জামায়াতের ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের স্ত্রী সৈয়দা আফিফা আযম ছেলের সন্ধান চেয়ে রমনা মডেল থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন।
আজ (বুধবার) রাত পোনে দশটার দিকে রমনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর এই ডায়রি করা হয়।
এ সময় আবেদনকারী আফিফা আযমের সাথে আরো ছিলেন দুই আইনজীবী ও এক নাতি। তারা হলেন অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ইউসুফ মোল্লা ও নাতি বিলকিস।
গত ২২শে আগস্ট রাতে গোলাম আযমের ছেলে সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমীকে মগবাজারের বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে সাদা পোশাকের কয়েকজন সদস্য ধরে নিয়ে যায়। এর পর থেকে আর তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
সাধারণ ডায়রিতে অধ্যাপক গোলাম আযমের স্ত্রী নিজের বয়স ৮৪ বছর উল্লেখ করে বলেন, তিনি একজন বয়োবৃদ্ধা ও অসুস্থ নারী। তার ছয় ছেলে মেয়ের মধ্যে ৫জনই বিদেশে থাকায় তার কাছে থাকতো শুধুমাত্র তার ৪র্থ সন্তান আব্দুল্লাহিল আমান আযমী।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক এই ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের বয়স ৫৭ বছর এবং উচ্চতা ৫ ফুট সাড়ে ৬ ইঞ্চি উল্লেখ করা হয় সাধারণ ডায়রিতে।
থানায় ডায়রি করার বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট ইউসুফ মোল্লা টাইমনিউজবিডিকে জানান, রমনা মডেল থানার ওসি মশিউর রহমান সাধারণ ডায়রিটি গ্রহণ করেছেন। তিনি ইনস্পেক্টর (তদন্ত) আলী হোসেনকে এ বিষয়ে তদন্ত করার দায়িত্ব দেন। এ বিষয়ে পরিবারকে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সিদ্ধান্ত জানাবেন বলেও ওসি জানিয়েছেন বলে টাইমনিউজবিডিকে বলেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ।
এদিকে, সাধারণ ডায়রির একটি কপি টাইমনিউজবিডির পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। ওই সাধারণ ডায়রির লেখা হুবহু নিচে দেয়া হলো:
“বরাবর,
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
রমনা মডেল থানা
ডিএমপি, ঢাকা।
বিষয়: সাধারণ ডায়রীর আবেদন
জনাব,
যথাবিহীত সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারীনি বয়োবৃদ্ধা, অসুস্থ এক নারী সৈয়দা আফিফা আযম (৮৪), স্বামী মৃত অধ্যাপক গোলাম আযম, সাং ১১৯/২, কাজী অফিস লেন, বড় মগবাজার, থানা-রমনা, ডিএমপি, জেলা-ঢাকা আপনাকে অবহিত করছি যে, আমার ৪র্থ ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী, বয়স ৫৭, উচ্চতা ৫'৬'', গা্য়ের রং ফর্সা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেলকে গত ২২/৮/২০১৬ খ্রি: তারিখ রাত অনুমান ৯ ঘটিকার সময় উল্লেখিত ঠিকানায় ৭ম তলায় অজ্ঞাতনামা ২০-৩০জন দৃস্কৃতিকারী বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে বাসার গার্ড, গৃহকর্মী ও আমাদের ব্যবহারের ৭টি মোবাইল, ১টি ট্যাব ও সিপিওসহ আযমীকে বল প্রয়োগপূর্বক অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। বাসার নিচে গার্ড ও প্রতিবেশীদের নিকট জানতে পারি বাহিরে আরো ২৫-৩০জনের দল অবস্থান করছিল। তাকে বহনকারী গাড়ি নং ঢাকা মেট্রো–ঘ-১৪-১৬৮০সহ বহরে ২০টির মতো গাড়ি ছিল। সর্বমোট ৫০-৬০ জনের দলের অনেকে নিজেদেরকে ডিবির পরিচয় প্রদান করে। পরে আমরা থানা ও ডিবি অফিসে খোঁজ নিলে তাহারা জানায় আমার ছেলে তাহাদের কাছে নাই। পরের দিন পত্রিকায়ও এ ধরনের আটক/নিখোঁজ খবর প্রকাশ করে। আমি বৃদ্ধা মানুষ। আমার ৬ সন্তানের অন্যান্যরা দেশের বাহিরে অবস্থান করায় এই ছেলের সেবায় কোন রকম বেঁচে আছি। আবদুল্লাহিল আমান আযমীর অনুপস্থিতিতে আমি বিভ্রান্ত, সাথে সাথে আপনাদেরকে বিষয়টি অবহিত করতে পারিনি।
এমতাবস্থায় আমার ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমীর নিখোঁজ থাকার বিষয়টি আপনার থানায় সাধারণ ডায়রীর অন্তভূক্ত করে সন্ধান প্রদানে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করে বাধিত করবেন।
বিনীত নিবেদক
সৈয়দা আফিফা আযম”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন