স্টাফ রিপোর্টার : আজ ৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক গণতন্ত্র মুক্তি দিবস। গণঅভ্যুত্থানের মুখে ১৯৯০ সালের এই দিনে স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়েছিলেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের নিজস্ব আন্দোলন-আদর্শের ভিত্তিতে এ দিনটিকে ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’, ‘স্বৈরাচার পতন দিবস’ ও ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। এরশাদের দল জাতীয় পার্টি এদিনটিকে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে।
এদিকে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আলাদা বাণী দিয়েছেন। অন্যদিকে গণতন্ত্রহীন দমবন্ধ অবস্থায় শাসক দলের দমন-পীড়ন সত্ত্বেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে দিবসটি উপলক্ষে সীমিত পরিসরে কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
দীর্ঘ প্রায় দু’যুগ পরে এবছর এমন এক সময়ে দিনটি হাজির হয়েছে যখন জাতীয় জীবনে মানবসৃষ্ট দুর্যোগের ঘনঘটা। ক্ষমতাসীনদের একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের খায়েশ ও জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই সংবিধান সংশোধনের ভয়ানক ধারাবাহিকতায় ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে শাসকগোষ্ঠী গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক দিয়েছে বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহ ও সুধীসমাজ মন্তব্য করেন। আধিপত্যবাদী-সম্প্রসারণবাদী শক্তি তাদের এদেশীয় এজেন্টদের সহায়তায় বাংলাদেশকে যেন সার্বভৌমহীন এক ভূখন্ডে পরিণত করতে চাইছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ইতিহাসে এ দিনটি অনন্য উজ্জ্বল। গণঅভ্যুত্থানের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হন। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মহাবিজয় অর্জিত হয়েছিলো। পরবর্তীতে আধিপত্যবাদীদের কালো থাবায় বাংলাদেশের গণতন্ত্র অনেকবার হোঁচট খায়। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের সামনে এগুবার পথ আরও বন্ধুর করে ফেলা হয়। এ বছর এমন এক সময়ে গণতন্ত্র দিবস পালন করা হচ্ছে যখন দেশে পঁচাত্তরের বাকশালের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। হীনস্বার্থে সংশোধিত ও পকেটবন্দী সংবিধানের দোহাই দিয়ে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার ফন্দি-ফিকির করছে আওয়ামী লীগ। কতিপয় ‘খয়ের খাঁ’কে নিয়ে মহাজোট সরকারকে নতুন মোড়কে ‘সর্বদলীয় সরকার’ রূপ দেন শেখ হাসিনা। ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা তার সরকারের অংশীদার করেন সেই স্বৈরাচার এরশাদ এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না এমন কয়েকজন বাম নেতাকে। এ নির্বাচন ও সরকারকে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ গণতান্ত্রিক ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দলসমূহ প্রত্যাখ্যান করেছে। গত প্রায় ছয়টি বছর বিরোধী দলকে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে সরকার নানা ছুঁতোয় বাধা দিচ্ছে। এমনকি নিগ্রহের শিকার সাধারণ মানুষ ও পেশাজীবীদেরও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করার অধিকারটুকু হরণ করছে সরকার। যে কারণে অনেকে এ সরকারকে ‘ফ্যাসিস্ট’, ‘নব্য স্বৈরাচার’ ইত্যাদি আখ্যা দিচ্ছে।
গণতান্ত্রিকভাবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের সরকারকে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বন্দুকের নলের মুখে ক্ষমতাচ্যুত করে তৎকালীন সেনাপ্রধান এরশাদ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেন। ১৯৮৬ সালের প্রহসনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকার তার সামরিক লেবাস বদলে হন ‘গণতন্ত্রী’। কিন্তু দেশের সর্বস্তরের জনগণ তাকে মেনে নেয়নি। বরং এই জগদ্দল পাথরকে সরাতে সংগ্রাম করেছে টানা নয়টি বছর। এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে প্রথমে সকল রাজনৈতিক দল পৃথকভাবে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে বক্তব্য, বিবৃতি, মিটিং-মিছিল করলেও সময়ের ব্যবধানে গঠিত হয় জোট। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল, বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দল এবং বামপন্থীদের দ্বারা গঠিত ৫ দলীয় জোট তীব্র আন্দোলনে নামে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোনো জোটে না গিয়ে এককভাবে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যায় স্বৈরাচারী এরশাদের বিরুদ্ধে। ১৯৯০ সালের নবেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে। স্বৈরাচারী এরশাদ এ সময় ছাত্র আন্দোলনে ভাঙ্গন ধরানোর জন্য অভি-নীরু চক্রকে ব্যবহার করে। পুলিশের ছত্রছায়ায় এই চক্রের গুলীতে ২৭ নবেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে তৎকালীন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের তরুণ শিক্ষক ডা. শামসুল আলম খান মিলন শহীদ হন। ডা. মিলনের তাজা রক্ত ছাত্র গণআন্দোলনকে আরও বেগবান করে।
এদিকে সেদিন থেকে সাংবাদিক সমাজ সকল সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থায় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট আহ্বান করে। অন্যদিকে রাজপথে ছাত্র-গণআন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। নব্বইয়ের ৪ ডিসেম্বর রাতে স্বৈরাচারী এরশাদ গোয়ার্তুমী ভেঙ্গে আকস্মিক পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। পরদিন ৫ ডিসেম্বর রাজপথে নামে জনতার ঢল। যেনো এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়ায় আবেগাপ্লুত গোটা জাতি। স্বৈরাচারের পদত্যাগের পরই সাংবাদিকরা কাজে যোগ দেন এবং ৬ ডিসেম্বর আবার সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়।
আন্দোলনরত দল ও জোটগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে প্রথম নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। শাহাবুদ্দীন সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ থেকে স্বৈরতন্ত্রের আনুষ্ঠানিক বিদায় ঘণ্টা বাজে এবং শুরু হয় গণতন্ত্রের নতুন অভিযাত্রা। দেশ-বিদেশে বহুল প্রশংসিত ঐ নির্বাচনের অনুসরণেই পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতেও বিরোধী রাজনৈতিক জোটসহ দেশের প্রতিটি বিবেকবান মানুষ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে একাট্টা হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ‘স্বৈরাচার পতন দিবস’ পালন উপলক্ষে বিএনপি গতকাল শুক্রবারই জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভা করে। অন্যদিকে, আজ ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে জাতীয় পার্টি। বিকেল ৩টায় জাতীয় পার্টির কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
এদিকে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আলাদা বাণী দিয়েছেন। অন্যদিকে গণতন্ত্রহীন দমবন্ধ অবস্থায় শাসক দলের দমন-পীড়ন সত্ত্বেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে দিবসটি উপলক্ষে সীমিত পরিসরে কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
দীর্ঘ প্রায় দু’যুগ পরে এবছর এমন এক সময়ে দিনটি হাজির হয়েছে যখন জাতীয় জীবনে মানবসৃষ্ট দুর্যোগের ঘনঘটা। ক্ষমতাসীনদের একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের খায়েশ ও জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই সংবিধান সংশোধনের ভয়ানক ধারাবাহিকতায় ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে শাসকগোষ্ঠী গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক দিয়েছে বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহ ও সুধীসমাজ মন্তব্য করেন। আধিপত্যবাদী-সম্প্রসারণবাদী শক্তি তাদের এদেশীয় এজেন্টদের সহায়তায় বাংলাদেশকে যেন সার্বভৌমহীন এক ভূখন্ডে পরিণত করতে চাইছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ইতিহাসে এ দিনটি অনন্য উজ্জ্বল। গণঅভ্যুত্থানের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হন। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মহাবিজয় অর্জিত হয়েছিলো। পরবর্তীতে আধিপত্যবাদীদের কালো থাবায় বাংলাদেশের গণতন্ত্র অনেকবার হোঁচট খায়। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের সামনে এগুবার পথ আরও বন্ধুর করে ফেলা হয়। এ বছর এমন এক সময়ে গণতন্ত্র দিবস পালন করা হচ্ছে যখন দেশে পঁচাত্তরের বাকশালের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। হীনস্বার্থে সংশোধিত ও পকেটবন্দী সংবিধানের দোহাই দিয়ে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার ফন্দি-ফিকির করছে আওয়ামী লীগ। কতিপয় ‘খয়ের খাঁ’কে নিয়ে মহাজোট সরকারকে নতুন মোড়কে ‘সর্বদলীয় সরকার’ রূপ দেন শেখ হাসিনা। ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা তার সরকারের অংশীদার করেন সেই স্বৈরাচার এরশাদ এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না এমন কয়েকজন বাম নেতাকে। এ নির্বাচন ও সরকারকে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ গণতান্ত্রিক ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দলসমূহ প্রত্যাখ্যান করেছে। গত প্রায় ছয়টি বছর বিরোধী দলকে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে সরকার নানা ছুঁতোয় বাধা দিচ্ছে। এমনকি নিগ্রহের শিকার সাধারণ মানুষ ও পেশাজীবীদেরও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করার অধিকারটুকু হরণ করছে সরকার। যে কারণে অনেকে এ সরকারকে ‘ফ্যাসিস্ট’, ‘নব্য স্বৈরাচার’ ইত্যাদি আখ্যা দিচ্ছে।
গণতান্ত্রিকভাবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের সরকারকে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বন্দুকের নলের মুখে ক্ষমতাচ্যুত করে তৎকালীন সেনাপ্রধান এরশাদ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেন। ১৯৮৬ সালের প্রহসনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকার তার সামরিক লেবাস বদলে হন ‘গণতন্ত্রী’। কিন্তু দেশের সর্বস্তরের জনগণ তাকে মেনে নেয়নি। বরং এই জগদ্দল পাথরকে সরাতে সংগ্রাম করেছে টানা নয়টি বছর। এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে প্রথমে সকল রাজনৈতিক দল পৃথকভাবে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে বক্তব্য, বিবৃতি, মিটিং-মিছিল করলেও সময়ের ব্যবধানে গঠিত হয় জোট। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল, বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দল এবং বামপন্থীদের দ্বারা গঠিত ৫ দলীয় জোট তীব্র আন্দোলনে নামে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোনো জোটে না গিয়ে এককভাবে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যায় স্বৈরাচারী এরশাদের বিরুদ্ধে। ১৯৯০ সালের নবেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে। স্বৈরাচারী এরশাদ এ সময় ছাত্র আন্দোলনে ভাঙ্গন ধরানোর জন্য অভি-নীরু চক্রকে ব্যবহার করে। পুলিশের ছত্রছায়ায় এই চক্রের গুলীতে ২৭ নবেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে তৎকালীন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের তরুণ শিক্ষক ডা. শামসুল আলম খান মিলন শহীদ হন। ডা. মিলনের তাজা রক্ত ছাত্র গণআন্দোলনকে আরও বেগবান করে।
এদিকে সেদিন থেকে সাংবাদিক সমাজ সকল সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থায় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট আহ্বান করে। অন্যদিকে রাজপথে ছাত্র-গণআন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। নব্বইয়ের ৪ ডিসেম্বর রাতে স্বৈরাচারী এরশাদ গোয়ার্তুমী ভেঙ্গে আকস্মিক পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। পরদিন ৫ ডিসেম্বর রাজপথে নামে জনতার ঢল। যেনো এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়ায় আবেগাপ্লুত গোটা জাতি। স্বৈরাচারের পদত্যাগের পরই সাংবাদিকরা কাজে যোগ দেন এবং ৬ ডিসেম্বর আবার সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়।
আন্দোলনরত দল ও জোটগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে প্রথম নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। শাহাবুদ্দীন সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ থেকে স্বৈরতন্ত্রের আনুষ্ঠানিক বিদায় ঘণ্টা বাজে এবং শুরু হয় গণতন্ত্রের নতুন অভিযাত্রা। দেশ-বিদেশে বহুল প্রশংসিত ঐ নির্বাচনের অনুসরণেই পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতেও বিরোধী রাজনৈতিক জোটসহ দেশের প্রতিটি বিবেকবান মানুষ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে একাট্টা হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ‘স্বৈরাচার পতন দিবস’ পালন উপলক্ষে বিএনপি গতকাল শুক্রবারই জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভা করে। অন্যদিকে, আজ ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে জাতীয় পার্টি। বিকেল ৩টায় জাতীয় পার্টির কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
দৈনিক সংগ্রাম এর সৌজন্যে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন