চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী অধ্যক্ষ নুরুল আমিন বলেন ধূষর মরুর বুকে মানুষ যখন খুন, হত্যা, রাহাজানি সহ নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে নিজেদের মনুষ্যত্ববোধ হারাতে বসেছিল ঠিক তা থেকে রক্ষার জন্য মহান প্রভু তার প্রিয় রাসূল(স)কে প্রেরণ করেছিলেন। ¯্রষ্টার নির্দেশিত পন্থায় রাসূল (স) তৎকালীন মক্কার সমাজে বিরাজিত জাহেলিয়াতকে দূর করে একটি সুন্দর, সভ্য, জ্ঞান নির্ভর আধুনিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু আল্লাহর নবী যখন প্রথমাবস্থায় মক্কায় ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছিলেন তখন সেখানকার গোত্র সর্দাররা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এক পর্যায়ে তাকে জন্মস্থান মক্কা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেন। এরপর পবিত্র মদিনায় গিয়ে তিনি সর্বপ্রথম ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করেন। নতুন জনপদটি হয়ে উঠল ইসলাম প্রচার ও প্রসারের নিরাপদ কেন্দ্র। মুসলমান হয়ে যাওয়া আউস-খাজরাজ গোত্রের সাথে অন্যান্য ইহুদি ও খ্রিষ্টান গোত্রের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রচিত হয় মদিনার সনদ নামে পরিচিত পৃথিবীর প্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র। কিন্তু মক্কার কুরাইশরা মুসলমানদের শান্তিতে থাকতে দিতে চায়নি। তারা ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে থাকে। এত দিন আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে মুসলমানদের শুধু সবরের আদেশ হলেও এবার সশস্ত্র জিহাদের অনুমতি দেয়া হয়। সশস্ত্র পন্থায় কাফেরদের প্রতিরোধ করার অনুমতি লাভের পর আল্লাহর নবী প্রস্তুত হলেন। কুরাইশ কাফেরদের সাথে আল্লাহর নবী ও তাঁর সাথীদের কয়েকটি ছোট খাটো সংঘর্ষের পর প্রথম সরাসরি সশস্ত্র মোকাবেলা হয় মদিনা থেকে বেশ দূরে বদর প্রান্তরে । কিন্তু দুই পক্ষ কোনো দিক দিয়েই সমতা ছিল না। আল্লাহর নবীর সাথে মাত্র ৩১৩ জন মুজাহিদ প্রায় নিরস্ত্র। অপর পক্ষে আবু জেহেলের নেতৃত্বে রয়েছে ১০০০ প্রশিক্ষিত সৈন্যের সুসজ্জিত বাহিনী। কিন্তু এ অসম লড়াইয়ে নিরস্ত্র মুষ্টিমেয় মুজাহিদদের কাছে পরাজিত হয় সুসজ্জিত বিশাল বাহিনী। কুরাইশদের দর্প চূর্ণ হলো। তাদের দলের মধ্য থেকে নিহত হলো ৭০ জন। বন্দী হয় আরো ৭০ জন। আর মুসলমানদের মধ্যে শহীদ হন মাত্র ১৪ জন। এজন্য সৌহার্দ্য-শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে ইসলামের বিকল্প নেই।
ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে এলাকাবাসীদের সম্মানে ইফতার ও ঐতিহাসিক বদর দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আজ (০৫.০৭.১৫) এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর সভাপতি নুরুল আমিন এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী সালাউদ্দিন মাহমুদ’র সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন এড.এম.এ.আলম চৌধুরী,আব্দুর রশিদ মেম্বার,মাস্টার নজরুল ইসলাম,অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন,হাসমত আলী মাসুদ,আমির খসরু,মোহাম্মদ আলী শিবির নেতা তৌহিদুল ইসলাম,কায়েস মাহমুদ, সা’দুর রশিদ, নাছির উদ্দিন,রোকন উদ্দিন প্রমুখ।
নগর উত্তর সভাপতি নুরুল আমিন বলেন বদরের যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময় জিহাদ। যুদ্ধবন্ধীদের সাথে আল্লাহর নবী ও মুসলিমরা যে সহমর্মিতার আচরণ করেন, বিশ্বের ইতিহাসে তার নজির পাওয়া মুশকিল। মুক্তিপণ আদায়ে অক্ষমদের ওপর চাপানো হয়েছিল ১০ জন মুসলিম শিশুকে লেখা শেখানোর দায়িত্ব। পৌত্তলিকতাসহ বিভিন্ন অসার ভাবধারা মানবজাতিকে আশরাফুল মাখলুকাতের উন্নত মর্যাদা থেকে নামিয়ে এনেছিল সবচেয়ে নীচু স্তরে। ইসলাম মানবজাতিকে আবার সেই উন্নত মাকামে নেয়ার ঘোষণা দেয়। বদরের প্রান্তর থেকে ইসলামের বিজয়ধারা সূচিত হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন