ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

শুক্রবার, ১৭ জুলাই, ২০১৫

বগুড়ায় বিএনপি-জামায়াতের ৩ লক্ষাধিক পরিবারে ঈদের আনন্দ নেই


এক মাসের সিয়াম সাধনা শেষে মুসলমানদের দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। আর মাত্র দুই দিন পর ঈদুল ফিতর। সবার ঘরে ঘরে চলছে ঈদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি। পরিবারের সবার জন্য নতুন জামা-কাপড় কেনার ধুম পড়েছে সবখানে। শহরের মার্কেটগুলোতে ভিড় বেড়েই চলেছে। অথচ ঈদের খুশির ছিটেফোটাও নেই বগুড়ার প্রায় ৩ লক্ষাধিক পরিবারে।
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষ বাপরোক্ষভাবে জড়িত এসব পরিবারের পুরুষ সদস্যরা প্রায় সকলেই মাসের পর মাস ফেরারী। বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানদের চোখে দেখার সুযোগ দেখতে পান না অনেকেই। রাজনৈতিক মামলার আসামী হয়ে মাসের পর মাস ঘরছাড়া এসব নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দুই মেয়াদে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বগুড়া জেলায় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কারণে ৫ শতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামী প্রায় ৩ লাখেরও বেশি। 
সরকারবিরোধী আন্দোলন ও দলের শীর্ষ নেতাদের মুক্তির আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শুধুমাত্র গত তিন বছরে বগুড়ায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের নামে প্রায় ২’শ টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলার অধিকাংশই দায়ের করেছে পুলিশ। সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত। এসব মামলায় জ্ঞাত-অজ্ঞাত আসামী প্রায় দুই লাখ। তবে, বিভিন্ন সময়ে পুলিশের গণগ্রেফতারের কারণে প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ঘরবাড়ি ছেড়ে ফেরারি জীবন যাপন করছেন জামায়াত-শিবিরের প্রায় আড়াই লাখ নেতাকর্মী।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার প্রথম দফায় ক্ষমতা গ্রহণের প্রায় ৪ বছর পর ২০১২ সালের ৫ নবেম্বর বগুড়ায় আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজপথে নামে জামায়াত-শিবির। ওই দিন দুপুরে শহরের জিরোপয়েন্ট সাতমাথায় শত শত জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী মিছিল বের করে। পুলিশ বাধা দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। সেদিন বেশ ক’জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়। পুলিশের টিয়ার শেল ও রাবার বুলেটে আহত হয় বহু নেতাকর্মী। আটক হয় বেশ কয়েক জন। এরপর থেকেই রাজপথে প্রতিনিয়ত পুলিশের সাথে জামায়াত-শিবিরের ধাওয়া-পাল্টা, সংঘর্ষ চলতে থাকে।
জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি এবং আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির আদেশের পর রাজপথে সংঘাত-সহিংসতা ভিন্নমাত্রা পায়। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ পর্যন্ত ভয়াবহ গণবিস্ফোরণ ঘটে বগুড়ায়। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী ছাড়াও হাজার হাজার সাধারণ মানুষ নেমে আসে রাস্তায়। স্মরণকালের সবচেয়ে সফল হরতাল চলে টানা কয়েকদিন।
ক্স আল্লামা সাঈদীর মুক্তির দাবিতে ৩ মার্চ মধ্যরাত থেকে হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে আসে। বিক্ষুব্ধ জনতাকে থামাতে নির্বিচারে গুলী চালায় পুলিশ। তাদের সাথে যোগ দেয় র‌্যাব। র‌্যাব-পুলিশের গুলীতে মারা যায় কমপক্ষে ১৬ জন। পরবর্তীতে মারা যায় আরও ৩ জন। আহত হয় কয়েক’শ। চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয় ১০ জনের বেশি সাধারণ মানুষ। এই দিনের বিক্ষোভে জেলার বিভিন্ন থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি আক্রান্ত হয়। নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এসব ঘটনায় প্রায় এক’শো টি মামলা হয় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের নামে। এসব মামলায় আসামী জ্ঞাত-অজ্ঞাত প্রায় দেড় লাখ। এছাড়াও সরকারবিরোধী আন্দোলনে গত তিন বছরে আরও প্রায় এক’শো টি মামলা হয়েছে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের নামে। সবমিলিয়ে প্রায় ২’শ মামলায় জামায়াত-শিবিরের প্রায় দুই লাখ নেতাকর্মী আসামী। ইতোমধ্যেই জেলা আমীরসহ এক হাজারেরও অধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। এখনো কারাগারে আছেন অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। এদের মধ্যে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা আলমগীর হুসাইন, সাবেক পৌর কাউন্সিলর এরশাদুল বারী এরশাদ, শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরি পরিষদ সদস্য ও বগুড়া শহর শাখা সভাপতি রেজাউল করিম রয়েছেন।
জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি মাজেদুর রহমান জুয়েল বলেন, জামায়াত-শিবিরের কয়েক লক্ষ নেতাকর্মী পুলিশের দায়ের করা মিথ্যা মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে ফেরারী জীবন যাপন করছে। অন্য সবাই পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করলেও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা তা পারছে না। প্রতিনিয়ত পুলিশী অভিযানের ফলে মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান ছাড়াই ঈদ কাটছে তাদের। অনেক পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটছে পরিবারের সদস্যদের। এসব পরিবারে ঈদের আনন্দের লেশমাত্র নেই। তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি একদিন এই জুলুমের শেষ হবে। আর সেদিনই ঈদের খুশি উদযাপন করা হবে।
এদিকে, সরকারবিরোধী আন্দোলনের জের ধরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নামেও প্রায় শতাধিক মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী এখনো কারাগারে বন্দি। জেলার শীর্ষ নেতাদের নামে মামলা না হলেও তৃতীয়-চতুর্থ সারি এবং উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মামলায় জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। জামায়াত-শিবিরের অধিকাংশ মামলার সাথে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামী করা হয়েছে। ফলে গ্রেফতার আতংকে প্রায় লক্ষাধিক নেতাকর্মী ঘরবাড়ী ছেড়ে ফেরারী জীবন যাপন করছেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেল বলেন, বিএনপি ও অঙ্গ দলের অসংখ্য নেতাকর্মী মিথ্যা মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে ফেরারী জীবন যাপন করছে। মাসের পর মাস তারা ঘরবাড়ি ছাড়া। এসব পরিবারে কয়েক লাখ সদস্য ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন