সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, গণভোটের ব্যবস্থা থাকলে হরতালের প্রয়োজন হতো না, রাজনৈতিক সহিংসতা ও সংকট সৃষ্টি হতো না। তিনি বলেন, তত্ত্ববধায়ক সরকারের পক্ষে জনগণ থাকলে এ পদ্ধতি থাকবে। না থাকলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরবে না। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা ভোটারদের বিষয়। দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে গণভোট অনুষ্ঠানের পরামর্শ দেন তিনি।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) ৫ম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ প্রস্তাব করেন তিনি।
ড. আকবর আলি বলেন, দেশে গণতন্ত্রের জন্য আকুতি আন্দোলন চলছে। গণতন্ত্র ও উন্নয়নের মধ্যে কোনো বৈপরীত্য নেই। গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন হয় না।
তিনি বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৩টি আসনে প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। এ সব আসনের ভোটাররা ভোট দেয়ার সুযোগ পাননি। এ সমস্যা দিন দিন জটিল হচ্ছে।
সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকবে কি থাকবে না, এটা কোনো রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়। এটা ভোটারদের বিষয়। গণভোটের মাধ্যমে ভোটাররাই সিদ্ধান্ত দিতে পারেন এ ব্যবস্থা থাকবে কি থাকবে না।
আকবর আলি বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন আলাদা কিছু নয়। তবে দিন দিন আমরা গণতন্ত্র থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। সুজনের এই জাতীয় সনদ সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে নিয়ে যেতে হবে। যদি তারা সমর্থন না করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে। দলের বিষয় নয়; দাবির বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে।
সম্মেলনে সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, দেশে বর্তমানে দলীয়করণ চলছে। বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরমত সহিষ্ণুতা নেই। গাজীপুরের ব্যাপারে এটা আমরা দেখতে পেয়েছি।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়া হয়েছে। নির্বাচন বয়কট করে কখনো কোনো রাজনৈতিক দল লাভবান হয়নি।
তিনি বলেন, যারা নির্বাচন বয়কট করেছিল তাদের উচিত ছিল নির্বাচন কমিশনে নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগ্য কি না। তারা কোন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছে এসব বিষয়ে আলোচনা করা। কিন্তু তারা সেটা করেনি। ফলে দেশে নির্বাচন হয়ে গেছে।
সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- পুলিশের সাবেক আইজিপি শাহজাহান, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, রোবায়েত ফেরদৌস, ড. ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার প্রমুখ।
উৎসঃ যুগান্তর
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন