ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৫

জনসমর্থন বাড়ছে জামায়াতে ইসলামীর...


শত অত্যাচার নির্যাতনের পরও দেশে ইসলামপন্থীদের পক্ষে জনসমর্থন বাড়ছে। বিশেষ করে দেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী রাজনৈতিক শক্তি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে বিগত দুই বছরে জনসমর্থন দ্বিগুণ বেড়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বিগত পর্যবেক্ষণ এবং সম্প্রতি প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) পরিচালিত জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। জরিপটি পরিচালনা করেছে নিয়েলসন-বাংলাদেশ।
গত মে ও জুন মাসে আড়াই হাজার প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের ওপর চালানো এই মতামত জরিপের একটি প্রশ্ন ছিল আপনি কি জামায়াতে ইসলামীকে পছন্দ করেন, এই প্রশ্নের উত্তরে শতকরা ২৫ জন ইতিবাচক উত্তর দিয়েছেন। অর্থাৎ তারা জামায়াতে ইসলামীকে পছন্দ করেন। অথচ মোট প্রাপ্ত ভোটের হিসাব বিবেচনা করে গত ২০১৩ পর্যন্ত রাজনীতি বিশ্লেষকদের প্রতিটি প্রতিবেদনেই তারা বলেছেন, জামায়াতের জনসমর্থন শতকরা ১২/১৩। এই হিসেবে দলটির জনসমর্থন দ্বিগুণ হয়েছে।
অথচ ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সাল থেকে নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বড় এই ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর অকথ্য নির্মম নির্যাতন অব্যাহত আছে। বিরামহীন অপপ্রচার, ভিত্তিহীন অভিযোগ, হয়রানি, মিথ্যামামলা, গ্রেফতার, রিমান্ড, নির্যাতন, ফাঁসি, গুম, খুনসহ হেন কৌশল অপকৌশল নেই যা জামায়াতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে না। তারপরও দলটির এগিয়ে যাওয়া এর বিরোধী শক্তির মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে বর্তমান সরকার সর্মথক দেশী-বিদেশী একদল গবেষক। এই গবেষক দলে কয়েকজন আরবি শিক্ষিত অভিজ্ঞ ব্যক্তিও আছেন। দেশ-বিদেশে তারা আলেম হিসেবেও পরিচিত।
সরকারের অত্যাচার নির্যাতন প্রভাব ঠেকাতে পারবে না: সরকরারের অত্যাচার নির্যাতনের ফলে দলটির প্রতি জনগণের সমর্থন বাড়বে। অত্যাচার নির্যাতন করে সরকার ভুল করছে এমন ইঙ্গিত ২০১৩ সালেই দিয়েছিলেন ইরানের এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক পির মুহাম্মদ মোল্লাযেহি। ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর রেডিও তেহরান সূত্রে প্রকাশ, পির মুহাম্মদ মোল্লাযেহি বলেন, ‘বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে দেশটির সরকার।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে দৈনিক কুদসে ‘বঙ্গে বিদ্রোহ’ শীর্ষক এক নিবন্ধে তিনি লিখেন, ‘সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী গণভিত্তি শক্তিশালী করতে সম হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এ কারণে অতীতে ফিরে গিয়ে গোত্রীয় প্রতিশোধ পরায়ণতার ধাঁচে উদ্বেগ নিরসনের চেষ্টা করছেন শেখ হাসিনা। তিনি জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিচার ও ফাঁসির মাধ্যমে দলটির প্রভাব ঠেকাতে চাইছেন।
ইরানি এই বিশ্লেষক প্রশ্ন করেছেন,‘শেখ হাসিনা কি এর মাধ্যমে হিসাব-নিকাশের ক্ষেত্রে কৌশলগত ভুল করেননি? তার মতে, চল্লিশ বছর আগের ঘটনা সামনে আনার কোন প্রয়োজন ছিল না। কারণ যে জাতি তার অতীতের তিক্ত ঘটনাগুলোকে ভুলে না গিয়ে বারবারই সেগুলোকে সামনে নিয়ে আসে, সে জাতি টেকসই উন্নয়ন করতে পারে না। বিশ্লেষক মোল্লাযেহি আরো বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর মতো মধ্যপন্থী একটি দলকে দুর্বল করা হলে উগ্র মতাবলম্বীরা সহিংসতার মাধ্যমে দেশকে বিশৃঙ্খলা ও গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।’
বামপন্থী ঘরানার একজন সাংবাদিক ও কলামিস্ট জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের মনোভাব সম্পর্কে বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনী রাজনীতিতে থাকার ফলে বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদী জঙ্গি সৃষ্টি কম হচ্ছে। যারা ইসলামের নামে রাজনীতি করে তাদের নিয়মতান্ত্রিক বা নির্বাচনী রাজনীতিতে আনতে হবে। যদি জামায়াতে ইসলামীকে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়া হয় তাহলে ইসলামী দলগুলোকে নির্বাচনী রাজনীতিতে আনা কঠিন হবে।
তারা নিয়ন্ত্রেণের বাইরে চলে যাবে, আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো এ কথা বিশ্বাস করে, তাই তারা জামায়াত নিয়ে সরকারের অবস্থানে সন্তুষ্ট নয়। মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের বিভিন্ন ত্রুটি দেখিয়ে দিতে আমেরিকার যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক দূত স্টিফেন জে র‌্যাপ একাধিকবার বাংলাদেশে এসেছেন। সরকারকে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন।
সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেও বাংলাদেশ সম্পর্কে কড়া মন্তব্য করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিশেষ পুলিশ বাহিনীর কড়া পুলিশি অভিযানে মারাত্মক বলপ্রয়োগ করার ঘটনা ঘটেছে যেখানে অনেক প্রাণহানী হয়। এতে দেশের জাতীয় আইন, আভ্যন্তরীণ বিধি বিধান ও প্রশিণ নথিপত্র থেকে উদাহরণ উপস্থাপন করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি সরকারের প্রতি নতুন এ দিকনির্দেশনা ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে। নতুন এ দিকনিদের্শনার এক প্রণেতা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ড. আনিয়া বাইনার্ট বলেন, পুলিশকে যে চ্যালেঞ্জিং, এমনকি বিপজ্জনক দায়িত্ব পালন করতে হয়, তাতে কারো দ্বিমত নেই। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, শুধু আইনগতভাবে বল প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য একটি কাঠামো তৈরি করতে ব্যর্থ হয় সরকার ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপগুলো।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকার আমেরিকা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মুসলিম বিশ্বের মনোভাব বুঝতে পারছে না অথবা ক্ষমতার মোহে জেগে জেগে ঘুমাচ্ছে। অর্থাৎ ইচ্ছে করেই বুঝতে চাচ্ছে না। মিত্ররা কূটনেতিক শিষ্টাচারের কারণে সরাসরি কোন বক্তব্য না দিলেও আচরণে এবং তাদের দেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, মিডিয়া এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক- গবেষকদের মাধ্যমে সতর্ক বার্তা দিচ্ছে,‘ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী ইসলামপন্থী সবচেয়ে বড় দল জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন এবং ক্রসফায়ারসহ বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তারা নাখোশ। তারা আরো বুঝতে পারছে, অত্যাচার নির্যাতনের ফলে জামায়াত জনগণের সহানুভূতি পাচ্ছে এর ফলে সমাজের সর্বস্তরে দলটির প্রভাব বাড়ছে।

জনগণের প্রতিক্রিয়াঃ

আবদুল বাতেন একজন ড্রাইভার তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘সব দল দেখলাম। বিএনপি, আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির শাসন দেখা শেষ এবার জামায়াতকে দেখতে চাই। জামায়াত কি করে দেখা দরকার। আগামী নির্বাচনে জামায়াতকে ভোট দিবো।’ জামায়াতকে যদি সরকার কূটকৌশলে নির্বাচনের বাইরে রাখে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তারা যে নামেই আসুক ভোট দিবো। স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে তো পারবে।’ তারা তো প্রকাশ্যে কাজ করতে পারছে না ভোটে দাঁড়াবে কিভাবে? এ প্রশ্নের উত্তরে আবদুল বাতেন বলেন, তারা যেখানেই থাকুক জনগণ পাশে থাকলে কেউ ঠেকাবার পারবো না।
তোতা মিয়া একজন ুদ্রব্যবসায়ী। তিনি কোন দল করেন না। রাজনীতিতে তেমন আগ্রহ নেই। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘টিভিতে যখন দেখি, দাঁড়ি টুপিওয়ালা মাওলানা মৌলভীদের হাতকড়া পরিয়ে পুলিশ টেনে নিয়ে যাচ্ছে, দুই চোখে পানি আসে। এই দৃশ্য আর দেখতে ইচ্ছে করে না। কারা মারামারি করে চাঁদাবাজি করে মানুষ মারে আমরা তো দেখি, তারা তো এই দেশ সমাজের বাইরের কেউ না। পুলিশ কোন ভালো মানুষকে ধরে সন্ত্রাসী বললেই কি আর মানুষ বিশ্বাস করে। করে না। তারা ভাত খায়। ভালো-মন্দ বুঝে।’

তমাল হাসান একজন ছাত্র। তিনি ঢাকার একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। তার জবাব সোজাসাপ্টা,‘ ভারত আমাদের দেশটা নিয়ে যা করছে, তাতে আমরা এত বিরক্ত যে, ভাবতে কষ্ট হয়, এরা কি সত্যি সত্যি বন্ধুত্বের টানে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল, নাকি অন্য কোন রহস্য আছে এই বিষয়টা জানতে আমি গাবেষণা শুরু করেছি। জামায়াত-শিবিরের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে তার একশতভাগ কারণ রাজনৈতিক। আমি এমন অগণতান্ত্রিক আচরণ সমর্থন করি না। তিনি আগামী নির্বাচনে জামায়াতকে ভোট দিবেন কি না এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে বলেন,‘ তা সময়েই বলে দিবে।’
আজ থেকে প্রায় ২২ বছর পূর্বে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ২ শতাধিক আসনে জামায়াত ১২.১৩ শতাংশ ভোট পায়। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহনদের হিসেবে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক ২৫% (অর্থাৎ ৪ কোটি)। জামায়াতের প্রকৃত ভোট ব্যাংক কত তা নিরুপণ করা কঠিন। কারণ সত্যিকার অর্থে কোনো নির্বাচনেই দেশের সবগুলো আসনে দলটি অংশ নেয়নি। একমাত্র ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলাম সবগুলো আসনে অংশ নিলেও কৌশলগত কারণে নৌকা ঠেকাতে তারা অধিকাংশ আসনে ধানের শীষে ভোট দেয়।

এম আলম নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আজ থেকে ২২ বছর পূর্বে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ২ শতাধিক আসনে ১২.১৩ শতাংশ ভোট পেলেও তাদের জনসমর্থন ছিল আরো বেশি। কারণ ৯১ এর নির্বাচনে ১০০’র মতো আসনে জামায়াতের কোনো প্রার্থী ছিল না। তাছাড়া ২০০’র মতো আসনে জামায়াতের দলীয় প্রার্থী থাকলেও বাছাইকৃত কিছু আসন ছাড়া অন্যান্য আসনে নৌকা ঠেকাতে তাদের ভোট যায় বিএনপির ঘরে। আর ২২ বছরে দেশে জামায়াতের প্রভাব বলয় তাদের কর্মী ও সমর্থকও জ্যামিতিক হারে বেড়েছে। বিগত নির্বাচনের তুলনায় প্রতিটি নির্বাচনেই প্রধান ইসলামী দল জামায়াতের মোট ভোট বেড়েছে। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে ৪.৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে জামায়াত আসন পায় ১০টি, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ১২.১৩ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় ১৮টি, ১৯৯৬ সালে প্রাপ্ত ভোট ছিল ৮.৬১ শতাংশ। ২০০১ সালে ৪.২৯ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় ১৭টি আর ২০০৮ সালে ৩৮টি আসনে ৪.৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে জামায়াত পেয়েছে ২টি আসন। তবে ২০০৮ এর নির্বাচনে ৩৮টি আসনে নির্বাচন করে প্রতি আসনে গড়ে ৮৮ হাজারের উপরে ভোট পায় যা কিনা বিগত ২০০১ এর নির্বাচনে তাদের প্রাপ্ত ভোটের চেয়ে বেশি। বিগত উপজেলা নির্বাচনেও প্রমাণ হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর জনসমর্থন বেড়েছে।

মুক্তিকামী মানুষের শেষ ভরসাঃ

২০ দলীয় জোটের প্রধান শক্তি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলনে ২০ দলের শরীকদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করে জনমনে জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্কে নতুন আশার স্বপ্ন ঝিলিক দিচ্ছে। তারা জাাময়াতে ইসলামীকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী চেতনায় বিশ্বাসী বিএনপির একটি অংশ ইতোমধ্যেই দলকে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া মুক্ত করে হলেও দ্রুত নির্বাচনের জন্য সরকারকে চাপ দিচ্ছে। তাদের এই ঘোষণার ফলে দলের ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী অংশ মনে করছে জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্বের ড্রাইভিং সিটে বসালে অবস্থা দ্রুত বদলাতে পারে। জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক ও আদর্শিক ভিত্তি এবং বিএনপি’র জনসমর্থনকে কাজে লগিয়ে সামনে অগ্রসরন হলে সরকার বিরোধী আন্দোলন নতুন গতি পাবে এতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ মুক্তিকামী জনগণ তাদের শেষ ভরসা হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর দিকে তাকিয়ে আছে।
২০ দলের একটি সূত্র জানায়, বিএনপি জামায়াতসহ জোটের শরীকরা মিলেই জোট পরিচালনা করছে। জাতীয় রাজনীতিতে যার যার অবস্থান অনুসারেই তারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জামায়াত তার অবস্থানে আছে বিএনপিও তার অবস্থানে আছে এনিয়ে বিভ্রান্তির কোন অবকাশ নেই। জাতীয় সংকট উত্তরণে ঐক্যের বিকল্প নেই। দেশটা কোন বিশেষ দলের নয়, জনগণের তাদের মতামতের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনার জন্য প্রয়োজন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।
বিএনপির মুখপাত্র ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, “আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ বিভাজনের রাজনীতির অবসানের কথা উল্লেখ করে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা তার বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। তবে সরকার বিভাজনের রাজনীতি অবসানে আন্তরিক নয়। তারা একদিকে মুখে বিভাজনের রাজনীতি অবসানের কথা বলছে অন্যদিকে বিরোধী কর্মীদের ওপর দমন নির্যাতন চালাচ্ছে।”

ড.রিপন বলেন, “বিভাজনের রাজনীতি অবসান করতে হলে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ।” সংলাপের মধ্য দিয়ে বিদ্যমান রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগরী আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, দেশের জনগণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে পুনর্বহালের দাবিতে আজ ঐক্যবদ্ধ। সরকার জনগণের সেই দাবি বাস্তবায়ন না করে দেশকে গভীর সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সরকারের মনে রাখা দরকার, বহু আন্দোলন সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সন্নিবেশিত হয়েছিল। জনগণ আজও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে সোচ্চার। সরকার জনগণের সে দাবি বাস্তবায়ন না করে সংবিধানের দোহাই দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে পুনর্বহাল করবে।

আইআরআইয়ের এই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৭ শতাংশ বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা উচিৎ। অন্যদিকে মাত্র ২২ শতাংশ উত্তরদাতা এর বিরোধিতা করেছেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে যখন নির্বাচন হয়, ওই মাসে আইআরআইয়ের জরিপে ৭৭ শতাংশ উত্তরদাতা তত্ত্বাবধায়কের পে এবং ১৮ শতাংশ বিপে বলেছিলেন।
আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হলে জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেয়ার সুযোগ পাবে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, সেই সময় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে জনগণের সমর্থন বাড়ার বিষয়টি আরো সুষ্পষ্ট হবে। সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হলে ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের স্টিমরোলার বন্ধ করে গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। এক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ হলে দায় বাড়তে বাড়তে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ শুধু গণতান্ত্রিক চরিত্রই হারাবে না, গণবিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের ফাদার সংগঠন মুসলিমলীগে পরিণত হবে।

সূত্রঃ সোনার বাংলা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন