ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনে দখলদার ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহণে নির্বাচনের দাবিতে ২০ দলীয় জোটের ডাকে দেশব্যাপী চলমান অবরোধ ও ৭২ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিন ও গণমিছিল সফল করায় নগরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
গতকাল সোমবার বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোটের নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচিতে সরকার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সুনিশ্চিত পতন খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে এখন উন্মত্ত নৃশংসতায় গুম-খুন-গণগ্রেফতার অব্যাহত রেখে দেশে আতঙ্ক ছড়াতে চাচ্ছে। এই নৃশংসতার কারণে ঘাতকদের পরিণতি আরো মর্মস্তুদ হতে বাধ্য। জঙ্গিবাদী সরকারের আতঙ্কবাদী শাসনে সারা দেশ আজ বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই বিচারবহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হচ্ছে। এখনো অনেক নেতা-কর্মী গুম হয়ে আছে। জনগণ যাতে প্রতিবাদ করতে না পারে এজন্য দেখামাত্র গুলী করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। কিন্তু, ঘরে-বাইরে, পথে, অফিসে কেউই আজ নিরাপদ নয়। যখন তখন যাকে তাকে আটক করে পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে চিরতরে পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে। বিরোধী নেতা-কর্মীদের বাসায় যেয়ে নারীদের সাথে অশালীন আচরণ করছে, বাসার আসবাবপত্র, তৈজস ভেঙে ফেলেছে। পারস্পরিক সম্প্রীতির স্বদেশকে আজ মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি মুক্তি পেতেই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটাতে পুরো জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। যে কোন সময় ব্যাপক গণবিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনগণ দখলদার সরকারের পতন নিশ্চিত করবে।
মাওলানা খান আরো বলেন, দখলদার সরকারের পতনের সকল চিহ্ন দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। সরকার যতই নৃশংসতা, দমন, পীড়ন চালাচ্ছে তার অনিবার্য পরিণতিও নিকটবর্তী করছে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে ঘাতকদের প্রতিটি গুম, খুনের বদলা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, বিরোধীজোটের আন্দোলনকে কলুষিত করতেই সরকার নিজেই যে বোমাবাজি করেছে তার সবই ফাঁস হয়ে য্ওায়ায় বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীরা রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে আলোচনা ও সংলাপের তাগিদ দিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার ২০দলীয় জোটের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে দেশব্যাপী যে গণ আন্দোলন গড়ে তুলেছে সেই আন্দোলন দমাতে বিচারবহির্ভূত হত্যা,গুম, গণগ্রেফতার, মিথ্যা মামলায় আটক করে রিমান্ডের নামে চরম নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। জনবিছিন্নতার কারণেই সরকার পুলিশ বাহিনীর নৃশংসতার উপর ভর করে ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে চাচ্ছে। কিন্তু অসহনীয় লোমহর্ষক জুলুমের বিরুদ্ধে পুরো জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। প্রচ- গণবিস্ফোরণের মধ্য দিয়েই জালেম সরকারের পতন ঘটাতে শিগগিরই কার্যকর কর্মসূচি দেয়া হবে।
মহানগরী আমীর বলেন, গণহত্যা, গুম ও গণগ্রেফতার বন্ধ, ২০-দলীয় জোটনেত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ও অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সরকারের তীব্র বাধা, হুমকি-ধমকি, জুলুম-নির্যাতন, গণগ্রেফতার উপেক্ষা করে টানা অবরোধের সমর্থনে পূর্ব ঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচির অংশ হিসাবে রাজধানীর মগবাজার, মহাখালী, রমনা, তেজগাঁও, পল্টন, মতিঝিল, ধানমন্ডি, উত্তরা, ডেমরা, শনির আখরা, শ্যামপুর, কোতোয়ালীসহ বিভিন্ন থানা ও এলাকায় জামায়াতের কর্মীরা মিছিল, পিকেটিং ও রাজপথ অবরোধ করে। অবৈধ সরকার পতনের দাবিতে ২০ দলের আহ্বানে চলমান অবরোধ-হরতাল এবং রোববারের গণমিছিল কর্মসূচিতে সর্বাত্মক অংশগ্রহণের জন্য ঢাকা মহানগরবাসীকে অভিনন্দন জানান মহানগরী আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। সেই সঙ্গে তিনি সরকার পতনের চূড়ান্ত মুহূর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিরোধ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করতে কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী মহল, সাংবাদিক, শিক্ষক-ছাত্র, আইনজীবী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিচারক ও ব্যাংক-বীমার কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষকে রাজপথে নেমে এসে মিথ্যাচার ও কারসাজিকে মোকাবিলা করে অবৈধ, স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী অপশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
দৈনিক সংগ্রামের সৌজন্যে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন