ট্রাবুন্যালের ফাঁসিকে কেন্দ্র করে গোটা বাংলাদেশ এখন ফাঁসির জাত। সর্বত্রই ফাঁসির উল্লাসে ফেটে পড়া অজগরের বিষাক্ত এক উম্মাদ জাতি। মানুষের জান নিতে এতো উল্লাস আমি জীবনে দেখিনি।
বহু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে গেলো ২০ বছরে। কম্বোডিয়া, সুদান, বসনিয়া, লিবিয়ার মতো দেশগুলোর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অনেকেই জানেন। কিন্তু এসব কি হচ্ছে বাংলাদেশে?
টেলিভিশন খুললেই ফাঁসির দড়ি, যমটুপি, তওবা পড়ানো, শেষ খাবারের মেন্যু, পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা, মৃত্যুপরোয়ানা, ফাঁসির মঞ্চে ওঠানো, মৃত্যুকূপের ছবি, টেবিল-চেয়ারের বর্ণনা, ফাঁসির মহড়া, জল্লাদের উইকিপিডিয়া, এম্বুলেন্সের আগমন, সিভিল সার্জনের ঘড়ি, কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে হাজার হাজার মৃত্যু প্রত্যাশি মানুষের গানবাজনা। এর মধ্যেই জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত, অপ্রাপ্ত বয়স্ক সাংবাদিক লীগের মুখে ইঁদুর মারার খবর।
অদূরেই মিষ্টি এবং ফুলসহ গণজাগরণ মঞ্চের পাগলাগারদ। উম্মাদগুলো, বাদরের মতো চিৎকার করে যা বলছে, আমার কোনই সন্দেহ নেই, মাখন চলে যাওয়ায় এই দেশ এখন ঘোল।
টেলিভিশন খুললেই ফাঁসির দড়ি দেখতে দেখতে প্রশ্ন করি, পাইকারী লাইসেন্স দেয়ার কারণ কি এটাই? সারা বছর জুড়েই ফাঁসির খবর প্রচার করতে হবে? মনে হচ্ছে, আজরাইল লীগ, হাম্বা লীগ, আফ্রিকান মাগুর লীগের সঙ্গে জল্লাদ লীগ, ফাঁসি লীগ, গোরখাদক লীগ, চিৎকার লীগ, সাংবাদিক লীগ, টেলিভিশন লীগও থাকবে। আমার কথা মিথ্যা হলে, টেলিভিশনে এইগুলো কি?
টেলিভিশন একটি বহু মাত্রিক প্রচার মাধ্যম কিন্তু বাংলা টিভি খুললেই ফাঁসি নিয়ে যে উম্মাদনা, ৪র্থ পর্যায়ে ক্যান্সারও এদের চেয়ে অধিক নিরাপদ। এমনকি পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণও কম মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফাঁসি লীগ সমপ্রদায়কে সৃষ্টি করে দিল্লি-ঢাকা--ভারত দেশটাকে এক হাড়ি ঘোল বানিয়ে ফেলেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন