ইসলামের নবী আকায় নামদার, তাজেদারে মদিনা আহমাদে মোস্তফা, মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা: তাঁর নিয়মিত প্রার্থনায় প্রায়ই বলতেন- ওয়াজাআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা! হে আল্লাহ তুমি আমাকে পরহেজগার লোকদের নেতা বানিয়ে দাও। রাসূল সা: যেরূপে মুত্তাকিদের নেতা হওয়ার জন্য মুনাজাত করতেন, সেরূপে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিনও তাঁর মুমিন বান্দাদেরকে আল কুরআনের সূরা নিসার ৬৫ নম্বর আয়াতে সতর্ক করে নির্দেশ প্রদান করেছেন, যার ভাবার্থ হলো- ‘ হে মুমিনগণ, তোমরা সর্বক্ষেত্রে রাসূলের নির্দেশ মেনে চলো এবং বিনাবাক্যে তার আনুগত্য করো। অন্যথায় তোমরা মুমিন হতে পারবে না।’
মুমিন বান্দারা সব সময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে একজন উত্তম নেতার জন্য প্রার্থনা করে থাকেন এবং বাস্তবে তেমন নেতা পেলে তারা সর্বতোভাবে সাহায্য করেন। ফলে নেতার পক্ষে সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা সহজ হয়ে যায়। নেতা ও জনগণের মাঝে সেতুবন্ধন হিসেবে যখন আল্লাহর হুকুম-আহকাম এবং নবী পাক সা:-এর সুন্নত প্রাধান্য পায়, তখন সেই সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের উন্নয়ন এবং মানমর্যাদা বৃদ্ধির জন্য আসমানের রহমত ও বরকতের দরজা খুলে দেয়া হয়। এই ঘটনার বিপরীত দৃশ্য, অর্থাৎ জনগণ যখন মন্দলোককে তাদের নেতা বানায়, আর মন্দলোক নেতা হওয়ার পর তার কুকর্মকে সব কিছুর ওপর প্রাধান্য দেয়, তখন নিত্যকার কাজকর্মে, চলনে-বলনে খোদায়ি গজব অনিবার্য হয়ে যায়।
বাংলাদেশে নেতা নির্বাচনের তোড়জোড় এবং প্রক্রিয়া দেখে মনে হয়, এ দেশের মুত্তাকিরা কোনো দিন উত্তম নেতার জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন না। তা হলে কি তারা নামাজের কিংবা অন্য কোনো ইবাদতের পর শুধু নিজেদের পার্থিব বিষয় নিয়ে কান্নাকাটি করেন? কেউ বলেন- চাল দাও, ডাল দাও, সময়মতো খাবার দাও। অন্যরা বলেন, চাকরি চাই- বাকরি চাই এবং হুর-পরীর মতো সুন্দরী বউ চাই। বয়স্করা বলেন, ছেলেমেয়ে মানুষ করে দাও- আমার পায়ের ব্যথা, কোমরের ব্যথা, বাত-বেদনা দূর করে দাও এবং মরণের পরে মস্তবড় জান্নাত দাও। তারা সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা তার নিজের কওম সম্পর্কে থাকেন বোধ হয় একেবারেই বেখেয়াল। অর্থাৎ, সমাজ বা রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তারা না করেন কোনো চেষ্টা কিংবা তদবির অথবা না করেন কোনো প্রার্থনা। তবে হ্যাঁ, কিছু লোক প্রার্থনা করেন বিপদে পড়লে। যদি গজব একেবারে ঘাড়ের ওপর এসে পড়ে, তখন কেঁদে কেঁদে বলেন- ও আল্লাহ! এইটা কী হলো! আমারে বাঁচাও। কেউ কেউ তো রীতিমতো নাফরমানি পর্যন্ত করে ফেলেন। তারা বলেন- ও আল্লাহ, তোমার কি চোখ নেই! অথচ আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন- ‘তোমাদের যাবতীয় দুর্ভোগ তোমাদেরই দুই হাতের কামাই।’
নেতা নির্বাচন এবং জনগণের দায়দায়িত্ব নিয়ে এতসব নীতিকথা হঠাৎ করেই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে এবার বাংলাদেশের তিন-তিনটি সিটি নির্বাচনের কায়দাকানুন দেখে। ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ সিটির একজন বাসিন্দা হিসেবে করপোরেশন থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো সার্ভিস পাই না, কেবল ময়লা পরিষ্কার এবং গলির সামনের রাস্তাটি কালে-ভদ্রে ঝাড়– দেয়া ব্যতিরেকে। অন্য দিকে নিয়মিত পৌরকর পরিশোধ করতে গিয়ে কত টাকা ঘুষ দিতে হয় তা আমার প্রায় মুখস্থ হয়ে গেছে। এর বাইরে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন কিংবা গ্রহণ নিয়ে ঝক্কিঝামেলার কথা না হয়, বাদই দিলাম। দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সিটি করপোরেশন আমার বিশ্বাস ও আস্থার জায়গায় পরিণত হয়নি। আমি যেমন ইতঃপূর্বে জানতাম না বাংলাদেশে, বিশেষত ঢাকা সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব ও কর্তব্য কী; তদ্রুপ এ কথাও জানতাম না- তারা দায়িত্ব ও কর্তব্যের কতটুকু পালন করছেন। তবে চার দশক ধরে দেখছি, যারাই সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বসেছেন, তাদের কপালে যেন মা লক্ষ্মীর যোগ হয়েছে অযাচিতভাবে। প্রায় দীনহীন অবস্থায় তারা ওই পদে বসেছেন এবং বিদায়বেলায় মস্তবড় এক আমিরে পরিণত হয়েছেন। তাদের গাড়ি বাড়ি সম্পদ অর্জনের ধরন ও বহর দেখে আরব্য রজনীর আলীবাবাও অবাক হয়ে বলবেনÑ ওরা এত্তসব করল কী করে?
এবারে মেয়র নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি থেকে একজন প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বারবার নিজেকে প্রশ্ন করেছি, কেন মেয়র হতে চাই? আল্লাহর ইচ্ছায় নির্বাচিত হলে নগরবাসীর জন্য কী এমন করার ক্ষমতা আমার রয়েছে? কেন আমি অন্যসব মানুষের মতো দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ব না? এসব বিষয়ে আলোচনা করলে সম্মানিত পাঠকদের কেউ কেউ টিপ্পনি কেটে বলতে পারেন, আমি হয়তো বিনে পয়সায় নিজের কলামে নিজের বিজ্ঞাপনের জন্য ইনিয়েবিনিয়ে চেষ্টা-তদবির করে যাচ্ছি। তাই ওই দিকে না গিয়ে কেবল একটি কথা বলে শিরোনাম প্রসঙ্গে চলে যাবো। যখন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফেলো হিসেবে সেই দেশের স্থানীয় সরকার, বিশেষ করে কয়েকটি বৃহৎ সিটি করপোরেশনের কাজকর্ম নিয়ে গবেষণা করছিলাম, তখন মনে হয়েছে, বাংলাদেশের কোনো সিটি করপোরেশনই এখন পর্যন্ত তাদের জনকল্যাণমূলক কাজের পরিধি নির্ধারণ করতে পারেনি। অন্য দিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সুইডিশ পার্লামেন্ট এবং আন্তর্জাতিক পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে আমি যখন গর্ভবতী মহিলা, নিরাপদ গর্ভপাত, নবজাতকের স্বাস্থ্য, কিশোর বয়সের মন ও মননশীলতা নিয়ে সুইডেনে কাজ করার সুযোগ পেলাম, তখন মনে হলো- ঢাকা সিটি করপোরেশনের কোনো স্তরের কর্মকর্তাদের মাথায় ওইসব বিষয় এখনো ঢোকেনি। সবুজ নগরীর চিন্তা এবং বাস্তব অভিজ্ঞতাও লাভ করেছি ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন গিয়ে কাজ করার সুবাদে। কাজেই আমার অভিজ্ঞান আমাকে সব সময় তাড়া দিয়ে আসছিল সুবিধাবঞ্চিত নগরবাসীর জন্য কিছু একটা করতে।
বহু আগে ভারতের সাপ্তাহিক ‘দেশ’ পত্রিকায় ভুবনবিখ্যাত পণ্ডিত শ্রী নীরদ চন্দ্র চৌধুরীর একটি সাক্ষাৎকার পড়ছিলাম। তিনি প্রশ্নকারী সাংবাদিককে বারবার বলছেন, এই প্রশ্নটা এভাবে হবে না- ওটা ওভাবে হবে না ইত্যাদি। তারপর যখন প্রশ্নকর্তা ভারতবর্ষের কয়েকজন পণ্ডিতের নাম নিয়ে কথা বলতে আরম্ভ করলেন, তখন রীতিমতো ক্ষেপে গেলেন এবং বললেন- ওইসব গণ্ডমূর্খকে পণ্ডিত মনে করার কারণে তোমার জ্ঞানগরিমার ধরন নিয়ে আমার রীতিমতো সন্দেহ হচ্ছে। তুমি তো আমার সাক্ষাৎকার নেয়ার যোগ্য নও। সাংবাদিক অনুনয়-বিনয় শুরু করলে নীরদ বাবু সহাস্যে প্রশ্ন করলেন- আচ্ছা, বলো তো, গান্ধী যে খালি গায়ে থাকতেন এবং সেই অবস্থাতেই ইংল্যান্ড এসেছিলেন গোলটেবিল বৈঠকে নিতে যখন বিট্রেনের তাপমাত্রা ছিল শূন্য ডিগ্রির নিচে, তার সেই কর্মকে তুমি কী বলবে? ভণ্ডামি, সাধুগিরি নাকি দেশপ্রেম?
সাংবাদিক এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। পারেননি এ কারণে যে, কেউ মনোজাগতিক বিষয়ের এত উচ্চ মার্গে গিয়ে দেশ-জনতা এবং নেতা-নেত্রী এমন করে ভাবেন না। আমরা সব কিছু অতি সরলভাবে দেখি এবং চিন্তা-ভাবনা করি নিরেটের মতো। জাতীয় বিষয় বা নিজের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নয়, এমন বিষয় নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করি খুবই কম এবং ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে বিবেককে বন্ধক রেখে আবেগ নিয়ে লাফালাফি করি। ফলে জাতীয় জীবনে যখন বিপর্যয় নেমে আসে, তখন হয় নিজের কপালকে দায়ী করি, নতুবা কপালের মালিককে।
ঢাকায় সিটি নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কতজন প্রার্থী আল্লাহ-খোদায় নির্ভর করেন তা আমার জানা নেই। আমার এ কথাও জানা নেই, তারা নামাজ-কালাম পড়েন কি না। আবার পড়লেও দু-তিনটি সূরার বাংলা অর্থ জানেন কি না, সন্দেহ। তারা জীবনে কতবার নিজের জন্য আল্লাহর সাহায্য চেয়েছেন এবং চোখের পানি ফেলেছেন, তা কেবল তারাই বলতে পারবেন। তবে দেশের জন্য, দলের জন্য এবং ঢাকা মহানগরীর বাসিন্দাদের জন্য প্রার্থনা করতে গিয়ে তারা যদি অঝোরে কেঁদে থাকেন, তবে আল্লাহর কুদরতি শক্তিতে তারা বিজয়ী হবেন, এ কথা নিশ্চিত করে বলতে পারব। আর নগরবাসীর জন্য এ ধরনের নেতানেত্রীরা হবেন তাদের রবের পক্ষ থেকে প্রদত্ত অন্যতম বৃহৎ নিয়ামত।
ভবিষ্যতের নগরপিতা তার রবের দরবারে কিভাবে মুনাজাত করেন, তা বলতে না পারলেও অতীতের নগরপিতাদের স্ফীত হওয়ার দৃশ্য দেখে তাদের মন-মানসিকতা সম্পর্কে সহজেই আন্দাজ করা যায়। তারা সব সময় জ্ঞানী ভোমাদের তুলনায় বোকাসোকাদের সমর্থন ও সাহচর্য আশা করতেন, ঠিক যেন বাবুরাম সাপুড়ের মতো। হয়তো তারা মনে মনে বলতেন- হে আল্লাহ! তুমি মানুষের দৃষ্টিশক্তি আমাদের দিক থেকে ফিরিয়ে দাও, যেন তারা আমাদের আয়-রোজগার দেখতে না পায় । তাদের চিন্তা-চেতনা এমন ভোঁতা করে দাও, যেন তারা আমাদের গোপন কর্ম সম্পর্কে ধারণা না পেতে পারে। তাদের সত্য ভাষণ দেয়ার ক্ষমতা রহিত করে দাও, যেন তারা আমাদের অন্যায়গুলোর প্রতিবাদ করতে না পারে। আর তাদের অন্তরে আমাদের সম্পর্কে ভয় সৃষ্টি করে দাও, যাতে তারা আমাদের জুলুমকে প্রাধান্য দিয়ে সারাক্ষণ ভয়ে থরথর করে কাঁপে।
নির্বাচনের তোড়জোড়ে ভয় পাচ্ছি- এবারকার সম্ভাব্য প্রার্থীদের আকার-আয়তন এবং সীমাহীন আশা-আকাক্সার বহর দেখে। একজনকে দেখলাম, ১০৬ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধের জন্য তড়িঘড়ি করে বাড়ি বিক্রি করে ব্যাংকে টাকা জমা দিলেন। অন্যজন শত কোটি টাকা খরচ করার জন্য লাফালাফি করছেন। আরেকজন সহাস্যে ঘোষণা দিলেন- সমস্যা সব বুঝে ফেলেছেন, এখন সমাধানের পালা। তিনি দু’টি সমস্যাকে সামনে নিয়ে এসেছেন- এক. ঢাকাতেই নাকি প্রতি বছর পনেরো হাজার মানুষ শ্বাসকষ্টে মারা যায় এবং দুই. ড্রেনের সমস্যা দূর করবেন। বাস্তব ঘটনা হলো- দুটো সমস্যার কোনোটিই সমাধান করার এখতিয়ার নগরপিতার নেই, কেবল দোয়া করা ছাড়া।
আমাদের নগরপিতার বেতনভাতা কত, তা জানি না। তবে আমি মনে করি, নগরপিতার বেতন হওয়া উচিত প্রতি মাসে কমপক্ষে ১২ লাখ টাকা। তার জন্য বরাদ্দ থাকা উচিত সবচেয়ে দামি গাড়ি। বিনিময়ে তিনি তার পুরো সময়, চিন্তা-চেতনা, সততা ও ন্যায়নিষ্ঠা আমাদের জন্য নিবেদন করবেন। ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর বেতন যদি ১২ লাখ টাকা হতে পারে, তবে নগরপিতার হবে না কেন? আমরা এ বিষয়ে যত কৃপণতা করব, ততই সেখানে পুকুরচুরির ঘটনা ঘটবে। অতীতের মেয়রদের দায়িত্ব গ্রহণের আগে সম্পত্তির খোঁজ নিয়ে দেখুন এবং দায়িত্ব শেষে সম্পত্তির হিসাব নিন। দেখবেন, প্রতি মাসে তিনি আয় করেছেন কমপক্ষে ১৫-১৬ কোটি টাকা। এই পরিমাণ টাকা প্রতি মাসে আয় করার জন্য তাকে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা অন্যের জন্য করে দিতে হয়েছে। এসব কারণে নগরবাসীরা যেমন করপোরেশন থেকে সেবা পাওয়ার চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিয়েছেন, তেমনি নিষিদ্ধ উপার্জনের মোহে শত শত কোটি টাকা খরচ করে কেউ কেউ গদি দখলের যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন আগপিছ চিন্তা না করেই।
সার্বিক পরিস্থিতিতে নগরবাসীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা আসলে কী চান? কাকে চান এবং কেন চান? একজন নগরপিতা হবেন আমাদের সবার অভিভাবক। কাজেই আমাদের অভিভাবক কিভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিলের করপোরেট দুনিয়া এবং বায়তুল মোকাররম, হাইকোর্ট মাজার মসজিদ, চকবাজার শাহী মসজিদ ও অন্যান্য স্বনামধন্য উপাসনালয়ের ইমামগণের অভিভাবক হবেন, তা যদি আমরা বিবেচনায় না এনে কেবল মিছিল-মিটিং-পোস্টার-ব্যানারের বহর এবং নগদ নারায়ণের তাণ্ডবে বিমুগ্ধ হয়ে ভোটের বাক্স পূর্ণ করি, তবে শেষ অবধি দেশ-জাতি এবং আসমানের মালিকের কাছে আমাদের জবাবদিহি কেমন হবে?
লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন