বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। দুর্বল সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে কাউকে শাস্তি দেয়া ঠিক নয়। আশা করি, তিনি বেকসুর খালাস পাবেন।
বুধবার দুপুরে এ মামলার আপিলের শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
খন্দকার মাহবুব বলেন, মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে কখনও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হয়নি। হঠাৎ করেই তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য এ সব অভিযোগ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সরাসরি অপরাধে জড়িত থাকার কোন অভিযোগ নেই। শেখানো সাক্ষীরাও বলতে পারেননি তিনি কোথাও ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
খন্দকার মাহবুব বলেন, আলোচিত জসিম হত্যার বিষয়ে তার বোন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তার বোন স্বীকৃতি পত্রিকার সম্পাদক। মীর কাসেমের বিরুদ্ধে তিনি সাক্ষ্য দিলেও স্বাধীনতার পর ৪০ বছরে তার নিজের পত্রিকাতেও কখনও তিনি জসিম হত্যায় মীর কাসেমের জড়িত থাকার কথা বলেননি।
খন্দকার মাহবুব বলেন, নিহত জসিমের ভাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। এই হত্যাকা-ে মীর কাসেম জড়িত থাকলে তিনি সাক্ষ্য দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। জসিম কখন কোথায় মারা গেছেন তার কোন তথ্য-প্রমাণ নেই বলেও এ সময় জানান খন্দকার মাহবুব।
মীর কাসেম আলীর আইনজীবী আরো বলেন, ‘এ ছাড়া ডালিম হোটেলে স্বপন নামের এক ব্যক্তি খাওয়ার পরিবেশন করত। সে ব্যক্তিকে সাক্ষী হিসেবে আনা হয়নি। আদালতও বলেছে, এ মামলায় প্রসিকিউশন মামলা পরিচালনার জন্য তথ্য-উপাত্ত দিতে পরেনি। তাই আমরা আশা করি, মীর কাসেম আলী বেকসুর খালাস পাবেন। কেননা প্রসিকিউশন যখন তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়, তখন ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী এর আইনি সুবিধা আসামি পেয়ে থাকেন।’
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শফিউল আলমের লেখা বই প্রসিকিউশন আদালতে উপস্থাপন করেছে। কিন্তু ওই বইয়ের কোথাও মীর কাসেমের নাম নেই। ডালিম হোটেলের ঘটনায় তার জড়িত থাকার কথাও বইয়ের কোথাও বলা হয়নি।
খন্দকার মাহবুব বলেন, আইনগতভাবে সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকায় এ মামলায় বেনিফিউ অব ডাউটের সুবিধা পেতে পারেন মীর কাসেম আলি। এ সব যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে তিনি মীর কাসেম আলীর বেকসুর খালাস দেয়ার আবেদন জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আদালত বলেছে প্রসিকিউশন সঠিকভাবে তদন্ত করতে পারেনি। সঠিকভাবে তদন্ত না হলে পুনর্বিচার হতে পারে। অথবা আসামি খালাস পেতে পারেন। দুর্বল সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে কাউকে শাস্তি দেয়া ঠিক নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
খন্দকার মাহবুব বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্কে বলা হয়েছে মীর কাসেম ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন এবং সেই সূত্রে আলবদরের কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। কিন্তু মীর কাসেম আলবদরের সাথে জড়িত ছিলেন না। আলবদরের তালিকার কোথাও তার নাম নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন