মীর কাসেম আলীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, আমরা আদালতে বলেছি, এই মামলায় যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ দেয়া হয়েছে, তাতে দেখা যায়, কোনো সাক্ষী বলেনি যে, মীর কাসেম সরাসরি এই হত্যাকাণ্ডের সময় উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষ যেসব সাক্ষ্য প্রমাণ দিয়েছে তাতে প্রমাণ হয় না যে তিনি অপরাধ করেছেন। আর সরাসরি অপরাধের সঙ্গে জড়িত না থাকায় কারণে তার গুরুদণ্ড তথা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না।
আজ আপিল বিভাগে শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টবার ভবনের সভাপতির কক্ষের সামনে এক ব্রিফিংয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন এ কথা বলেন।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আপিল বিভাগ বলেছে, সরাসরি কোনো প্রমাণ পাওয়া না যায়, তাহলে ওই সময়ে প্রকাশিত বই-পত্র ছিল, তা পর্যালোচনা করে আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে। জবাবে আমরা বলেছি, জসীমের মামাতো বোন হিসেবে দাবি করেছেন প্রসিকিউশনের ১৭ নম্বর সাক্ষী। তিনি একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি ওই পত্রিকায় জসীমের কথা বলেননি। প্রসিকিউশন থেকে আরেকটা বই দেয়া হয়েছে। সেটা হলো অ্যাডভোকেট শফিউল আলমের লেখা একটি দীর্ঘ বই। সেখানেও জসীমের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কোনো কিছু বলা হয়নি।
আরেকটা রিসার্চ পেপার চিটাগাং থেকে দেয়া হয়েছে, সেখানে জসীম কিভাবে কোথায় মারা গেছে, তার হদিস দেয়া হয়নি। মীর কাসেম আলী কিভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, এটাও দেখানো হয়নি। যে সাক্ষ্য প্রমাণ আছে, অন্তত এই অভিযোগের জন্য তার অপরাধ প্রমাণিত হয়নি। তারপরও যদি আপনারা মনে করেন, অপরাধ প্রমাণ হয়েছে, তাহলে আমাদের নিবেদন থাকবে, যেহেতু মীর কাসেম আলী এই হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রিন্সিপাল অফেন্ডার হিসেবে প্রমাণ হয়নি। সেক্ষেত্রে তাকে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড দেয়া আইনগতভাবে উচিত হবে না।
মৃত্যুদণ্ড দেয়ার সময় আসামির চরিত্র দেখা হয়। মীর কাসেম আলী বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সেবার সেক্ষেত্রে ইবনে সিনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন হাসপাতাল করেছেন। এইভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি একটি টিভি চ্যানেলের কর্তা ছিলেন। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড জড়িত ছিলেন। এই আসামির মনে যদি বিন্দুমাত্র কোনো আশঙ্কা থাকতো, তাহলে এই মামলার যখন তদন্ত চলছিলো, ওনি বিদেশে গিয়েছেন, ফিরে আসতেন না। কিন্তু তিনি দেশে ফিরে এসেছেন।
এই সব কিছু বিবেচনা করে, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া উচিত হবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন