“জাতীয় জীবনে ৭ নভেম্বর এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৭৫ সালের এ দিনে জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ত্ব রক্ষায় সৈনিক-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে এসেছিলেন সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে। ৭ নভেম্বরের চেতনা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রেরণার উৎস।
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের রাজনীতি ক্রমেই কর্ত্ত্বত্ববাদী হয়ে ওঠার এক পর্যায়ে একদলীয় বাকশালী একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা রূপ পেয়েছিল। এমনি এক প্রেক্ষাপটে মতাদর্শগত কোন্দল যখন চরমে উঠেছিল তখন আওয়ামী লীগেরই একটি বৃহৎ অংশ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট একটি অভ্যুত্থান সংগঠিত করে ক্ষমতা দখল করে। এরই ধারাবাহিকতায় ঐ বছরের ৩ নভেম্বর সেনাবাহিনীর একটি অংশ আধিপত্যবাদের ভাবনায় প্ররোচিত হয়ে তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে স্বপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করে।
দেশবাসী ও সশস্ত্রবাহিনীর দেশপ্রেমিক সদস্যগণ উপলব্ধি করতে পারেন-জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ত্বকে ভূলুন্ঠিত করার জন্যই এই চক্রান্ত করা হয়েছে।
ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তকে রুখে দেয়ার জন্য অকুতোভয় সৈনিক-জনতা এক ইস্পাত কঠিন ঐক্যে শপথবদ্ধ হন ৭ নভেম্বর এক ঐতিহাসিক বিপ্লব সংগঠনের জন্য। তারা বন্দীদশা থেকে মুক্ত করেন তাদের প্রিয় সেনাপতিকে।
এই ঐতিহাসিক পট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশ নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। বহুদলীয় গণতন্ত্র পূণ:প্রতিষ্ঠিত হয়।
দেশ যখন অপশাসনে নিপতিত হয় তখন গণতন্ত্র, স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল্যবোধ-অঙ্গীকার হুমকির সম্মুক্ষীণ হয়। বাংলাদেশে এখন একটি বিনাভোটের সরকার ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত। তারা দমন-নিপীড়ণের মধ্য দিয়ে জনগণের কন্ঠ রোধ করে দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে শুধুই ক্ষমতায় থাকতে এখন বিভোর হয়ে উঠেছে।
এই দু:শাসনের অবসান হওয়া জরুরী। জনগণ যদি অবাধে ভোট দেয়ার অধিকারটুকু ফিরে পায় তাহলেই তারা স্বৈরাচারী শাসনের বিপক্ষে তাদের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারবেন।
আমি মনে করি, ৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”
-বেগম খালেদা জিয়া
চেয়ারপার্সন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি
৬ নভেম্বর ২০১৫, লন্ডন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন