উদার গণতন্ত্রের সৌন্দর্য কিংবা সরকার পরিবর্তনের উপকারিতা বিভিন্ন মনীষি বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করে গেছেন। তন্মধ্যে মার্ক টোয়েনের সরস মন্তব্যটি অন্য সকলকে ছাড়িয়ে গেছে । তিনি বলেছেন, Politicians and diapers must be changed often, and for the same reason.
মনে হচ্ছে কারও প্রতি ক্ষেপে গিয়ে ভদ্রলোক এই সুন্দর কথাটি এত অসুন্দর করে বলেছিলেন। অনুমিত হয় যে সমসাময়িক বিশ্বের কোথাও তখন মাহফুজ আনামের মত কিছু সম্পাদক কিংবা জাফর ইকবালদের মত কিছু বুদ্ধিজীবী বর্তমান কিসিমের বুদ্ধিবৃত্তিক উপদ্রব শুরু করেছিল। বেচারা মার্ক টোয়েন মনের দুঃখে (আমাদের বর্তমান কষ্টের মতো কোন কষ্টে পড়ে) কথা কয়টি উচ্চারন করেছিলেন।
সেই সব মতলববাজদের হাত থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে তাকে এত কঠিন করে এই কথাটি বলতে হয়েছিল। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার কথাটি আরো বেশি এপ্রোপ্রিয়েট মনে হচ্ছে।
অাগুনে পুড়ে যে সব মানুষ আহত হয়ে কাতরাচ্ছে এটা দেখে যে কোন বিবেকবান মানুষই মর্ম যাতনায় পড়ে যাবেন । কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকার এবং মতলববাজ মিডিয়া পুরো ঘটনার একটি খন্ডিত চিত্র প্রদর্শন করে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতির অসহায় শিকার এই মানুষগুলিকে নিয়ে মতলববাজি প্রচারনা শুরু হয়েছে। মানবতার প্রতি এই মতলববাজদের আসলে কোন দরদ নেই। মানুষের দৃষ্টি ও মনোযোগকে অন্যদিকে সরিয়ে নেয়ার জন্যেই তাদের এই মায়াকান্না। এই অসহায় মানুষগুলির জন্যে যদি এদের আসলেই দরদ থাকতো তবে এরা এই সব ঘটনার পেছনের Root cause analysis করতো বা মূল কারনগুলি নির্ণয়ের চেষ্টা করতো।
আমরা জানি শত শত দিন এই ধরনের সহিংস হরতাল এবং জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের মাধ্যমেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল । এখন প্রশ্ন, সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে এক তরফাভাবে বাতিল করে জাতিকে বর্তমান অবস্থায় পুনরায় কে বা কারা ঠেলে দিয়েছে ? বার বার এই কষ্টদায়ক স্টার্টিং ফ্রম জিরো খেলাটি কারা শুরু করেছে ? এখানে মূল কালপ্রিটটি আসলে কে?
এই প্রশ্নগুলির জবাব বের করতে পারলেই মানবতার প্রতি এই মাহফুজ আনামদের দরদের প্রকৃত রংটি স্পষ্ট হবে। এখন অসহায় এই মানুষগুলির দুঃখ কষ্ট বর্ণনা করে দেশের গণতন্ত্রকে চিরদিনের জন্যে কবর দিতে চায় এই সব মতলববাজ সুশীলের দল। তারা অনেক কিছু ইনিয়ে বিনিয়ে বললেও যে কথাটি বলেন না তাহলো, কোন তরিকায় বর্তমানের এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরিবর্তন করা সম্ভব হবে ?
এই মাহফুজ আনামরা সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরনের বিরুদ্ধে না দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্যে আন্দোলনরত দলগুলিকে কিভাবে জব্দ করা যায় সারাক্ষণ সেই ফন্দি ফিকির করে বেড়াচ্ছে। এরা জাতির বিবেক নহে - এরা বাকশালের বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক ফ্রন্ট।
গত ছয় সাত বছর শীতনিদ্রায় কাটিয়ে এখন বলতে চাচ্ছে, দুটি দলই যেহেতু খারাপ কাজেই বর্তমান সরকারই টিকে থাকুক না কেন। আমাদের গণতন্ত্রের দরকার নেই। আমাদের উন্নয়ন দরকার। তবে এই ধরনের কথা বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে এরা কখনই বলতেন না। কাজেই বর্তমান সরকারের সকল কুকর্মের মূল মদদ দাতা হলেন এরা । গণতন্ত্রের এই সব শত্রুদেরকে চিহ্নিত করে রাখা দরকার। এই সব মতলববাজদেরকে জনগণের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া দরকার।
গত এক বছর যখন বিশ দলীয় জোট কোনরূপ অান্দোলন না করে সরকারকে সময় দিয়েছে তখন এই মতলববাজ গোষ্ঠী এটাকে বিএনপির হেডমের অভাব বলে টিটকারী দিয়েছে। এখন সরকার পতনের ডাক দেওয়ায় তান্ডব তান্ডব বলে চিৎকার শুরু করে দিয়েছে।
বাকশালের ডায়পারের গন্ধে জাতির দম বন্ধ হয়ে আসছে। আর এই মাহফুজ আনামরা সেই ডায়পারের গন্ধ লুকাতে এখন এয়ার ফ্রেশনার স্প্রে করছে।
জানি না মাহফুজ আনাম ও জাফর ইকবালদের স্প্রে করা এয়ার ফ্রেশনার কতক্ষণ এই বাকশালের গন্ধ লুকাতে পারবে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন