ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

বুধবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ পোস্টমর্টেম : পুলিশ প্রতিবেদন ও সুরতহাল রিপোর্ট পরস্পরবিরোধী!

আসলে কী ঘটেছে? শিবির নেতা জসিম উদ্দিন পুলিশের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন, না অজ্ঞাত হিসেবে তার লাশ উদ্ধার হয়েছে? থানার ওসির প্রতিবেদনে বন্দুকযুদ্ধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে বন্দুকযুদ্ধের বিষয়টি উল্লেখ না করে লাশ উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে। পুলিশের এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে জনমনে সন্দেহ-সংশয় দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন জেগেছে, একজন ছাত্রের লাশ নিয়ে পুলিশের কেন এই লুকোচুরি? জসিম বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলে সুরতহাল প্রতিবেদনে কেন বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হলো? এমনকি নিহত হওয়ার সময় সম্পর্কেও পরস্পরবিরোধী তথ্য রয়েছে দু’টি প্রতিবেদনে।
গত রোববার সকালে জসিম উদ্দিনের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় শেরেবাংলানগর থানার এসআই আব্দুর রউফ। তিনি লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ‘থানার ডিউটি অফিসার এসআই মো: ইদ্রিসুর রহমান বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে রাত অনুমান ৩টা ৪৫ মিনিটে তাকে জানান যে, তালতলা নতুন রাস্তায় একজন লোক মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এই খবর পেয়ে তিনি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি ৫টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে জসিমের লাশ পেয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। সুরতহাল রিপোর্টে লাশটি কিভাবে পেলেন, শরীরে কয়টি গুলি আছে ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়।
সুরতহাল রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘এমতাবস্থায় মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য কনস্টেবল শহিদুল ইসলামের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের নিকট প্রেরণ করা হলো।’ পোস্টমর্টেম রিপোর্ট সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়।
এ দিকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে শেরেবাংলানগর থানার ওসি গনেশ গোপাল বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা ১০ মিনিটে শেরেবাংলানগর থানাধীন শিশুমেলা ক্রসিংসংলগ্ন ট্রাফিক বক্সের সামনে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত লোকজন একত্রভাবে কর্তব্যরত সার্জেন্ট মো: গোলাম মাওলা, ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগ, মোহাম্মদপুর, ডিএমপি, ঢাকার ওপর ককটেল চার্জ করে এবং মাথায় এলোপাতাড়িভাবে ইট দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক জখম করে এবং যানবাহন ভাঙচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও আত্মরক্ষার্থে চার রাউন্ড শর্টগান ও চার রাউন্ড পিস্তলের গুলি করে। আসামিরা পলায়নকালে আবদুল্লাহ (২৫), বায়েজিদ (২০), সজিব (২২), শাহাদাৎ হোসেন (২০), ইসমাইল হোসেন ওরফে পিপাস (২৭) ও মো: জসিম উদ্দিনসহ (২৩) ছয়জনকে হাতেনাতে ধরা হয়। তারা সবাই শিবিরের নেতাকর্মী বলে জানা যায়। তারা ঘটনার কথা স্বীকার করে। ওই ঘটনাসংক্রান্তে এসআই মো: মিজানুর রহমানের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শেরেবাংলানগর থানার মামলা নং-০৬, তারিখ ০৭-০২-১৫ ইং, ধারা-১৪৩/১৮৬/৩৩৩/৩৫৩/৩০৭/৪২৭/১০৯ পেনালকোড তৎসহ বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইন ১৯০৮ (সংশোধনী/২০০২)-এর ৩/৪/৫/৬ ধারা এবং শেরেবাংলানগর থানার মামলা নং-০৭, তারিখ ০৭-০২-১৫ইং, ধারা-১৯৭৪ সনের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(১)(ক)(৩)/২৫-ঘ রুজু হয়। ধৃত উল্লিখিত আসামি মো: জসিম উদ্দিন (২৩) স্বীকার করে ও জানায়, শিবিরের সন্ত্রাসী দেলোয়ার তার লোকজন এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ তালতলা নতুন রাস্তায় রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে অবস্থান করবে। ওই সংবাদ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে এসআই মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স ও ডিবির (পশ্চিম) অফিসার ফোর্সসহ ওই স্থানে ৮ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ৪টার সময় আসামি জসিমসহ হাজির হওয়ামাত্র উত্তর দিক থেকে দেলোয়ার ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করে। সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ ও পেট্রলবোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে আসামি মো: জসিম উদ্দিনকে (২৩) ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ও ছিনিয়ে নেয়া আসামিকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ২১ রাউন্ড শর্টগানের গুলি করে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ওই স্থানের আশপাশে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় আসামি মো: জসিম উদ্দিন উল্লিখিত সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে বিদ্ধ হয়ে তালতলা নতুন রাস্তার উত্তর পাশের পূর্ব কোনায় ড্রেনের পাশে পড়ে আছে। পরে এসআই মো: আবদুর রউফ জসিমের লাশের সুরতহাল তৈরি করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। ওই ঘটনায় ডিবির এসআই মো: রশিদুল হক আহত হয়ে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি অবিস্ফোরিত তাজা ককটেল ও চারটি পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়। 
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতিবেদন দু’টি পরস্পরবিরোধী। অথচ একই থানার কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। সুরতহাল রিপোর্টে জসিমের পরিচয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ জসিম ওই থানায়ই ঘটনার প্রায় ২০ ঘণ্টা আগে গ্রেফতার হয়েছেন। নিহত হওয়ার আগেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনি পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হলেও সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে প্রেরণ করা হলো।
উৎসঃ নয়া দিগন্ত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন