও ধার ধারছে না। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত শুক্রবার রংপুর জেলার মিঠাপুকুরে পুলিশের আইজি ও র্যাবের ডিজি জনসভায় রাজনীতিবিদদের ভাষণ দেয়ার মত করে রীতিমত রাজনৈতিক বক্তব্য দিেেছন। তারা বিরোধী দল ও জনগণকে কঠোর ভাষায় হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন। দেশে জাতীয় নির্বাচন কখন হবে না হবে সে ব্যাপারেও তারা মন্তব্য করেছেন। আন্দোলনকারীদের জীবননাশের হুমকি দিয়ে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করার কথা বলেছেন। বিরোধী দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে তারা ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক এজেন্ডার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।
উৎসঃ দৈনিক সংগ্রাম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন