বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ রক্ষীবাহিনী যখন যাকে ইচ্ছা তখন তাকে তুলে নিয়ে যেত। এজন্য তাদের কোন বেগ পেতে হতো না। কারণ, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বলতে তখন তেমন কিছুই ছিলো না।বিটিভি আর বাংলাদেশ বেতারেই ছিল সীমাবদ্ধ। আর প্রিন্ট মিডিয়া বলতে বাকশালের আজ্ঞাবহ ৪ টি পত্রিকা। নিপীড়িত মানুষের খবর প্রচার করার কেউ বাকী ছিল না। ফলে নির্বিঘ্নে যাকে ইচ্ছা তুলে নিয়ে যেত বাকশালের রক্ষীবাহিনী। স্বজনহারা মানুষেরা নদীর তীরে খুঁজে ফিরতো হারিয়ে যাওয়া স্বজনের লাশ। কখনও গুলিবিদ্ধ, কখনও পৈশাচিক নির্যাতনের চিহ্নসহ, কখনও মস্তকহীন লাশ নিয়ে ফিরে আসতো। আর কখনো মিলতো না লাশের চিহ্নটুকুও। সে ভয়ানক ইতিহাসের মর্মান্তিক সমাপনী হয়েছে ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট।
দিন বদলে গেছে। এখন গণতন্ত্রের ব্যনারেই চলে বাকশাল। পুলিশের পোশাকেই ঘুরে বেড়ায় নব্য রক্ষীবাহিনী। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দেশ বদলে গেছে। তালে তাল মিলিয়ে বদলে গেছে বাকশাল। যাকে গুম করতে ইচ্ছা হয় তার অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য খুব বেশি গোয়েন্দা খরচ করতে হয় না। মোবাইল ট্র্যাকিং করে অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায় চোখের পলকেই। তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য আছে হাজার হাজার মাইক্রোবাস। এখন রাজধানীর অলি গলি সিসি ক্যামেরায় নিয়ন্ত্রিত। তাই কাউকে গোপনে তুলে নিয়ে যেতে হলে একটু সমস্যাই বটে। কিন্তু তাতে কি!
গতকাল বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের প্রাণপুরুষ মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযমের পুত্র সাবেক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তাই এলাকার সকল সিসি ক্যামেরা খুলে নিয়ে গেছে পুলিশ। বিশ্বের অন্য কোন দেশে এমন নজির আছে বলে আমাদের জানা নেই। এ ঘৃন্য ইতিহাসের পরিসমাপ্তি কিভাবে হবে তাও আমরা জানিনা।
শুধু এইটুকু হলফ করে বলতে পারি, সিসি ক্যামেরা লুট করা গেলেও আল্লাহর চোখকে ফাঁকি দেয়ার ক্ষমতা দুনিয়ার কোন জালিমের নেই। তিনি সর্বদ্রষ্টা। সর্বজ্ঞানী। আর জালিমদের তিনি বড়ই অপছন্দ করেন। তাই বলবো, সেই চোখকে ভয় করুন। যে চোখ কখনোই ঘুমিয়ে যায় না। এমনকি তন্দ্রাচ্ছন্নও হয় না। মজলুমের ডাক শোনার জন্য যিনি প্রতি রাতেই প্রথম আসমানে আসেন...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন