০৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৫: অবৈধ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। গণামধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানান। অবৈধ ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রধানমন্ত্রী উন্মাদ হয়ে গেছেন মন্তব্য করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, উচ্চ আদালত কর্তৃক ‘রংহেডেড’ উপাধিপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা অন্যকে উন্মাদ অভিহিত করা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত ও ‘পাগলের আপন প্রলাপ’ বলে জাতি মনে করে। এ জাতীয় বাক্যবাণ প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা তাকে সবিনয়ে আহবান জানাই। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির দায় সম্পূর্ণভাবে অবৈধ ক্ষমতাসীনদেরকেই নিতে হবে। ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে জবরদস্তি ক্ষমতায় থাকার স্বপ্নসাধ গণআন্দোলনে ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে শিগগিরই। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বুদ্ধিবৃত্তিক আলস্য বা প্রতিবন্ধিত্বের কারণে আওয়ামী লীগ নেত্রীর নিজের সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকটকে আইনশৃঙ্খলা সমস্যা হিসাবে আখ্যায়িত করাকে জাতি প্রধানমন্ত্রীর মানসিক বৈকল্য ছাড়া আর কিছুই মনে করে না। তিনি ইদানীং প্রায়ই বলে থাকেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য যা যা করার দরকার তিনি তাই করবেন। সমগ্র জাতি আজ আপনার ও আপনার সরকারের পদত্যাগ চায়। আপনি দয়া করে এই কাজটি করলেই জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, গণবাহিনীর সাবেক অধিনায়ক হটকারী বিপ্লবী ইনু সাহেবরা মুজিব হত্যার স্বঘোষিত পরিকল্পনাকারী ও মুজিব হত্যার পরবর্তীতে মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে নৃত্য উল্লাস করে বর্তমানে মুজিব ভক্তের খাতায় নাম লিখিয়েছেন। এজাতীয় রাজনৈতিক বারবনিতা ও দানবের কাছে জাতি মানবীয় শবক শুনতে চায় না। আপনার সারমেয় বাক্যবাণ বন্ধ করুন, জাতির কাছে অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার গণতন্ত্রে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের ফুটপাথেও বসার অধিকার নেই। ভিন্নমত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে দলননীতি অবলম্বন করাই আওয়ামী রাজনীতির রোডম্যাপ। জাতির বরেণ্য এবং জ্যেষ্ঠ নাগরিকদেরকে উপুর্যপরি অবজ্ঞা ও অপমান করেছে আওয়ামী লীগ নেত্রী । নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অসম্মান ও অপদস্থ করে বিশ্বের দরবারে দেশকে অপমানিত করা হয়েছে। সম্প্রতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বরেণ্য নাগরিক প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদের বাসায় গুলি বর্ষণের ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আহবান জানাই। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার পেট্রল বোমা হামলাসহ বিভিন্ন নাশকতার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারবিরোধী গণআন্দোলনকে কলুষিত করে বিরোধী জোটের নেতা-কর্মীদের ওপর এর দায় চাপিয়ে আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চায়। সরকার পরিচালিত ও প্রযোজিত একই রকম নাটকের অংশ হিসেবে গতকাল চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার যুবলীগের কার্যালয় থেকে বিপুল পরিমাণ পেট্রল বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। যার সচিত্র প্রতিবেদন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অথচ সরকারদলীয় কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। সুতরাং জাতির কাছে এটা পরিষ্কার যে, এসব নাশকতার সঙ্গে কারা জড়িত। তিনি বলেন, প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় দলবাজ কর্মকর্তার নৃশংসতায় আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের লাশের স্তূপ উঁচু হচ্ছে। গুম-খুন-অপহরণ, গণগ্রেপ্তারে সারা দেশের অবস্থা বিস্ফোরন্মুখ। আমি এখনও দলবাজ সেইসব কর্মকর্তাদের আহবান জানাই- অবৈধ সরকারকে টিকিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করবেন না। অবৈধ সরকারি আদেশ আপনারা মানতে বাধ্য নন। জনগণের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে নিজেদের দাঁড় করাবেন না। বিজাতীয় শত্রুর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন না। তিনি বলেন, গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান অনির্দিষ্টকালের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি চলমান সর্বাত্মক হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। গণবিরোধী অবৈধ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
উৎসঃঢাকার নিউজ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন