ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান স্থগিত ঘোষণার পর শাহজাহানপুরে পাইপের মধ্যে পড়ে যাওয়া শিশুটিকে ২৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার করে তিনজন উদ্ধার কর্মী। তারা আইকন নামে এক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।
ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান স্থগিত করার ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মাথায় তারা শিশুটিকে উদ্ধার করেন।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক পাম্প ক্লিনার রহমতউল্লাহ, শাহ আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং সুজন দাস শিশু জিহাদকে পাইপের ভেতর থেকে অচেতন অবস্থায় বের করে আনেন। বেলা পৌনে ৩টার দিকে দুঃসাহসিক ওই উদ্ধার অভিযানে আরও ৩/৪ জন অংশ নেয়। জিহাদকে উদ্ধারের পর ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের হাতেই তুলে দেন স্বেচ্ছাসেবীরা। শিশুটিকে উদ্ধারে খাঁচার মতো নিজস্ব বিশেষ ধরনের জাল বা স্ক্যাচার ব্যবহার করেন বলে স্বেচ্ছাসেবীরা জানান।
এদের মধ্যে আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রেডিওতে খবর পেয়ে তারা শাহজাহানপুরে আসেন। সঙ্গে নিয়ে আসেন তিনটি বর্শা। বর্শাগুলোতে আংটা লাগানো ছিল। দুটো বর্শা নড়াচড়া করার জন্য ও একটি বর্শা টেনে আনার কাজের উপযোগী করে বানানো হয়। বর্শাগুলোর মধ্যে ক্যামেরা লাগানো ছিল।
তার দাবি, ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজ স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়ার সময় তাঁরা দড়ি বেঁধে বর্শাগুলো পাইপের মধ্যে ফেলেন। একবার চেষ্টাতেই তাঁরা সফল হয়েছেন । প্রায় ২৩৫ থেকে ২৪০ ফুট ভেতরে যাওয়ার পরে বর্শাটি কোনোকিছুর সঙ্গে আটকে গেছে বলে তাঁরা টের পান। ধীরে ধীরে ওপরে তোলা হয়। ১০০ মিটারের মধ্যে যখন বর্শাটি আসে তখন ক্যামেরায় বোঝা যায় শিশুটি সেখানে আটকে আছে।
এদিকে ওয়াসার গভীর নলকূপের পাইপ থেকে জিহাদকে উদ্ধারের পর বেলা ৩টার দিকে শিশু জিহাদকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় হাসপাতালে শত-শত উত্সুক মানুষ ভিড় জমান। হাসপাতালে নেয়ার পর ইসিজিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করে প্রায় ৩৫ মিনিট পর জিহাদকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিত্সক আবাসিক সার্জন ডা. রিয়াজ মোর্শেদ।
এসময় চিকিত্সক জানান, কয়েক ঘণ্টা আগেই জিহাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে ঠিক কত সময় আগে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে তা ময়না তদন্তের পরই বলা যাবে। মৃত অবস্থায় জিহাদকে পেয়েছেন জানিয়ে ডা. রিয়াজ মোর্শেদ জানান, বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হতে বেশকিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য তারা কিছুটা সময় নিয়েছেন।
উৎসঃ যুগান্তর
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন