নেচে-গেয়ে, স্লোগানে জয়ের উৎসব। মুখে মুখে একই ধ্বনি। বাংলাদেশ। উৎসবের আবহ ছিল সারা দেশজুড়ে। ক্রিকেট দলের বিস্ময়কর বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা ছিল সারা দেশ। টানা দুই মাস ধরে উদ্বেগ আর আতঙ্কে থাকা মানুষ একসঙ্গে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে ওঠে শহর-বন্দর-গ্রাম।
রাজধানীতে জয় উদযাপনে সবচেয়ে বড় জমায়েত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে। জয় নিশ্চিতের পরপরই শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলগুলো থেকে মিছিল নিয়ে বেরিয়ে আসেন রাজপথে। অল্প সময়েই কানায় কানায় পরিপূর্ণ টিএসসি ও রাজু ভাস্কর্য এলাকা। মুহূর্তেই ওই এলাকা হয়ে উঠে উৎসবের রঙিন এক ক্যানভাস। গায়ে রঙ মেখে উল্লাসে শামিল হন হাজারো মানুষ। গায়ে লাল-সবুজ পতাকা জড়িয়ে স্লোগানে স্লোগানে একটাই শব্দ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ। হ্যাপি বাংলাদেশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরী, ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এই উচ্ছ্বাসে যোগ দেয়। কেউ ফানুস ওড়িয়ে, কেউ মশাল মিছিল, কেউ বিজয়ের স্লোগান, একপাশে দেশের গান, কেউ নাচছে, কেউ গাইছে, এ যেন সত্যিকারের বিজয় উল্লাস। পুরো ক্যাম্পাস জুড়েই শুধু উৎসবের আমেজ। সবার মুখে মুখে ছিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অসাধারণ এই জয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন পথচারীরাও। নেচে-গেয়ে সবাই প্রিয় দেশের খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান। একই সঙ্গে সামনের খেলাতে বাংলাদেশ দলের সাফল্য কামনা করেন তারা। গতকালের খেলায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়ে যায় কিনা- এই দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু বোলিং নৈপুণ্যে অসাধারণ এক জয় মুহূর্তেই ভুলিয়ে দিলো সব দুশ্চিন্তা। গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী উত্তম উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, রুবেলের কারণেই আজকে আমরা জিতেছি। আজকের খেলায় বাংলাদেশ দেখিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অসাধারণ এই জয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন পথচারীরাও। নেচে-গেয়ে সবাই প্রিয় দেশের খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান। একই সঙ্গে সামনের খেলাতে বাংলাদেশ দলের সাফল্য কামনা করেন তারা। গতকালের খেলায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়ে যায় কিনা- এই দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু বোলিং নৈপুণ্যে অসাধারণ এক জয় মুহূর্তেই ভুলিয়ে দিলো সব দুশ্চিন্তা। গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী উত্তম উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, রুবেলের কারণেই আজকে আমরা জিতেছি। আজকের খেলায় বাংলাদেশ দেখিয়ে দিয়েছে।
কোয়ার্টার ফাইনালে আমরা ভারতকে হারাতে পারবো মনে হচ্ছে। ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী বিদ্যুৎ বলেন, এই জয় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বকাপের আসরে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠছে। আমাদের প্রত্যাশা আমাদের টাইগাররা তাদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার বলেন, বাংলাদেশ প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ভাল খেলেছে। আমরা দুর্বল দল নই, সেটা এই জয়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো। এদিকে বাংলাদেশ দলের জয়ে সারা রাজধানীজুড়ে অলিতে-গলিতে মিছিল করেছেন ক্রিকেট ভক্তরা। জাতীয় পতাকা নিয়ে নেচে-গেয়ে তারা জয় উৎসবে শামিল হন।
বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে দেশজুড়ে আনন্দ মিছিল করেছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা আনন্দ মিছিলের সংবাদ পাঠিয়েছেন। সোমবার বিকালে মাগুরায় বিজয় উৎসব করেছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। ইংল্যান্ড দলকে উড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিতের খবর টেলিভিশনে দেখার সঙ্গে সঙ্গে সাকিবের জেলা মাগুরায় ক্রিকেট ভক্তরা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। এ সময় বিভিন্ন বয়সের মানুষ রঙ মেখে রাস্তায় নেমে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর আনন্দে পাবনায় মিছিল করেছে ক্রিকেটপ্রেমীরা।
সন্ধ্যায় বাংলাদেশের ১৫ রানে জয় নিশ্চিত হতেই রাস্তায় নেমে আসে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। ইংল্যান্ডের শেষ উইকেট পতনের সঙ্গে সঙ্গেই শিশু-কিশোর ও যুবকরা বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে মিছিলে বেরিয়ে পড়ে। এ সময় বাংলাদেশ, বাংলাদেশ স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে গোটা শহর। টাইগারদের জয়ে রাজশাহীতে উল্লাসে ফেটে পড়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের পর রাজশাহীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, নিউমার্কেট, গৌরহাঙ্গা রেলগেট, তালাইমারী, অকটো মোড়, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল বের হয়। সমর্থকরা ঢোল, ড্রাম, কাঁসার থালাসহ হাতের কাছে যা ছিল তাই নিয়েই রাস্তায় নেমে পড়েন। দীর্ঘ দিন ধরে ক্রিকেট সমর্থকরা যেন এমন একটি মুহূর্তের জন্যই অপেক্ষায় ছিল। রুবেলের বলে বোল্ড আউটের পর গোটা শহর ভেসে ওঠে বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস আর আনন্দে। উচ্ছ্বসিত জনতার স্রোত ছড়িয়ে পড়ে মহানগরের শালবাগান, কাদিরগঞ্জ ও শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায়ও। মুখে একটাই স্লোগান বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন