হরতাল-অবরোধের ফলে, পয়েন্ট অব নো রিটার্নের দিকে দুটো রাজনৈতিক দল চলে গেছে। ফলে রাতারাতি সমস্যা সমাধানের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত দুই নেত্রী একত্র হবেন, অথবা দুই নেত্রী একজন আরেকজন দ্বারা পরাজিত হবেন। একজন আরেকজন ধ্বংসপ্রাপ্ত হবেন। দুই নেত্রী একজন আরেকজন দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবেন, এটা প্রায় অসম্ভব বিষয়। কিন্তু তাদের মধ্যে সমঝোতা হতে পারে, তবে দুজন দুজনকে ফিল করতে হবে। আপনি দেখুন কিছু দিন আগের একটা ঘটনা, কোকোর মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী হঠাৎ করে গুলশান কার্যালয়ে চলে গেলেন, যা ছিল অপ্রত্যাশিত পুরো জাতির কাছে। এরকম আশ্চর্যজনক কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। কেননা, দুই নেত্রীই ড্রাইভিং সিটে বসে আছেন।
বেগম জিয়া বিএনপি চালাচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী সরকার চালাচ্ছেন। তার দলকে চালাচ্ছেন। ড্রাইভিং সিটের স্টিয়ারিং-এ, কার কতটুকু ক্ষমতা রয়েছে, উনাদের ছাড়া কেউ বুঝছেন না। তারা একটা সময় বুঝবে, কার কেমন ক্ষমতা আছে। তবে উনারা একটা সময় বুঝবেন, ফুয়েল শেষ হয়ে গেলে তারা ঠিকই তারা একেঅপরের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করবেন, সমঝোতা করার পথ খুঁজবেন। সেটা না আসা পর্যন্ত, আমার মনে হয় আন্দোলন-সংগ্রাম, জ্বালাওপোড়াও, ভাঙচুর করে কিছু হবে। আর একটা অস্থিতিশীল অবস্থা যখন সৃষ্টি হয়, তখন বহু পক্ষ এর সুযোগ হিসাবে নেওয়ার চেষ্টা করে। এখন যে রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, সে রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে বহু দল, উপদল, সুবিধাভোগী শ্রেণী, আজেবাজে লোক, এমনকি সন্ত্রাসী গ্র“প, অপরাধী গ্র“প তারাও এসব কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। কোনো একটা বাসে পেট্রলবোমা মারলে, সেখানে ডাকাতি হতে পারে, এটা কোনো অস্বাভাবিক নয়। একটা মার্কেটে যদি আগুন ধরে যায়, মার্কেটে লুট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যারা এই লুট করার প্রবণতা সম্পন্ন মানুষ, তারা এই জ্বালাওপোড়াও, ভাঙচুরের সুযোগ নিয়ে লুট করার চেষ্টা করে। এরকম পরিস্থিতিতেÑ অপরাধী চক্র, সুযোগ-সন্ধানী চক্রের মানুষেরা এসব কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে, সহিংসতার মাত্রা বিস্তার লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে, যদি এমনটা হয়, তখন আমরা একটা দুঃসহ অবস্থার মধ্যে চলে যাব। একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে আমরা চলে যাব।
লেখক : কলামিস্ট ও সাবেক আওয়ামী লীগ সাংসদ। ইনসাফ এর সৌজন্যে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন