ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ স

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট দক্ষিণগাও বাজার এর পক্ষ থেকে সকল গ্রাহক, শুভাকাংখীসহ সবাইকে জানাই সালাম শুভেচ্ছা। এইগ্রুপে যারা আছেন তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার এলাকারসকলকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে রেমিটপন্স পাঠানোর আহবান জানাচ্ছি। রাজারবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিনগাও, শাহীবাগ, মানিকদিয়া, বাইকদিয়া, নন্দিপাড়াসহ সকল এলাকার গ্রাহক, শুভাকাংখী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলোঃ ০১৭১১-৪৫৮১৫১, ০১৭০০৯২৫২৪১

মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০১৫

আওয়ামী শাসনামলে নামাযী ও পর্দানশীন নারীর যত অপমান!!! -ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম

পৃথিবীতে ইসলাম নারীকে সবচেয়ে বেশি অধিকার ও মর্যাদা দিয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন প্রথমে কন্যা সন্তান প্রসব করায় মায়ের সৌভাগ্য নিহিত আছে। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি নবী করীম (সা.) এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূূল আমার কাছ থেকে সুন্দর আচরণের সবচেয়ে বেশি হকদার কে? তিনি বললেন, তোমার মা। আগন্তুক জিজ্ঞেস করলেন, এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। পুনরায় উক্ত ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, এরপর কে? নবী করীম (সা.) বললেন, তোমার পিতা। (বোখারী)। কিন্তু সেই মায়ের জাতিকে সবচেয়ে অপমান, অপদস্থ করছে আওয়ামী লীগ। ঢাবিতে “জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে বিভিন্ন হল থেকে রাতে নামাযরত ছাত্রীদের আটক করেছে ছাত্রলীগ।” খবরটি দেখে একটু আঁতকে উঠলাম এই জন্য আরো জঙ্গি সম্পৃক্ততার সেই পুরনো নাটক মঞ্চস্থ করছে ঢাবি প্রশাসন? অবশ্য এ জাতীয় মিথ্যাচার এখন একেবারেই সেকেলে। এঅভিনয়ে অংশ নিয়েছে-ছাত্রলীগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রক্টর এবং ভিসি মহোদয় নিজেই। ঢাকা বিশ¡বিদ্যালয়ের হলে তল্লাশি করে বিভিন্ন বিভাগের অসংখ্য ছাত্রীকে আটক করেছে ছাত্রলীগ ও প্রশাসন। 
ঘটনার বিবরণে বলা হয় ২ নবেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা নামাযের রুমে ঘাপটি মেরে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকে। উদ্দেশ্য কারা নামায পড়তে আসে তা জানা। নামাযের রুমের পাশের এক ছাত্রী রোজা রাখতে উঠলে সন্দেহের ভিত্তিতে তার রুম সার্চ করে। দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে আটক করে ছাত্রলীগের নেত্রীর রুমে নিয়ে যায়। এদিকে নামাযের রুমে নামায পড়তে আসা একজনকে আটক করে। এরপর শুরু হয় পুরো হল তল্লাশি। হলগেটে দারোয়ানদের কাউকে বের হতে না দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয় ছাত্রলীগ। সারাদিন সবাই মিলে মারধর করে কোন তথ্য বের করতে না পেরে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও কোন তথ্য না পেয়ে বিকেলে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করেন প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত দুইটায় ছেড়ে দেয়। অপর দুইজনকে গার্ডিয়ান ডেকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এভাবে গত কয়েকদিনে ২১ ছাত্রী গ্রেফতার ও লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটে। আটককৃতরা বিভিন্ন ইসলামী ও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছে প্রশাসন ও ছাত্রলীগ। অনেক ছাত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং মারধর করার মত অমানবিক ও জঘন্য কাজটি করতেও ছাত্রলীগ দ্বিধা করেনি। আইনশৃংঙ্খলা ঠিক রাখতে যে কোন সময় হলে তল্লাশি করার রাইট আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। কিন্তু ছাত্রলীগ আইনের কোন ধারা মতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে এ অভিযানে অংশগ্রহণের অধিকার লাভ করলো? তা আমাদের বোধগম্য নয়। তাহলে আমরা কি ধরে নেব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিচালনা করছে ছাত্রলীগ? অথবা ছাত্রলীগের কাছে ঢাবি প্রশাসন অসহায় কিংবা স্বেচ্ছায় নির্বিকার। 
অনেক সাধারণ নামাযী, হিজাব পরা ছাত্রীদের লাগানো হচ্ছে জঙ্গি তকমা। কারণ তত্ত্ব দিয়ে সহজেই রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা যায়। জঙ্গি, ইসলাম বললেই তার সাথে সকল অমানবিক আচরণকেই সরকার আর একশ্রেণী মিডিয়া জায়েজ মনে করে। আচ্ছা তারপরও ধরে নিলাম আটককৃত অনেকেই ছাত্রীসংস্থার সাথে যদি জড়িতও হয় তাহলে আমার প্রশ্ন হচ্ছে ছাত্রীসংস্থা তো কোন নিষিদ্ধ সংগঠন নয়? তাহলে ইসলামের কথা বলাই তাদের অপরাধ? আমি তো মনে করি এই অপরাধ মহাগৌরবের। এই সৌভাগ্য সবার কপালে জোটে না। আজকের আধুনিক জাহিলিয়াতের সময়ে আল-ইসলামের সাথে এই ছাত্রীগুলো নিজেদের সম্পৃক্ত করেছে। চরিত্রবান, নামাযী, মেধাবী ও পর্দানশীন এই মেয়েরা দেশ ও জাতির সম্পদ। এরা হযরত সুমাইয়া (রা.) জয়নাব আল গাজালী, মিসরের শহীদ বেলতাগীর যোগ্য উত্তরসূরী। যে পিতা-মাতা এমন দ্বীনদার সন্তানদের জন্ম দিয়েছে তারা সত্যিই সৌভাগ্যবান। তাদেরকে অভিনন্দন। 
Legal Right : আইনগত অধিকার হলো সেই স্বার্থ যা আইনের নীতিসমূহ দ্বারা স্বীকৃত ও সংরক্ষিত। যেমন কথা বলার আধিকার, দল করার অধিকার, চলাফেরার অধিকার, যার মধ্যে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অধিকার নির্বিঘেœ করার অধিকার আমাদের সংবিধান স্বীকৃত। ঢাবি প্রশাসন কি এই অধিকার স্বীকার করে না? তাহলে ঢাবিতে ইসলামী ছাত্রী সংস্থা কাজ করতে পারবে না কেন? মাননীয় ভিসি মহোদয়ের কাছে জিজ্ঞাসা আপনি তো বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবক, পিতার সমতুল্য। কিন্তু আপনাদের মতো ভিসি মহোদয়েরা দলীয় আনুগত্য করতে গিয়ে কি পিতার মর্যাদা ভূলুন্ঠিত করতে দ্বিধাবোধ করেন না। এটা এ জাতির জন্য কলঙ্কের বেদনার ও লজ্জার। মাননীয় ভিসি মহোদয় নিজেকে একটু আওয়ামী বলয়ের বাইরে ভাবতে শিখুন। অন্তত ভিসির চেয়ারে বসাকালীন সময়টুকু হলেও। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রী আপনার নিকট আমানত। আপনি শুধু কি ছাত্রলীগের ভিসি? আপনার প্রশাসন কিভাবে এই সৎ চরিত্রবান মেয়েগুলোকে সারা রাত আটক করে রেখেছে। জানা গেছে ঐ মেয়েগুলোর প্রত্যেকেই তাদের ডিপার্টমেন্টে ভালো রেজাল্টের অধিকারী। তাহলে ৯০% মুসলমানের দেশেও এই মেয়েদের বোরকা পরাই কি একমাত্র অপরাধ। ধর্ম-কর্ম পালনে এটাই কি শেখ হাসিনার ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের উত্তম নমুনা? ভিসি মহোদয় আপনি সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হননি? যে মেয়েগুলোকে আপনি ছাত্রলীগের কথামত রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে গ্রেফতার করে সিট বাতিল করে অপমান করে বের করে দিলেন। এদের একজন যদি আপনার মেয়ে হতো? গভীর রাতে আপনার মেয়েকে এভাবে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে হয়রানি করলে আপনার কেমন লাগতো ? তাহলে বুঝতে পারবেন এই মেয়েগুলোর বাবা-মা কত উদ্বিগ্ন সময় কাটাচ্ছে! এ জাতির জন্য দুঃখজনক বিষয় আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হয়েও নিজেদেরকে দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে চিন্তা করতে পারলেন না!!
আমাদের ভিসি এবং প্রক্টর সাহেব মনে হয় ঢাবিতে ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে-ই কাজ করছেন। অবশ্য না করেও বা উপায় কি? চেয়ার ঠিক রাখতে হলে ছাত্রলীগের আনুগত্য শিরোধার্য। কারণ যারা পেপার-পত্রিকা আর নিউজ দেখেন রাবি, চবি, ইবিসহ সারা দেশে ছাত্রলীগের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিতের খবর। তারা প্রত্যেকেরই আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের আজ্ঞাবহ হওয়ার বিকল্প আছে কি? 
গত ০৭ নবেম্বর-২০১৪ ”এখন তোর আল্লাহ কোথায়?’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকের সংবাদ সবাইকে আঁতকে দিয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেছেন, আমার কাছে ‘নারী-পুরুষের পর্দা’ নামক একটি বই ছিল। আমার এ বইটি দেখে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাকে সভাপতির রুমে ডেকে নিয়ে বলে, তোর কাছে ইসলামী বই আছে, তুই জঙ্গি। ছাত্রীটি আরো বলেন, ওই সময় ছাত্রলীগের হলের নেতারা আমাকে বলে, তুই তো জঙ্গি, এখন তোর আল্লাহ কোথায়? তোকে বাঁচালে আমরা বাঁচাবো, তা ছাড়া কেউ বাঁচাতে পারবে না। ছাত্রীটি অভিযোগ করে বলেন, এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বা হলের প্রক্টর কেউই আমার কোনো কথাই শোনেন নি, তারা ছাত্রলীগ নেতাদের কথা মতোই কাজ করেছেন। কর্তৃপক্ষের উচিত এ ঘটনার সত্যতা যাচাই করে উপযুক্ত প্রতিবিধান করা। কারণ, প্রকাশিত এ সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় সমাজের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে ব্যাপক অস্বস্তি দেখা দিচ্ছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী যেখানে একমাত্র আল্লাহকেই ভয় পান বলে জোর গলায় বলেন। আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছেই তিনি মাথা নত করেন না বলে উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা দেন, সেখানে তার দলীয় নেতা-কর্মীরা তো দেখা যায়, আল্লাহকেও ভয় পাচ্ছেন না। তারা দম্ভ ভরে বলছেন, কোথায় তোর আল্লাহ? (নাউজুবিল্লাহ) উৎস : ইনকিলাব
গভীর রাতে একজন মেয়েকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে হয়রানি কত জঘন্য তা কি একবার ভেবে দেখেছেন?
গ্রেফতার হওয়া এই মেয়েগুলোর বাবা-মা কত উদ্বিগ্ন সময় পার করছে! অনবরত চোখের পানি ফেলছে পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু মজলুমের চোখের পানি বৃথা যায় না। মজলুমের ফরিয়াদ আর আল্লাহর আরশের মাঝখানে কোন দেয়াল নেই। আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করেন। তাহলে ৯০% মুসলমানের দেশেও এই মেয়েগুলোর নামায পড়া, ইসলামী অনুশাসন মেনে চলা আর বোরকা পরাই কি একমাত্র অপরাধ?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্দানশীন ও নামাযী ছাত্রীদের নিধনের সংক্ষিপ্ত একটি পরিসংখ্যান দেখুন-
১. ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইডেন ও বদরুন্নেছা কলেজে বোরকাধারী ছাত্রীদের হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। 
২. ২০১০ সালের ৩ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. একেএম শফিউল ইসলাম তার ক্লাসে ছাত্রীদের বোরকা পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তিনি ক্লাসে ‘মধ্যযুগীয় পোশাক বোরকা’ পরা যাবে না এবং এটি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কোনো পোশাক হতে পারে না বলে ফতোয়া জারি করেন। 
৩. ২০১০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে তল্লাশির নামে পর্দানশীন ও নামাযী ছাত্রীদের হয়রানির ঘটনা ঘটে। ছাত্রীদের রুম থেকে ইসলামী বই-পুস্তককে জেহাদী বই বলে তা জব্দ করে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রশাসনের সহায়তায় এ ধরনের কর্মকা-ে সারা দেশে বোরকাধারী ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
৪. ২০১১ সালের ৯ জুলাই উত্তরা উইমেন্স কলেজে ছাত্রী সংস্থার প্রচারপত্র দেখে ৩ ছাত্রীকে আটক করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত একজন শিক্ষিকা। পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাংচুরের মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। পরে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
৫. ২৩ মে ২০১২ ”ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে তল্লাশি করে বিভিন্ন বিভাগের নয় মেধাবী ছাত্রীকে আটক করেছে ছাত্রলীগ ও প্রশাসন।
৬. গত ২রা জুলাই-১২-চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের ছাত্রীরা হিজাব পরতে এবং নামায পড়তে বাধা দেয়া এবং নামায কক্ষ তালাবদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। এ সময় শিক্ষিকারা সেখানে রাখা বিভিন্ন ধর্মীয় বই, হিজাব পরা ও নামায পড়া নিয়ে কটূক্তি করেন। অঞ্জলি দেবী নামে এক শিক্ষিকা জুতা পরা অবস্থায় নামায ঘরে প্রবেশ করে তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘নামায ঘরে জুতা নিয়ে ঢুকেছি, কই আল্লাহ আমাকে কী করেছে?’ (আমার দেশ-০৩-১২-১২)
৭. বোরকা পরে ক্লাসে আসার অপরাধে এক ছাত্রীকে কলেজে ঢুকতে দেননি উত্তরা মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার গোলাম হোসেন। আরো পাঁচ ছাত্রীকে গেটে দাঁড় করিয়ে রাখেন। অধ্যক্ষ বোরকাকে ‘অড’ বা দৃষ্টিকটু’ ড্রেস উল্লেখ করে বলেন “একটা মেয়ে পায়ের নখ পর্যন্ত বোরকা পরে এসেছে এটা দৃষ্টিকটু।
৮. নামায আর পর্দা করার অপরাধে ৮ ছাত্রীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে বের করে দেয়া হয়। ইডেন কলেজের ছাত্রীদের করা হয় নির্যাতন। দেয়া হয় পুলিশে।
৯. ১২ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতা করার সময় ছাত্রী সংস্থার দুই কর্মীকে একটি রুমে আটক রেখে পুলিশকে খবর দেয় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। পরে তাদেরকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান তারা।
১০. ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বদরুন্নেছা কলেজ হল থেকে বের হওয়ার সময় বোরকা পরা দুই ছাত্রীকে ছাত্রলীগ নেত্রীরা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মিথ্যা মামলায় ১৪ দিন কারাভোগ করেন তারা।
১১. ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগে হিজাব পরায় কয়েকজন ছাত্রীকে গালমন্দ করে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছেন অধ্যাপক খুরশিদা বেগম। আবার শিক্ষার্থীদেরকে তার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন। নিজের দোষ ঢাকতে ওই অধ্যাপিকা ফোনে হত্যার হুমকির নাটক সাজিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আরো অনেক অজানা ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
ইডেন কলেজে ছাত্রলীগ নেতাদের মাধ্যমে ছাত্রীদের দিয়ে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার খবরে সর্বমহলে ঘৃণার সৃষ্টি হয়। এদিকে এ বছর পয়লা বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে লাঞ্ছিত হয় অর্ধশতাধিক ছাত্রী। একুশে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানেও তাদের হাতে লাঞ্ছিত হয় বেশ কয়েকজন ছাত্রী ও অভিভাবক। এছাড়া অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় রাজশাহী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের বোরকা ও হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়। সরকারিভাবে ধর্মীয় পোশাকবিরোধী এসব তৎপরতায় দেশে নারী ধর্ষণ, ইভটিজিং, ছাত্রী-শিক্ষিকা লাঞ্ছনাসহ নানা অনৈতিক কর্মকা- বেড়ে যায় বহুগুণে। বিশেষ করে সরকারদলীয় ক্যাডারদের দ্বারা যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনায় সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের অপরাধ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আওয়ামী মহাজোটের প্রথম চার বছরে সারা দেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৬৭ হাজার ২২৯টি। ছাত্রলীগ ক্যাডারসহ বখাটেদের হাতে লাঞ্ছনা ও যৌন হয়রানির শিকার হন অনেক ছাত্রী ও শিক্ষিকা। মহাজোট সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে ডিসেম্বরে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আন্দোলনরত বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের দমনের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারদলীয় ক্যাডারদের হাতে নিগ্রহের শিকার হন বহু নিরীহ নারী-শিশু। সারা দেশে অনেক নারীকে শহীদ করা হয়েছে।
বিগত ৫ বছরে ভয়াবহ নারী নির্যাতন থেকে বাদ যায়নি ছাত্রী-শিক্ষিকা অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মানবাধিকার নেত্রীও; সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার পর্দানশীন নারীরা। এই সরকারের নারী নির্যাতনের চিত্র অনেক ভয়াবহ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার এবং দলীয় ক্যাডারদের মাধ্যমে নিত্য নতুন পৈশাচিক কায়দায় চালানো নির্যাতনের চিত্রগুলো অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বিশেষ করে জঙ্গি কর্মকা-ের অপপ্রচার চালিয়ে ধর্মপ্রাণ নামাযী, বোরকাপরা ও ভিন্ন রাজনৈতিক মত ও আদর্শের কর্মী সমর্থকদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা ছিলো বেশি ভয়ংকর। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়াই নিরীহ নারীদেরকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের বহু ঘটনায় দেশ-বিদেশের বিবেকবান মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে এক্ষেত্রে সরকার ও তাদের মদদপুষ্ট মানবাধিকার এবং নারী সংগঠনগুলো ছিলো একেবারে নির্বিকার।
পশ্চিমা বিশ্বের মতোই ইসলামকে প্রতিপক্ষ মনে করে আওয়ামী লীগ। একে প্রতিরোধের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী এই সরকার। আজ নাস্তিক আর বাম-রামদের প্ররোচনায় নারী নীতির নামে একশ্রেণীর এনজিওদের মাধ্যমে মুসলমানদের, পরিবার প্রথা, বিয়ে প্রথা, মুসলিম নারীকে পর্দার আড়াল থেকে বের করে মুসলিম সভ্যতা, সংস্কৃতি ধ্বংস করতে চায় তারা। তারা এই দেশকে পাশ্চাত্য সভ্যতার অনুসারী বানানোর এজেন্ডা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। 
মানুষের প্রত্যাশা ছিল এই সরকারের প্রায় ক্ষমতাধর ব্যক্তিরাই নারী। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও স্পীকার, সংসদ উপনেতা, কৃষিমন্ত্রী, মহিলা হওয়ায় নারীদের অধিকার অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি নিশ্চিত হবে। কিন্তু তা না হয়ে নারীর অধিকার আওয়ামী শাসনামলে সবচেয়ে বেশি ভূলুন্ঠিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুখে নারী নীতির কথা বলেন, আর গভীর রাতে নামাযী, পর্দানশীন নিরপরাধ ছাত্রীদের গ্রেফতার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে আপনার সোনার চাঁদ ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ নাটক বন্ধ হবে কবে?। পৃথিবীর দ্বিতীয় মুসলিম দেশে বোরকা, হিজাবের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ অঘোষিত যুদ্ধে নেমেছে। কিন্তু এই যুদ্ধে তারা সফল হবে না। কারণ ইসলাম এদেশের মানুষের রক্তের সাথে মিশে আছে। হযরত আয়েশা (রা.) জ্ঞানের গভীরতা, হযরত খাদিজা (রা.) সফল ব্যবসায়ী হিসাবে সুখ্যাতি, হযরত ফাতিমা (রা.) নারীর মর্যাদা সংরক্ষণ, আর হযরত সুমাইয়া (রা.) ত্যাগের ঘটনা ইতিহাসে আজ ও অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। সুতরাং তাদেরই যোগ্য উত্তরসূরীদের উপর এই সরকারের জেল-জুলুম, গ্রেফতার, রিমান্ড আর নির্যাতন এবং শহীদ করে তাদের অগ্রযাত্রাকে ঠেকাতে পারবে না ইনশাল্লাহ।
আজ নারী দিবস। আওয়ামী শাসনামলে নামাযী ও পর্দানশীন নারীর যত অপমান!!! তথাকথিত নারী অধিকারের আন্দোলনকারীরা আজ কোথায়??? আমার মায়ের জাতির মর্যাদা একমাত্র দিয়েছে ইসলাম। আসুন ইসলাম নারীকে যে সম্মান দিয়েছে তা জানার চেষ্টা করি এবং বাস্তবায়নে সোচ্চার হই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন