প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে এ মুহূর্তে নারী ছাড়া অন্য কোনো শ্রমিক নিচ্ছে না। সেখানে লোক পাঠাতে সরকার কোনো নিবন্ধন করেনি; আর করছেও না।
মঙ্গলবার রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনের সম্মেলন কেন্দ্রে সৌদি আরবে লোক পাঠানো নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব তাদের চাহিদাপত্র পাঠালে যেকোনো দেশের জন্য নিবন্ধনকৃতদের মধ্য থেকে বাছাই করে লোক পাঠানো হবে। প্রয়োজনে ফের নিবন্ধনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
জানুয়ারি মাসে আমার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সৌদি আরব সফর করলে তারা আমাদের জন্য শ্রমবাজার উন্মুক্ত করে দেয়। পরে ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরে আসে সৌদি প্রতিনিধি দল। তারা হাউসকিপিং, ড্রাইভিং, ক্লিনিং, গার্ডেনিং, কন্সট্রাকশনসহ ১২টি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে লোক নেওয়ার কথা জানায়। তবে এ মুহূর্তে শুধু হাউজকিপিংয়ের জন্য নারী শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে চুক্তি করেছে, যোগ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ এ মুহূর্তে সৌদি আরবে শুধু নারী শ্রমিক পাঠাতে পারবে। সৌদি সরকার বিনা খরচে সর্বনিম্ন ৮০০ রিয়াল বেতনে নারী শ্রমিক নেবে। আর অন্যান্য ক্ষেত্রে লোক নেওয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয় নি।
নিবন্ধনের বিষয়ে তিনি বলেন, সৌদি আরবের প্রতিনিধি দল যখন বাংলাদেশ সফরে আসে তখনই ডিজিটাল মেলা শুরু হয়। মেলা উপলক্ষে সাময়িক একটি প্যাভিলিয়ন খোলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। যেখানে সব দেশের জন্যই নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হয়। তবে মানুষ দুটি বিষয়কে একত্র করে ভুলে সৌদির জন্য নিবন্ধনের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।
তবে মূল কথা হলো সরকার সৌদির জন্য কোনো নিবন্ধন করেনি। নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। জেলা জনশক্তি অফিস, বিএমইটি, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল অফিসে সব সময়ই যেকোনো দেশের জন্য এ নিবন্ধন করা যাবে। সৌদির জন্য আলাদা কিছু করার দরকার নাই।
সাংবাদিকদেরে এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তিতে আমরা নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছি। এ ব্যাপারে সৌদির দূতাবাসে হটলাইন খোলা হবে। যে কেউ যেকোনো সময় দূতাবাসের সাহায্য নিতে পারবেন।
নারী শ্রমিকদের বেতন কম নির্ধারণ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সৌদি আরব যে বেতন নির্ধারণ করেছে তাতে আমরা খুশি নই। তারা একজন নারী শ্রমিকের জন্য মাত্র ১৭৫ ডলার বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছে। অনেক দর কষাকষির পর তা ২২০ ডলার তথা ৮০০ রিয়েল বা প্রায় ১৭ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠাতে সক্ষম হয়েছি। কেউ যদি এ বেতনে যেতে রাজী হয় তাহলে আমরা পাঠাবো। কাউকে জোর করে পাঠানো হবে না।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার, জনশক্তি রপ্তানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক বেগম শামসুন নাহার উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সৌদি আরব বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শ্রমবাজার। ২০০৮ সালে বাংলাদেশি শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করার পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে তা আবার উন্মুক্ত করে দেয়। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে সৌদি আরব প্রতিনিধি দল এসে ১২ ক্যাটাগরিতে লোক নেওয়ার ঘোষণা দিলে ও বিএমইটির পক্ষ থেকে নিবন্ধনের কথা বলা হলে নিবন্ধন কেন্দ্রে ভিড় করে লাখ লাখ মানুষ। উৎসঃ ফেইসবুক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন