সত্যিই অবাক বিস্ময়ে চেয়ে দেখি আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে। যেখানে,শকুনেরা খুবলে খাচ্ছে যথায় তথায় পড়ে থাকা মানুষের লাশ,বাসা থেকে বাইরে বের হবার পর কেউ জানে না সে ফিরে আসবে কিনা? আপন জনেরা এক অনিশ্চয়তা ও উদ্বিগ্নতা নিয়ে দিনাতিপাত করছে, মানবতা ভূলুন্ঠিত হচ্ছে প্রতিটি মুহুর্তে, উন্নয়নের রাজনীতির নামে জনগন এ কোন ডিজিটাল বাংলাদেশকে দেখছে? প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলেপুড়ে খাক হচ্ছে দেশ, সমস্ত জনপদের মানুষ। এখানে মানুষের জীবনের যেন কোন মূল্য নেই,বর্তমান সরকার প্রধানের প্রশ্রয়ে ও নির্দেশে বিরোধী দল-মত-কে দমনের নামে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অতি উৎসাহী হাতেগোনা সদস্যদের বিবেকহীন কর্মকান্ডের মাধ্যমে এরা মানুষ বধ করছে নির্দয় হায়ানাদের মতো,যেভাবে হায়ানারা বধ করে নিজের দলের দূর্বল ও রুগ্ন পশুটাকে;এরা এখন রক্ষক সেজে ভক্ষক হয়েছে। দেশে যেন আজকাল অঘোষিত যুদ্ধ চলছে,বিরোধী দলের অতি সাধারন ওয়ার্ড লেভেলের নেতা থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রে দলের নিরীহ সমর্থককেও কতিপয় অন্ধ এবং বিভ্রান্ত পুলিশ কর্মকর্তারা গ্রেফতারের নাটক সাজিয়ে গুম ও ক্রসফায়ারের নামে এদের ঢালাওভাবে হত্যা করছে এবং বিভিন্ন মিথ্যা পেইন্ডিং মামলা, পেট্রোল বোমা, অসংখ্য হামলা-মামলা এবং বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরকে হুকুমের আসামী ও রিমাইন্ডের নামে বিভিন্ন নতুন নতুন প্রক্রিয়ায় হয়রাণি করা হচ্ছে; যা কোন বিবেকবান দেশপ্রেমিক মানুষের পক্ষে কখনো মেনে নেয়া সসম্ভব নয়। গ্রেফতার বানিজ্যের নামে অতি নিরীহ জনগনকে প্রতিনিয়ত ঢালাওভাবে আইন শৃংখলা বাহিনীর একশ্রেণীর সদস্যদের হয়রাণির শিকার হয়ে জেল-জুলুম, হুলিয়া, হামলা, মামলা এবং নির্যাতনের মাধ্যমে সর্বশান্ত হতে হচ্ছে; এমনকি তাদের প্রতি ধার্যকৃত টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করতে পারলে সে ক্ষেত্রে অনেককেই ক্রসফায়ার দেয়া হচ্ছে, অন্যদের নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করার পর ছেড়ে দেয়া হচ্ছে এবং বাকীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। গত ছয় বছর ধরে এরা যুদ্ধপরাধী,জঙ্গীবাদ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের নামে শাহাবাগের গনজাগরণ মঞ্চ এবং প্রতিদিনই জনগন দৈনিক পত্রিকা ও ইলেকট্রিক মিডিয়াতে যেই পরিমান জেএমবি, হিজবুত তাহরির এবং বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর গ্রেফতারের ক্রমাগত মিথ্যাচারের নাটক সাজিয়ে বর্তমান সরকার তা নিয়ে নিত্যে নতুন খেলা খেলছে ; এবার দেখছি আন্দোলন ও পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যার নামে এর আড়ালে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার, বিএনপি এবং বিশ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীকে হত্যার যে মহোৎসব শুরু করেছে এর শেষ কোথায় তাও এই দেশের জনগন আজকাল সবই বুঝতে পারছে। এখানে সবচেয়ে অবাক বিষ্ময়কর ব্যপার হলো, বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার যখন পুলিশ কতৃক সরকার দলীয় নেতা-কর্মীকে হাতেনাতে পেট্রোল বোমা সহ গ্রেফতারের পরও সরকার দলীয় বিভিন্ন পর্যায়ের প্রভাবশালী এমপি, মন্তীদের হস্তক্ষেপে তাদের ছেড়ে দেয়ার পরও, এমনকি এদের নিজেদের অফিসে বোমা বানাতে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতার মৃত্যু এবং সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ার পরেও পুলিশ এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে জনমনে শংকা জাগে, আসলে বর্তমান সরকার নিজ দলীয় নেতা কর্মীদেরকে ব্যবহার করে শাহবাগের গনজাগরণ মঞ্চের আদলে মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটকে বিএনপি ও বিশ দলীয় জোটের নেতা কর্মীদেরকে নির্মমভাবে দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় ক্রমাগত একটি খবর এদেশের সকল বিবেকবান মানুষকেই ভাবিয়ে তুলেছে, সেটি হলো বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় পল্টনের অফিসটিতে অলরেডি তালাবন্ধ আছে এবং দলীয় চেয়ারপার্সন এর গুলশান অফিসের মধ্যে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং উনার সাথে অবস্থানরত সর্বসাকুল্য প্রায় পঞ্চাশ জন নেতা কর্মী,অফিস স্টাফ,নিরাপত্তা কর্মকর্তা,কর্মচারীদের খাবার ও নাস্তা সরবরাহে বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা দেখে বর্তমান সরকারের অরাজনৈতিক আচরন, নীতিহীন, মানুষ হত্যা ও বিরোধী পক্ষকে নির্মূলের নামে যে অসুস্থ রাজনীতির ধারা বর্তমান সরকার চালু করেছে, তা যে কোন বিবেকবান মানুষ কখনোই সমর্থন করতে পারে না। আজকের টেলিভিশনের পর্দায় আমাদের দেশের একজন বিশিষ্ট স্বনামধন্য আইনজীবী জনাব রফিকুল হক সরকারের এহেন বিবেকহীন আচরণের কঠোর সমালোচনা করেছেন, এমনকি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর একটি বক্তব্য অনেকেরই বিবেককে আহত করবে -বিশেষ করে বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুলশান অফিসের খাবার নিয়ে সরকারের বাধা ও নির্দয় আচরন এবং কারবালার এজিদ বাহিনী কতৃক নবী দৌহিত্র ইমাম হোসেন ও রাসুল (স.)
এর আহলে বাইয়াতকে ফোরাতের পানি পানে বাধা দানের নির্মমতাকেও হার মানিয়েছে। বন্দি মানুষের সাথে এহেন আচরন আল্লাহ্ পাক প্রদত যে সকল এমেনেষ্টি - সূর্যের আলো, পানি, বাতাস এমনি বেচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাবার এই সকল অধিকার কখনো কারো কার্টেল করা যায় না। এই জন্য জেলখানায় বন্দি একজন সাধারন আসামী থেকে শুরু করে, ফাঁসি এমনকি রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার আসামীর যেখানে থাকা,খাওয়া এবং চিকিৎসা পাওয়ার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে - সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশর বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী ও তিন তিনবারের সাবেক নির্বাচিত প্রধাণমন্ত্রীর প্রতি সরকারের সীমাহীন নিষ্ঠুর আচরন এবং পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যার সকল দায়ভার বিরোধী দলের নেতা কর্মীদেরকে নির্দয়ভাবে হত্যা ও নির্মূলের প্রচেষ্টা কখনো সফল হবে না এবং এর করুণ পরিণতি আমাদের কারোই অজানা নয় এবং যার সাথে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষই একমত হবেন বলে আমার বিশ্বাস। কিন্তু এদের শেষ রক্ষা হবে কি? নাকি পালাতে গিয়ে আলকায়দা নেতা কিংবা ফেরাউনের মতো মহাসমুদ্রে ডূবে গিয়ে এদের অনেকেরই করুণ পরিণতি বরণ করতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন