ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বৃহস্পতিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

কৃষকদের মানববন্ধন ‘জান দেব তবু জমি দেব না’

১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৫: কুষ্টিয়ায় প্রায় ১৬ একরেরও বেশি তিন ফসলী কৃষি জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ৫ গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক কৃষক। ক্ষুদ্ধ কৃষকরা বলছেন ”জান দেব তবু জমি দেবো না”। তারা মৃত্যুকে তুচ্ছ জ্ঞান করে তাদের বাপ-দাদার পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষায় অনড়। ক্ষুদ্ধ কৃষকরা গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কালক্টরেট চত্বরের সামনে মানববন্ধন করে তাদের অধিকার বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।
জানা গেছে, কুষ্টিয়া শহরতলীতে অবস্থিত বিআরবি কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সম্প্রসারণের জন্য ১০ দশমিক ৭৪ একর, এমআরএস ইন্ডাস্ট্রিজের জন্য ৩ দশমিক ৬৩ একর এবং বিআরবি এনার্জি লিমিটেডের জন্য ১ দশমিক ৬৮ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করে। একই গ্রুপের কিয়াম-ছিরাতুন্নেছা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ছিরাতুন্নেছা মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের জন্য কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস মৌজায় জেলা প্রশাসনের নোটিফাইড এলাকায় ব্যক্তি মালিকানার ২ দশমিক ২২ একর এবং আরও দশমিক ০৩ একর সর্ব মোট ১৬ দশমিক ০৬২৭ একর জমি অধিগ্রহণের আবেদন করে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিক তার কার্যালয়ের ০০.৩১৩.০০৬.০০.৩৪.০৩৩.২০১২/৫৪ যুক্ত স্মারকে তিন ফসলী কৃষি জমির বিষয়টি গোপন করে ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল বিআরবি গ্রুপের অনুকূলে উক্ত জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সচিব ভূমি মন্ত্রণালয় বরাবর সুপারিশ করেন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কুমারগাড়া, জগতি, বটতৈল, টাকিমারা ও চৌড়হাস এলাকার প্রায় দুই শতাধিক কৃষকের অভিযোগ তৎকালীন জেলা প্রশাসক বিআরবি গ্রুপের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে প্রায় ১৬ একরেরও বেশি তিন ফসলী জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব অনুমোদন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার বর্তমান
জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন জানান, তৎকালীন জেলা প্রশাসকের সময় এই জমি অধিগ্রহণের সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে তার কোন মতামত জানতে চাওয়া হয়নি। ফসলী জমি উল্লেখ করে ৪৩ জন কৃষক ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসনের কাছে তাদের আপত্তি জানিয়েছে। শুনানী শেষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামত পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে সেটিই চুড়ান্ত বলে গণ্য হবে বলে জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেন। কৃষক নেতা মনোয়ার হোসেন খোকন জানান, দেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্য ঘাটতি পূরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার যেখানে কঠোর ভাবে আইন করে অতি উর্বর ও তিন ফসলী “কৃষি জমি সুরক্ষা আইন-২০১১” তৈরী করে তার বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে। সেখানে সেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্ব ও কর্তব্যরত কর্তৃপক্ষই প্রকৃত চিত্র’কে আড়াল করে অসত্য সম্ভাব্যতার ব্যাখ্যা (প্রস্তাব)’র ভিত্তিতে ভুমি অধিগ্রহণ ও বরাদ্দ সংক্রান্ত ভূমি মন্ত্রনালয়ের কমিটি কর্তৃক অনুমোদন নিয়ে কৃষি জমি অধিগ্রহণের নোটিশ জারি করায় তারা বিস্মৃত।
সদর উপজেলার জগতি গ্রামের কৃষক জুমারত আলী (৬৫) বলেন, কুষ্টিয়া জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণের স্বার্থে ইতোপূর্বে আমরা চাষযোগ্য তিন ফসলী কৃষি জমির সিংহ ভাগই অধিগ্রহণের আওতায় ছেড়ে দিয়েছি। এখন যে যৎসামান্য জমি আছে সেটা চাষ বাস করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছি। কিন্তুকোন কিছু বিবেচনা না করে বাঁকি জমি টুকুও ছিনিয়ে নেয়ার নোটিশ দেয়া হয়েছে। এই জমিটুকু না থাকলে সবাইকে নিয়ে পথে বসা ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না। তিনি বলেন, আমরা জান (জীবন) দেব তবু জমি দেব না।
মজমপুর গ্রামের দু:খী মিয়া’র ছেলে ইয়াছিন আলী (৫০), জানান, আমাদের পরিবার পরিজনদের জীবিকা
নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন তিন ফসলী আবাদি জমি টুকু কেড়ে নিয়ে বিআরবি গ্রুপের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। আমরা এটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারিনা। মজমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বশিরুল আলম চাঁদ এ জানান, একটা অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্পকারখানা গড়ে উঠা দরকার; সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জমি সংগ্রহ করতে একদিকে জমির প্রকৃত মালিক বা কৃষকও যেন সঠিক দামটা পায় সেদিকে নজর রাখা দরকার। সেটা না করে কেবলমাত্র সরকারী হস্তক্ষেপে কম মূল্যে জমি কিনলে কৃষকরা প্রতারিত ও ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয় আবার জমি হারিয়ে বিকল্প পূনর্বাসনেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সেকারণে সব দিকেই নজর রাখা উচিৎ বিশেষ করে কৃষকের দিকটা বেশী গুরুত্ব দেয়া দরকার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক কিংকর চন্দ্র দাস জানান, যে সব জমিতে কৃষি পন্য উৎপাদনে প্রদর্শনী সাইন বোর্ড লাগিয়ে ও কৃষকদের উৎসাহিত করতে নানাভাবে সহযোগিতা করা হয়; সে সকল জমি গুলি অবশ্যই কৃষি জমির শ্রেনীতে পড়বে এবং তা সুরক্ষা আইন দ্বারা রক্ষিত হবে। জেলা আাইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাড. হারুন অর রশিদ জানান, সরকার প্রজাতন্ত্রের প্রয়োজনে যে কোন ভুমি অধিগ্রহণ করতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে ভুমি অধিগ্রহনের শর্ত ও বিধির প্রযোজ্যতা যাচায় করেই তা করবে। নির্দিষ্ট ভুমি জোনিং এবং “কৃষি জমি সুরক্ষা ও ভুমি ব্যবহার আইন-২০১৪”র নির্দেশিত বিধানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন এই আইনের ৪(১)’র ক,খ,গ ও ঘ উপধারায় বলা আছে- বাংলাদেশের সকল কৃষি জমি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জমির ব্যবহার ভিত্তিক শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না। এক বা একাধিক ফসলী যাহাই হোক না কেন তাহা কৃষি জমি হিসেবেই ব্যবহার করতে হবে; কৃষি জমি নষ্ট করে ঘরবাড়ি, শিল্প-কারখানা, ইটের ভাটা এমনকি সরকারী-বেসরকারী অফিস ভবন, বাসস্থান, কোন ধরণের অবকাঠামো নির্মাণ বা অন্য কোন অকৃষি খাতে ব্যবহার করা যাবে না; অর্থাৎ কোন অবস্থাতেই উর্বর দুই বা তিন
ফসলি জমিতে এইরূপ কোন স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেয়া যাবে না। এই আইনের ব্যত্যয় ঘটলে বা কেউ অমান্য করে লংঘন করলে সেই প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ কিংবা সহায়তা দানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণের অনুর্ধ্ব দুই বছর কারাদন্ড বা নূন্যতম ৫০ হাজার টাকা হইতে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। উৎসঃ ঢাকার নিউজ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন