নতুন বার্তা: ভয়ানক পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে মানুষ ৷ আশঙ্কাজনকভাবে কমে আসছে আমাদের শোনার ক্ষমতা ৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সম্প্রতি যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তার ভিত্তিতে বলা যায় পৃথিবীর অন্তত ১১০ কোটি মানুষের বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ৷
এমন পৃথিবীর কল্পনা করা রীতিমতো কষ্টকর ৷ যে পৃথিবীতে ভোরে সূর্য ওঠে ঠিকই, কিন্তু শোনা যায় না পাখির ডাক ৷ পর্যটন কেন্দ্রে ভিড় জমান ট্যুরিস্টরা কিন্তু শোনা যায় না ঝর্ণার কল কল শব্দ।
১২-৩৫ বছরের মধ্যেকার জনগোষ্ঠীর প্রায় ৫০ শতাংশের শোনার ক্ষমতা ভয়াবহ ভাবে কমে গিয়েছে বলে জানাচ্ছে হু ৷ মার্চের ৩ তারিখ, ‘আন্তর্জাতিক ইয়ার কেয়ার ডে’র একদিন আগে যে রিপোর্ট হু প্রকাশ করেছে তাতে জানা গেছে, স্মার্টফোন বা আইফোনে উচ্চগ্রামে বাজতে থাকা গান ইয়ারগ্লাগের মাধ্যমে ক্রমাগত শুনতে থাকার অনিবার্য পরিণতি অকাল বধিরতা৷ গবেষকরা বলছেন, ৮৫ ডেসিবেল শব্দ এক নাগাড়ে আট ঘণ্টা বা ১০০ ডেসিবেল শব্দ ক্রমাগত ১৫ মিনিট শুনলে শ্রবণযন্ত্রের ভয়াবহ ক্ষতি হয় ৷ অত্যাধুনিক ফোনগুলো থেকে এমনই জোরে গান শুনতে অভ্যস্ত নতুন প্রজন্ম ৷
এখানেই শেষ নয়। হু’র অভিযোগের তালিকায় রয়েছে নাইটক্লাব ও বিভিন্ন বারের শব্দ উৎপাদক বিশাল পাওয়ারহাউস বা অন্য অতিকায় স্পিকারগুলোও৷ এই ক্লাব ও বারগুলোতে তুলনামূলকভাবে অনেক ছোট এবং শব্দ নিরোধক ঘরে প্রবল আওয়াজে গান ও বাজনা শোনানো হয় ৷ তরণ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের শ্রবণযন্ত্র এর ফলেও ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ৷
হু’র পক্ষ থেকে এতিয়েন ক্রুগ জানিয়েছেন, ‘প্রতিদিন আরও বেশি বেশি করে তরুণ-তরুণী এই পথে এগোচ্ছেন এবং নিজের শ্রবণযন্ত্রটিকে বেশি করে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন ৷
এমনিতেই কয়েকশ’ বছর আগে, বজ্র-বিদ্যুতের আওয়াজকেই চূড়ান্ত বলে মনে করা হতো ৷ কিন্তু, যন্ত্রসভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কৃত্রিম শব্দের প্রাবল্য বহুগুণে বেড়ে গিয়েছে ৷ ভিড় রাস্তায় গাড়ি- ঘোড়ার আওয়াজে প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা কাটাতে হয় যাদের, তাদের কানের অবস্থাও বেশিদিন ভালো থাকবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন হুর বিজ্ঞানীরা ৷ তাই, যন্ত্রের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে প্রকৃতির আশ্রয় নেয়ার উপদেশ দিচ্ছেন হু’র গবেষকরা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন