গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীর মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোট ঘোষিত দেশব্যাপী অবরোধ অব্যাহত রেখে আগামীকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টার হরতালসহ সকল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গতকাল শুক্রবার বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুঃশাসনে দেশের জনগণ অতিষ্ঠ। স্বৈরাচারী সরকারের কোন গণভিত্তি নেই। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আওয়ামী ক্যাডার বাহিনীকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে জনগণকে আতঙ্কিত করে পাশবিক শক্তির জোরে ক্ষমতায় থাকার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। দেশের জনগণ সরকারের অবৈধভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার খায়েস কখনো পূরণ করতে দিবে না।
তিনি বলেন, সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা একদিকে গুলী করে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে। অন্যদিকে ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটতরাজ করে গ্রামে-গঞ্জে ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহল সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ করে সংলাপের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট রাজনৈতিকভাবে সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো সত্ত্বেও তাতে কর্ণপাত না করে সরকার নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দেশকে ধ্বংসের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বে পরিচালিত জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিবর্গ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অসত্য বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ‘বিএনপি-জামায়াত ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠেছে’ মর্মে যে অসত্য মন্তব্য করেছেন তিনি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ঐ বক্তব্য তিনি এবং তার সরকার ও দলের ব্যাপারেই একশত ভাগ প্রযোজ্য। তাদের একগুঁয়েমি ও হঠকারিতার কারণেই দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে। তাদের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে, যে কারণে তিনি ও তার সরকার নির্বাচনকে যমের মত ভয় পেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা শুনলে আতঙ্কে আঁতকে উঠেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে হত্যা, সন্ত্রাস ও ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করা বন্ধ করে সরকারের উচিত অবিলম্বে পদত্যাগ করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম করা।
তিনি আরো বলেন, সরকার ২০ দলীয় জোটের আন্দোলন বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে গতকালও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে রাজধানী ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোটের প্রায় দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আছেন ময়মনসিংহের ত্রিশালের কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সেক্রেটারি হোসাইন কুতুবী। এভাবে গণহারে গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে কখনো জনতার আন্দোলন দমন করা যাবে না।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীর মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোট ঘোষিত দেশব্যাপী অবরোধ অব্যাহত রেখে আগামীকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টার হরতালসহ সকল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন