ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শনিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

আওয়ামীলীগ পর্দানশীল নারীদেরকে আর কত অপমান কররে? ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম


গত ১৬ জুন খিলগাও এলাকার একটি বাসা থেকে ২৪ পর্দানশীল ছাত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের হাতে খাতা-কলম ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। এই ছাত্রীরা ঢাবি, বুয়েট, মেডিক্যাল সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। মায়ের জাতির এই অপমানে দেশ-বিদেশে তোলপাড়। তাদের প্রথম অপরাধ তারা দ্বীনি তালীমের জন্য এখানে একত্রিত হয়েছে যেটা এই সরকারের দৃষ্টিতে দন্ডনীয় অপরাধ। দ্বিতীয় অপরাধ তারা বোরকা পরে, আর শেখ হাসিনার বর্তমান শাসনামলে এটা জঘন্য অপরাধ। তৃতীয় অপরাধ- এই মেয়েগুলো ইসলামী ছাত্রসংস্থার নেতা-কমী, তারা ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার চেষ্টা করে। আওয়ামীলীগ ভারতীয় নষ্ট সংস্কৃতি উলঈপনা বেহায়াপনা কে লালন করছে আর বোরকার মধ্যে খুজছে নাশকতা, জঈী ইত্যাদি এই সরকারের গোটা শাসনামলতো তাই হয়েছে। তাদের লালিত পুলিশ-র‌্যাবকেও সেভাবেই তালিম দেয়া আছে। সুতরাং বোরকা নিয়ে নাটক সাজাতে এই সরকারের ডিজিটাল বাহিনীর খুব বেশী সময় লাগেনা। আর তাদের গৃহপালিত কিছু মিডিয়ার কাজতো তিল কে তাল বানিয়ে প্রচার করা। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে ছাত্রীসংস্থাতো কোন নিষিদ্ধ সংগঠন নয়? তাহলে ইসলামের কথা বলাই তাদেও অপরাধ? কিন্তু এই অপরাধ মহাগৌরবের। এই সৌভাগ্য সবার কপালে জোটেনা। আজকের আধুনিক জাহিলিয়াতের সময়ে আল-ইসলামের সাথে এই ছাত্রীগুলো নিজেদের সম্পৃত্ত করেছে। পর্দানশীল এই মেয়েরা দেশ জাতির সম্পদ। এরা হযরত সুমাইয়া (রা:) জয়নাব আল গাজালী, মিশরের শহীদ বেলতাগীর যোগ্য উত্তরসুরী। যে পিতা-মাতা এমন দ্বীনদার সন্তানদেও জন্মদিয়েছে তারা সত্যিই সৌভাগ্যবান। তাদেরকে অভিনন্দন।
মানব জাতির অর্ধেক ও গুরুত্বপূর্ন অংশ হলো নারী। তাদেরকে অবহেলা ও উপেক্ষা করে মানব সভ্যতার উন্নতি ও অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই পৃথিবীতে ইসলাম নারীকে সবচেয়ে বেশী অধিকার ও মর্যাদা দিয়েছে। নবী করিম (সাঃ) বলেছেন প্রথমে কন্যা সন্তান প্রশব করায় মায়ের সৌভাগ্য নিহিত আছে। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বর্ণনা করেছেন,এক ব্যাক্তি নবী করীম (সা:) এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন,হে আল্লাহর রাসূূল আমার কাছ থেকে সুন্দর আচরণের সবচেয়ে বেশি হকদার কে ? তিনি বললেন,তোমার মা। আগন্তুক জিজ্ঞেস করলেন ,এরপর কে ? তিনি বললেন, তোমার মা। পুনরায় উক্ত ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন,এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন,এরপর কে? নবী করীম (সা:) বললেন,তোমার পিতা। (বোখারী) পৃথিবীতে এমন কোন আমল নেই ,যে আমল করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অত্যান্ত দ্রুত অর্জন করা যায়। কিন্তু একমাত্র মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার এবং প্রাণভরে তার খেদমত করলে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি দ্রুত অর্জন করা যায়। সেই মায়ের জাতিকে সবচেয়ে অপমান, অপদস্ত করছে আওয়ামীলীগ। 
আওয়ামীলীগের আমলে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় নারী সমাজ বেশী নির্যাতিত,অপমানিত,অধিকার বন্চিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুখে নারীদের অধিকারের কথা বলেন, আর নিরাপরাধ,পরহেজগার,বোরকা পরা মেধাবী ছাত্রীদের গ্রেফতার করছেন অব্যাহত ভাবে। আওয়ামীলীগ বোরকাকে কত খারাপভাবে দেখে তার প্রমান ২০০৭ সালে প্রধানমন্ত্রী পুত্র জয় যুক্তরাষ্ট্রের এক ম্যাগাজিনে লিখেছিলেন, বাংলাদেশে আশঙ্কাজনক হারে ৪০০ গুণ বোরকার ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের।” বিদেশী একজন ব্যাক্তির সাথে তার যৌথ প্রবন্ধ নিয়ে সেই সময় অনেক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। সুতরাং এই সরকারের বোরকা বিরোধী মনোভাব বিভিন্ন সময় তাদেও বক্তব্য থেকে রেরিয়ে এসেছে। বোরকার প্রতি অনীহা প্রকাশ করে সরকারের ডেপুটি স্পিকার বললেন- ”কুৎসিত চেহারা ঢাকতেই মহিলারা বোরকা পরে। বর্তমানে বোরকার অধিক ব্যবহারে তিনি কষ্ট পেয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন। এছাড়াও মন্ত্রী আব্দুল লতিফ নিজেই বোরকা বিরোধী আন্দোলনের ডাক দেন। সরকারের সেই কমূসূচীর অংশহিসেবে এবার বোরখা পরা ছাত্রীদের আটক অভিযানে নেমেছে পুলিশ।
বিগত ৫ বছরে ভয়াবহ নারী নির্যাতন থেকে বাদ যায়নি ছাত্রী-শিক্ষিকা অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মানবাধিকার নেত্রীও; সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার পর্দানশীল নারীরা। এই সরকারের নারী নির্যাতনের চিত্র অনেক ভয়াবহ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার এবং দলীয় ক্যাডারদের মাধ্যমে নিত্যনতুন পৈশাচিক কায়দায় চালানো নির্যাতনের চিত্রগুলো অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বিশেষ করে জঙ্গি কর্মকান্ডের অপপ্রচার চালিয়ে ধর্মপ্রাণ নামাযী, বোরকাপরা ও ভিন্ন রাজনৈতিক মত ও আদর্শের কর্মী সমর্থকদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা ছিলো বেশি ভয়ংকর। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়াই নিরীহ নারীদেরকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের বহু ঘটনায় দেশ-বিদেশের বিবেকবান মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে এক্ষেত্রে সরকার ও তাদের মদদপুষ্ট মানবাধিকার এবং নারী সংগঠনগুলো ছিলো একেবারে নির্বিকার।
আওয়ামীলীগ বার বার বলছে তারা কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী ইসলাম বিরোধী কোন কাজ করবে না। কিন্তু পর্দা ইসলামের মৌলিক একটি ফরজ ইবাদত। সুতরাং বোরকা বিরোধী অভিযান কুরআন-সুন্নাহ ও মানবাধিকারের সবচেয়ে বড় লঈন নয় কি? প্রধানমন্ত্রী একজন মা হিসেবে কিছুসময়ের জন্য ভাবনু তো?। গভীর রাতে একজন মেয়েকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে হয়রানি কত জঘন্য? গ্রেফতার হওয়া এই মেয়েগুলোর বাবা-মা কত উদ্বিগ্ন সময় কাটাচ্ছে!! অনবরত চোখের পানি ফেলছে পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু মজলুমের চোখের পানি বৃথা যায়না। মজলুমের ফরিয়াদ আর আল্লাহর আরশের মাঝখানে কোন দেয়াল নেই। আল্লাহ তাদেও দোয়া কবুল করেন। সবচেয়ে মর্মান্তিক হলো মেয়েদের মধ্যে অন্ত:সত্বা নারী, দুগ্ধপান করা শিশু,পরীক্ষাথী থাকার পরও তাদেও মুক্তি দেয়া হচ্ছেনা। অচথ ফাসির দন্ডপ্রাপ্তদের খালাস দেয় এই সরকার। হায়রে! আইনের শাসন। হায়রে! বিচারের নামে প্রহনস। কত অমানবিক,জঘন্য আর কত ভয়ংকর রুপ ধারণ করেছে এই সরকার!! কোরআন শরীফ, ইসলামিক বই রাখা আর বোরকা পরার অপরাধে পুলিশ এই নিরীহ,নিরাপরাধ,পরহেজগার মেধাবী ছাত্রীদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়েছে। অবশ্য আদালত তা মন্জুর না জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। এটা এ জাতির জন্য কলঙ্কের, বেদনার ও লজ্জার। এই সৎ চরিত্রবান মেয়েদের সারা রাত আটক করে থানায় রেখেছে পুলিশ। জানা গেছে ঐ মেয়েগুলোর প্রত্যেকেই তাদের ডিপার্টমেন্টে ভালো রেজাল্টের অধিকারী। তাহলে ৯০% মুসলমানের দেশেও এই মেয়েগুলোর নামাজ পড়া, ইসলামী অনুশাসন মেনে চলা আর বোরকা পরা-ই কি একমাত্র অপরাধ?
সরকারের বোরকা বিরোধী অভিযানের কয়েকটি-
১.২০০৯ সালের ২৩ এপ্রিল বরিশালের নিউ সার্কুলার রোডের এক বাড়িতে র‌্যাব হানা দিয়ে বোরকা পরে ধর্মীয় শিক্ষার জন্য জড়ো হওয়ার অপরাধে ২১ নারীকে গ্রেফতার করে। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জঙ্গিসংশি¬ষ্টতার কোনো তথ্য না পেয়ে ২১পরহেজগার নারীকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতে চালান দেয়া হয়। ঘটনার দীর্ঘ ২মাস পর ২৩ জুন আদালত তাদের বেকসুর খালাস দেন।
২.২০০৯ সালের ১৯ জুন রাজশাহীতে জঙ্গি সন্দেহে ১৫ নারী ও শিশুকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুক্তি ঘোষণার পর আবার ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ১১ দিন কারাবাস শেষে আদালত তাদের বেকসুর খালাস দেয়।
৩.২০০৯ সালের ৩ জুলাই পিরোজপুর জেলার জিয়ানগরে ছাত্রলীগের বখাটে কর্মীদের প্ররোচনায়পুলিশ জঙ্গি সন্দেহে তিন তরুণীকে গ্রেফতার করে। তিন দিনের রিমান্ড তিন তরুণীকে ঢাকায় টিএফআই সেলে নিয়েআসা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অমর সিংহ তাদেরকে বোরকা খুলতে বাধ্য করে। তাদের মধ্যে একজনের বয়স ছিল সতর বছর।
৪.২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইডেন ও বদরুন্নেছা কলেজে বোরকাধারী ছাত্রীদের হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
৫.২০১০সালের ৩ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. একেএম শফিউল ইসলাম তার ক্লাসে ছাত্রীদের বোরকা পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তিনি ক্লাসে ‘মধ্যযুগীয়পোশাক বোরকা’ পরা যাবে না এবং এটি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কোনো পোশাক হতে পারে না বলে ফতোয়া জারি করেন।
৬.২০১০- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে তল্লাশির নামে পর্দানশীন ও নামাযী ছাত্রীদের হয়রানির ঘটনা ঘটে। ছাত্রীদের রুম থেকে ইসলামী বই-পুস্তককে জেহাদী বই বলে তা জব্দ করে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রশাসনের সহায়তায় এ ধরনের কর্মকান্ডে সারাদেশে বোরকাধারী ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
৭.২০১০ সালের ২১ জুন কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ৯ ছাত্রীকে জঙ্গি সন্দেহে আটক করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদের পর কোনো অভিযোগ না পেয়ে রাত ৩টার দিকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
৮.১লা অক্টোবর ২০১০ সাইপ্রাসের এক পর্যটক নারী জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ছবি তুলতে গেলে তাকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
৯.২০১১ সালের ৯ জুলাই উত্তরা উইমেন্স কলেজে ছাত্রী সংস্থার প্রচারপত্র দেখে ৩ ছাত্রীকে আটক করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত একজন শিক্ষিকা। পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাংচুরের মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। পওে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
১০.২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্ভর- সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২০ শিক্ষার্থীসহ ২১ জনকে পুলিশ আটক করেছে। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আবদুল কাদের মোল¬ার স্ত্রীও ছিল। ওসি শাহআলম জানান, এ সময় বিপুল পরিমাণ ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ পেয়েছে পুলিশ”।
১১. ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি ২১ নারীকে আটকের ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে ও তাদের মুক্তি দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নারী অধিকার আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করলে সেখানেও হানা দেয় পুলিশ। ওই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ শেষে বের হওয়ার সময় ভাষা সৈনিক অধ্যাপিকা চেমন আরা, কলেজ শিক্ষিকা ও ছাত্রীসহ ১৩ নারীকে আটক করে পুলিশও র‌্যাব। রাতে চেমন আরাসহ ৬ জনকে ছেড়ে দিলেও বাকিদেরকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর তারা একে একে জামিনে মুক্তি পান।
১২.২০১২-সালের ২৭ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩ টায় বিনা কারনে "শেরপুর পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারী আয়েশা আক্তাকে তার বাসা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
১৩.২৩-মে ২০১২ ”ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে তল¬াশি করে বিভিন্ন বিভাগের নয় মেধাবী ছাত্রীকে আটক করেছে ছাত্রলীগ ও প্রশাসন।
১৪.গত ২ রা জুলাই-১২- চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের ছাত্রীরা হিজাব পরতে এবং নামাজ পড়তে বাধা দেয়া এবং নামাজ কক্ষ তালাবদ্ধ করেছে কতৃপক্ষ। এ সময় শিক্ষিকারা সেখানে রাখা বিভিন্ন ধর্মীয়বই, হিজাব পরা ও নামাজ পড়া নিয়েকটুক্তি করেন। অঞ্জলী দেবী নামে এক শিক্ষিকা জুতা পরা অবস্থায়নামাজঘরে প্রবেশ করে তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘নামাজঘরে জুতা নিয়েঢুকেছি, কই আল্ল¬াহ আমাকে কী করেছে?’ (আমার দেশ-০৩-১২-১২)
১৫. বোরকা পরে ক্লাসে আসার অপরাধে এক ছাত্রীকে কলেজে ঢুকতে দেননি উত্তরা মডেল কলেজের অধ্যক্ষ বিগ্রেডিয়ার গোলাম হোসেন। আরো পাঁচ ছাত্রীকে গেটে দাঁড়করিয়েরাখেন। অধ্যক্ষ বোরকাকে ‘অড’ বা দৃষ্টি কটু ড্রেস উল্লেখ করে বলেন “একটা মেয়েপায়ের নখ পর্যন্ত বোরকা পরে এসেছে এটা দৃষ্টি কটু।
১৬.নামাজ আর পর্দা করার অপরাধে ৮ ছাত্রীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে বের করে দেয়া হয়। ইডেন কলেজের ছাত্রীদের করা হয়নির্যাতন। দেয়া হয় পুলিশে।
১৭. ১ মে ২০১২ রাজধানীর উত্তরখান এলাকার একটি কলোনিতে তাফসির বৈঠক করার অপরাধে স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাত্রীসংস্থার এক নেত্রীকে আটক রেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে দুই দিন রিমান্ডে নেয়। দীর্ঘ এক মাস কারাভোগের পর আদালত থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মুক্তি পান তিনি।
১৮.১২ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতা করার সময় ছাত্রী সংস্থার দুই কর্মীকে একটি রুমে আটক রেখে পুলিশকে খবর দেয় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। পরে তাদেরকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান তারা।
১৯.১৬ অক্টোবর রাজধানীর ওয়ারলেস রেলগেট থেকে কিছু ইসলামী বই কিনে ফেরার পথে গাজীপুরের দুই ছাত্রীকে আটক করে পুলিশ। গভীর রাতে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
২০. ৪-ডিসেম্বর নারায়নগঞ্জ সদরের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় এক জামায়াতকর্মীকে আটক করতে এসে তার বোনকে আটক করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ধারায় মামলা দেয়া হয়। এমনকি নিরীহ এই নারীকে রিমান্ডে নিয়েও হয়রানি করা হয়। ১০ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।
২১. ১৯ মার্চ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা ছাত্রী সংস্থার উদ্যেগে জেএসসি-জেডিসি কৃতী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান কে রাষ্ট্রদ্রোহী ষড়যন্ত্রমূলক গোপন বৈঠকের অভিযোগ তুলে আটক করা হয় অভিভাবকসহ ১৮ ছাত্রীকে। পরদিন ১২ জনকে ছেড়ে দেয়া হলেও ৬ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পরে তারা হাইকোর্ট থেকে জামিন লাভ করেন।
২২. ১৫ মে রাজশাহী মহানগর জামায়াত নেতার বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকেসহ স্কুল পড়–য়া দুই মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে যায়। পরে তার মেয়েকে একটি মামলায় জড়িয়ে রিমান্ডেও নেয়া হয়। ২১ দিন পর জামিনে মুক্তি পায় ওই মেয়ে।
২৩. ২৮ আগস্ট বরিশালের মুলাদী উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের হোসনাবাদ গ্রামে ঈদপুনর্মিলনী অনুষ্ঠান থেকে ২২ জন ছাত্রীকে আটক করে ৫৪ ও ৫৭ ধারায় মামলা দেয় পুলিশ। ৩ দিন কারাভোগের পর তারা মুক্তি পায়।
২৪. ১ জুন নোয়াখালীর মাঈজদী এলাকা থেকে একজন, ২৭ আগস্ট নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে দুই ছাত্রীকে আটক করে পুলিশ।
২৫. ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বদরুন্নেছা কলেজ হল থেকে বের হওয়ার সময় বোরকাপরা দুই ছাত্রীকে ছাত্রলীগ নেত্রীরা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মিথ্যা মামলায় ১৪ দিন কারাভোগ করেন তারা।
২৬. ১০ অক্টোবর কুষ্টিয়ার আড়–য়াপাড়া হতে পর্দানশীন ৬ ছাত্রীকে আটক করলে এলাকাবাসী তাদের ছাড়িয়ে আনে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়।
২৭. ২১ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ জামায়াতের মহিলা বিভাগের সেক্রেটারির বাসা থেকে তাকে এবং এক ছাত্রীকে আটক করে বিস্ফোরক মামলায় জড়িয়ে কারাগারে পাঠায়।
২৮. ৭-ফেব্রুয়ারি ২০১৪, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সরকার ও রাজনীতি বিভাগে হিজাব পরায় কয়েকজন ছাত্রীকে গালমন্দ করে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছেন অধ্যাপক খুরশিদা বেগম। আবার শিক্ষার্থীদেরকে তার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন। নিজের দোষ ঢাকতে ওই অধ্যাপিকা ফোনে হত্যার হুমকির নাটক সাজিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
নারীদেরকে সবচেয়ে বেশী অপমান করেছে ছাত্রলীগ:-
ইডেন কলেজে ছাত্রলীগ নেতাদের মাধ্যমে ছাত্রীদের দিয়ে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার খবরে সর্বমহলে ঘৃণার সৃষ্টি হয়। এদিকে এ বছর পয়লা বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে লাঞ্ছিত হয় অর্ধশতাধিক ছাত্রী। একুশে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানেও তাদের হাতে লাঞ্ছিত হয় বেশ কয়েকজন ছাত্রী ও অভিভাবক। এছাড়া অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় রাজশাহী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের বোরকা ও হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়। সরকারিভাবে ধর্মীয় পোশাকবিরোধী এসব তৎপরতায় দেশে নারী ধর্ষণ, ইভটিজিং, ছাত্রী-শিক্ষিকা লাঞ্ছনাসহ নানা অনৈতিক কর্মকা- বেড়ে যায় বহুগুণে। বিশেষ করে সরকারদলীয় ক্যাডারদের দ্বারা যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনায় সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের অপরাধ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আওয়ামী মহাজোটের প্রথম চার বছরে সারা দেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৬৭ হাজার ২২৯টি। ছাত্রলীগ ক্যাডারসহ বখাটেদের হাতে লাঞ্ছনা ও যৌন হয়রানির শিকার হন অনেক ছাত্রী ও শিক্ষিকা। মহাজোট সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে ডিসেম্বরে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আন্দোলনরত বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের দমনের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারদলীয় ক্যাডারদের হাতে নিগ্রহের শিকার হন বহু নিরীহ নারী-শিশু। সারাদেশে অনেক নারীকে শহীদ করা হয়েছে।
পশ্চিমা বিশ্বের মতোই ইসলামকে প্রতিপক্ষ মনে করে আওয়ামীলীগ। একে প্রাতরোধের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী এই সরকার। আজ নাস্তিক আর বাম-রামদেও প্ররোচনায় নারীনীতির নামে একশ্রেনীর এনজিও দের মাধ্যমে মুসলমানদের ,পরিবারপ্রথা ,বিয়ে প্রথা ,মুসলিম নারীকে পর্দার আড়াল থেকে বের করে মুসলিম সভ্যতা,সংস্কৃতি ধ্বংস করতে চায় তারা। তারা এই দেশকে পাশ্চাত্য সভ্যতার অনুসারী বানানোর এজেন্ডা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মুলত মুসলিম দেশগুলোতে পাশ্চাত্যেও রাজনীতি,অর্থণীতি,শিক্ষা,দর্শন,সংস্কৃতিু,আইন ও বিচার পদ্ধতি পুরোপুরি চালু রয়েছে। শুধুমাত্র পারিবারিক পদ্ধতিটা কিছুটা ইসলামমিক। এটাকেও ভেঈে দেয়ার জন্য তারা উঠে পড়ে লেগেছে। পর্দা ও পোশাক নারী পুরুষের সম্পর্ক, একাধিক বিবাহ,ও তালাক সংক্রান্ত আইন,পিতা-মাতার অধিকার, স্বামী-স্ত্রীর অধিকার এবং উত্তরাধিকার আইন ইত্যাদিকে পাল্টিয়ে দিয়ে পাশ্চাত্য আইন বিধান চালু করাই তাদেও লক্ষ্য।
এত সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা কওে আজ পাশ্চাত্য সমাজের নারীরাও ইসলামের ছায়াতলে সববেত হচ্ছে প্রতিনিয়ত, আল্হামদুলিল্লাহ। বিট্রিশ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ট্রনি ব্লেয়ারের শালিকা বিশিস্ট সাংবাদিক,লরেন বুত ইসলাম গ্রহন করেছেন। হিন্দুধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে ভারতজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন বিখ্যাত কমলা দাশ। তাঁর বর্তমান নাম সুরাইয়া। কমলা দাসের বহু গ্রন্থ ইংরেজীসহ ভারতের প্রধান ভাষাগুলোতে অনুদিত হয়েছে। ১৯৬৪ সালে তিনি পিইএন পুরষ্কার,কেরালা সাহিত্য একাডেমী পুরষ্কার,সাংবাদিকতার জন্যে পান চমন লাল পুরস্কার। আজ পাশ্চত্যের অসংখ্য নারী আদালতে হিজাব নিষিদ্ধেও মামলায় বিজয়ী হচ্ছেন। সেখানে পৃথিবীর দ্বিতীয় মুসলিমদেশে বোরকা, হিজাবের বিরুদ্ধে আওয়াশীলীগ অ-ঘোষিত যুদ্ধে নেমেছে। কিন্তু এই যুদ্ধে তারা সফল হবেনা। কারণ ইসলাম এদেশের মানুষের রক্তের সাথে মিশে আছে। হযরত আয়েশা (রা:) জ্ঞানের গভীরতা, হযরত খাদিজা (রা:) সফল ব্যবসায়ী হিসাবে সুখ্যাতি, হযরত ফাতিমা ( রা:) নারীর মর্যাদা সংরক্ষন, আর হযরত সুমাইয়া ( রা) ত্যাগের ঘটনা ইতিহাসে আজ ও অবিস্বরনীয় হয়ে আছে। সুতরাং তাদেরই যোগ্য উত্তরসূরী ইসলামী ছাত্রীসংস্থার মেয়েদের উপর এই সরকারের জেল-জুলুম-,গ্রেফতার, রিমান্ড আর নির্যাতন এবং শহীদ করে তাদের অগ্রযাত্র কে ঠেকাতে পারবেনা ইনশাল্লাহ। তাদের ধৈর্য্য আর ত্যাগ-কুরবানীর মাধ্যমে ইসলামী ছাত্রসংস্থা হয়ে উঠবে আরো পরিচিত এবং জনপ্রিয়। দেশের মানুষ এই নিরাপরাধ, মেধাবী, চরিবাত্রবান, পর্দানশীল নারীদের মুক্তির অপেক্ষায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন