ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার ঐতিহাসিক মাদ্রাসাটি বন্ধ করে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। প্রায় ২০০ বছরের পুরাতন মাদ্রাসাটি তৈরি হয়েছিল দানবীর হাজী মুহম্মদ মহসিনের নামে প্রদেয় অর্থে। এই মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন বাংলা-আসাম-বাংলাদেশের অন্যতম ধর্মতাত্ত্বিক প্রয়াত ফুরুফুরার ‘দাদাহুজুর’ মৌলানা আবু বকর সিদ্দিকি এবং গোলাম সালমানী আব্বাসী। কেবল ধর্মতত্ত্বই নয়, এখানে পড়ানো হত আধুনিক শিক্ষাক্রম। এখান থেকেই পাস করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি স্যর সৈয়দ আমীর আলি। এখানেই শিক্ষালাভ করেছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ এবং শাহ আজিজুর রহমান, যারা পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এখান থেকে পাশ করেছেন প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ডঃ এবিএম হাবিবুল্লাহ, বিজ্ঞানী আতাউর রহমান, সাহিত্যিক মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, দেওয়ান ওস্মান গণির মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। সমাজচিন্তা, জ্ঞানবিজ্ঞানের শিক্ষাদানে এই প্রতিষ্ঠান মুসলমান সমাজের উন্নতি বিধানে অগ্রণী ছিল।
বহু কৌশল করে মাদ্রাসটি বন্ধ করা হলো। মাদ্রাসfটি বাবরী মসজিদের মত ভাঙ্গা হয়নি এটা ঠিক, কিন্তু নতুন বছরে কোন ছাত্রকে ভর্তি হতে দেওয়া হলো না, সকল শিক্ষককে অন্যত্র বদলী কলে দেওয়া হলো। খোদ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেেশেই এমনটা হলো। যে ভবনে মাদ্রাসটি প্রতিষ্ঠিত, সেটিও হেরিটেজ ভবন। ঐতিহাসিক এই বাড়িটিকে ঘিরে কোনও ব্যবসায়ীকে দিয়ে সরকার অন্য কোনও গোপন পরিকল্পনা করছে বলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে। (http://goo.gl/ug2ioR)
এটা বলতে দ্বিধা নেই ভারতে মুসলমানরা তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বসবাস করে, তাদের শিক্ষার হার অনেক কম এবং চাকুরী প্রাপ্তির হার অরো অনেক অনেক কম। এ অবস্থায় মুসলমানদের একটি ঐতিহাসিক মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের আরো অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া। ঐ এলাকার মুসলমানরা অবশ্য মাদ্রাসাটি পুনরায় চালু করার দাবি জানিয়েছে, কিন্তু মমতা সরকার তা পাত্তাই দিচ্ছে না। (https://goo.gl/MUUJjw)
আমার পেইজের অধিকাংশ পাঠক যেহেতু বাংলাদেশী, তাই আপনাদের একটা প্রশ্ন করতে চাই।
আচ্ছা ! বাংলাদেশ সরকার যদি ঢাকেশ্বরী মন্দির কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল বন্ধ করে দেয়, তবে কি তা বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য শুভকর হবে ? কিংবা এতে কি বাংলাদেশের হিন্দুরা শিক্ষা ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে ? আপনি কি বলেন ?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন