ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০১৫

বাংলাদেশ কী আবারো রাজনৈতিক পতনের দ্বারপ্রান্তে?

বাংলাদেশ কী আরো একবার রাজনৈতিক পতনের দ্বারপ্রান্তে?
বোমা বিস্ফোরণে প্রায় প্রতিদিনই মানুষ মরছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু করেছেন। রাজধানীতে সহিংস বিক্ষোভ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। দেশটি আবার রসাতলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। 
অবশ্যই, অস্থিরতার ফলে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ অচল। সত্তরের দশকের শুরুতে বাংলাদেশ যখন রক্তাক্ত যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভ করেন তখন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের বিখ্যাত ভবিষ্যদ্বাণী ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি ধসে পড়বে (তলাবিহীন ঝুড়ি)। 
কিন্তু বাংলাদেশ তাকে ভুল প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়নি, তবে এর রাজনীতি অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
বন্ধুর যাত্রা শুরুর পর বাংলাদেশর অর্থনীতি দ্রুত বিকশিত হয়েছে। গত দুই দশক যাবৎ দেশটির অর্থনীতির গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ শতাংশ। দেশটি সামাজিক সূচকে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করেছে, এমনকি প্রতিবেশী ভারতের চেয়েও এগিয়ে রয়েছে।
যদি দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করে তবে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশের পথে যাত্রা করতে পারে।
তার পরিবর্তে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। সরকারের বৈধতা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপি প্রাণঘাতী দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছে।

গত আট সপ্তাহে রাজনৈতিক সহিসংতায় প্রায় ১০০ লোক মারা গেছেন। হাজার হাজার লোক আহত হয়েছেন। কোটি কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি বা ধ্বংস হয়েছে। কৃষি উৎপাদনসহ ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ স্থগিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা জনশক্তি ও গার্মেন্ট রপ্তানি মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে নির্বাচন ও রাজনৈতিক উত্তোরণ নিয়ে মৃত্যু ও ধ্বংস নতুন কোনো ঘটনা নয়। দেশটির জন্ম থেকে রাজনৈতিক সহিংসতার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। স্বাধীনতা লাভের পর চার দশকেও কার্যকর গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশে খুব সামান্যই অগ্রগতি হয়েছে। 


নৃতাত্ত্বিক ও ভাষাগত দিক দিকে সমজাতীয় বাংলাদেশে এমন সংঘাতের তেমন কোনো কারণ নেই। অথচ দেশটি জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই রাজনৈতিক সংগ্রামের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে পৃথক হয়েছিল।

বাংলাদেশের আদিপাপ হয়তো নিহিত আছে ১৯৭২ সালে তাড়াহুড়ো করে প্রণীত সংবিধানে, যেখানে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা না রেখেই দেশটির প্রতিষ্ঠাতা প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রভূত ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মধ্যে সদ্ভাব সামান্যই। তবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক নীতিতে অথবা তারা তাদের রাজনৈতিক দল পারিবারিক ব্যবসায়ের আদলে যেভাবে পরিচালনা করেন তাতে তাদের মধ্যে পার্থক্য নেই বললেই চলে। তাদের সরকার নাগরিক, রাজনৈতিক ও মানবাধিকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। স্বেচ্ছাচারী গ্রেপ্তার, বেআইনী হত্যা, বাক স্বাধীনতা হরণ এবং নিপীড়নমূলক কর্মপরিবেশ ক্রমবর্ধমানভাবে বিরাজমান।
নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা তিরোহিত হওয়ায় গণতন্ত্র নাজুক অবস্থায়। এখানে কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী স্বৈরতান্ত্রিক প্রেসিডেন্টর ক্ষমতা ভোগ করতে পারেন।
দুই নেত্রীই সরকার পরিচালনায় অযোগ্য প্রমাণিত হয়েছেন। তাদের প্রশাসনে দুর্নীতি। বিশ্বের শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। দুর্নীতি নিয়ে উদ্বেগ থাকায় ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক দেশের দীর্ঘতম সেতু পদ্মা সেতুতে ঋণ বাতিল করে দেয়।

ক্ষমতায় থাকতে উভয় দলই নির্বাচনে কারচুপি ও অন্যকে বাদ দেয়ার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করে। বর্তমান সংকটের সৃষ্টি ২০১১ সালে যখন শেখ হাসিনা ১৫ বছর ধরে বিদ্যমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা সংবিধান সংশোধন করে বাতিল করে দেন।
ভোট কারচুপির আশঙ্কায় বিএনপি ও তার মিত্ররা ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচন বর্জন করে। এরফলে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৪টিতে কোনো ভোটই হয়নি।
সরকার বিরোধী নেতাদের হয়রানি করছে। বিএনপির প্রধান মিত্র জামায়াতকে ধর্মীয় উগ্রপন্থার অভিযোগে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এসবে আগুন নেভানো যায়নি।

বর্তমান সংকটের পরিণতি যাই হোক না কেন পরিস্থিতির উন্নতির আশা নেই। সরকার যদি বিরোধীদের নির্মূল করতে সফল হয় তবে এই ক্ষত সারতে কয়েক দশক না লাগলেও বহু বছর লেগে যাবে।
অন্যদিকে দেশের শাসন ব্যবস্থার সমস্যা পূরণ করতে না পারলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সমঝোতা হলেও তাতে সাময়িক পরিত্রাণ মিলবে মাত্র।
দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের গভীর সংস্কার। সরকার ও বিরোধী দলের আন্তরিক সহযোগিতা ছাড়া এটা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
প্রথম পদক্ষেপ হতে অবশ্যই উভয়পক্ষের মধ্যে আন্তরিক সংলাপ। অন্যথায় বর্তমান সংকট ভয়াবহ নৈরাজ্য ডেকে আনতে পারে।
এছাড়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যদি তাদের সংগঠনে পেশাদারিত্ব না আনে এবং দুর্নীতি দূর না করে তবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি টেকসই হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

দা জাপান টাইমসে মর্গান স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ পলিসি রিসার্চ ইন্সটিউটের ডিস্টিংগুইশড ফেলো এম.জি. কিবরিয়ার লেখা নিবন্ধ। ভাষান্তর: ফাতিমা ফেরদৌসী আশা। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন