আরটিএনএন ওয়াশিংটন: বাংলাদেশের দুজন ‘প্রভাবশালী বিরোধী রাজনীতিকের’ বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার পর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সমালোচনা আরো শানিত করছে।
বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে শুক্রবার একথা বলা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি দেখভালকারী আইনপ্রণেতারা ট্রাইব্যুনালকে ‘অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ’ এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার বলে বর্ণনা করছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অতটা কড়া অবস্থান নেয়নি। শুক্রবার পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড স্পষ্টভাবে বজায় রাখা না পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকর করা উচিত হবে না।
গত আগস্ট পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক দূতের দায়িত্ব পালনকারী স্টিফেন র্যাপ বলেছেন, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী অপরাধ সংঘটনের সময় দেশে ছিলেন না বলে তার পক্ষে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত সাক্ষী দিতে চাইলে তা গ্রহণ না করায় তিনি ‘বিরক্তবোধ’ করছেন।
প্রতিবেদনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতির কথা উল্লেখ করে বলা হয়, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ৪১জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়ার আবেদন করলেও মাত্র ৪জনের সাক্ষী নেয়া হয়। অন্যদিকে জামায়াতে নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ তার অধীনস্তদের অপরাধে উসকানি দিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলা হলেও তার কোনো অধীনস্তকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা কিংবা তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত দেশটিতে ট্রাইব্যুনালের বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে যে অভিযোগ রয়েছে তা অস্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলাদেশে ‘গণতান্ত্রিক স্থান সংকুচিত হয়ে পড়েছে’ এবং দেশটিতে ‘সহিংসতার মাত্রা, আতঙ্ক এবং সেলফ-সেন্সরশিপ ক্রমবর্ধমান।’
এপি জানায়, মঙ্গলবার মার্কিন আইন প্রণেতারা দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক শীর্ষ কূটনীতিকের কাছে লেখা এক চিঠিতে চলতি বছর সেক্যুলার লেখক ও ব্লগারদের বিরুদ্ধে মুসলিম উগ্রবাদীদের ভয়াবহ হামলার ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলায় বাংলাদেশের নেতাদের সমালোচনা করেছেন।
মুসলিম প্রধান সেক্যুলার বাংলাদেশে এ ধরনের উগ্রবাদী সহিংসতা আগে দেখা যায়নি।
এপ্রির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করলেও গত কয়েক দশকে দেশটির সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সাহায্যকারী দেশ এবং রপ্তানি বাজার।
তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনকালে রাজনৈতিক বিরোধীদের প্রতি আচরণ এবং সুশীল সমাজের কাজ নিয়ে সম্পর্কে তিক্ততা দেখা দিয়েছে। গার্মেন্ট শিল্পে বিপর্যয়ের কারণে শত শত লোকের মৃত্যুর পর শ্রমিকদের কর্ম পরিবেশের উন্নয়তে বাংলাদেশকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দেয়া বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) ২০১৩ সালের মাঝামাঝি স্থগিত করে দেয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন