রাত প্রায় ১১ টা।
বাইরে দরজার সামনে কলিংবেল চাপছে কে বা কারা।
ভেতরে কলিংবেল বাজছে।
আরমান দরজার সামনে এসে রিপিট দিয়ে দেখলেন ৭-৮জন লোক সিভিল ড্রেসে দাড়িয়ে আছেন।
দরজা না খোলে ড্রয়িংরুমে সোপায় গিয়ে বসলেন আরমান। তাঁর স্ত্রী এগিয়ে আসেন।
তখন তাঁকে দরজা খোলার জন্য বললেন আরমান।
আরো বললেন তাদের সাথে যেন সুন্দর ব্যবহার করা হয়।
তখন তাহেরা তাসনীম রান্নাঘরে ছিলেন।দরজা খোলার পর তারা জানতে চায় আরমান কোথায়।
এক পর্যায়ে আরমান দরজার দিকে এগিয়ে গেলেন। আগন্তকরা বললেন, তাদের সাথে আরমানকে যেতে হবে।
তিনি তখন তাদের পরিচয় জানতে চাইলেন এবং পরিচয়পত্র দেখতে চাইলেন।
র্যাব, ডিবি, সিআইডি, ডিজিএফআই, এসবি নাকি অন্য কোন বাহিনী থেকে তারা এসেছে সেই পরিচয় জানতে চাওয়া হয় তাদের কাছে।তারা পরিচয় বলেনি। বারবার আরমান তাদের পরিচয় জানতে চাওয়ার পরও তারা বলেনি।
তাদের পোশাকে কোন ইউনিফর্ম ছিল না এবং কোন এরেষ্ট ওয়ারেন্ট তারা দেখাতে পারেনি।
তারা শুধু বলতে থাকল আমাদের সাথে যেতে হবে।
কেন তারা আরমানকে নিতে চাচ্ছে, বারবার জানতে চাওয়ার পরও তারা কোন কারন জানায়নি।
কোথায় নিয়ে যাবে সেটা জানতে চাইলেও জানায়নি। আরমান তখন তাদের উদ্দেশ্যে বলেন,
তিনি একজন আইনজীবী। একজন আইনজীবী হিসাবে তার জানা দরকার কেন, কোথায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে।
এসব কথার মাঝেই তারা বললেন, আপনাকে তৈরি হওয়ার জন্য ৫মিনিট সময় দিলাম।
এর মধ্যে তৈরি হয়ে আমাদের সঙ্গে যেতে হবে।তখন দরজা বন্ধ করে দিয়ে তারা ভেতরে আসেন।
আরমান তখন তাদের জানান তাদের সাথে যাওয়া ছাড়া হয়ত: কোন বিকল্প এই মূহুর্তে নেই।
তাঁর স্ত্রী তখন অনুরোধ করতে থাকলেন না যাওয়ার জন্য। বোন তাহেরা তাসনীমও একই অনুরোধ করতে থাকলেন।
না গেলে তারা কি করে সেটা দেখা পর্যন্ত অপেক্ষা করা এবং যে কোন উপায়ে সময় পার করার জন্য তাঁকে অনুরোধ জানাতে থাকলেন বোন এবং স্ত্রী।
কিছুক্ষণ পর লোক গুলো আবার দরজা নক করতে থাকল। পুনরায় দরজা খোলা হয়।তাঁর স্ত্রী তখন এগিয়ে এসে লোকদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন, আপনারা পরিচয় না দিয়ে এবং এরেষ্ট ওয়ারেন্ট ছাড়া এভাবে কাউকে নিতে পারেন না।
তাহেরা তাসনীমও এগিয়ে এসে বলেন, কোন পরিচয়পত্র না দেখিয়ে আপনারা আমার ভাইকে এভাবে নিতে পারেন না।
এটা আপনারা করতে পারেন না। রাত শেষ হলে সকালে আসেন এবং দিনের আলোতে তাঁকে নিয়ে যান।
রাঁতের আধারে পরিচয় না দিয়ে ওয়ারেন্ট ছাড়া নিতে পারেন না।তারেহা তাসনীম এক পর্যায়ে তাঁর ভাইয়ের সামনে এসে দাড়ান।
আগন্তক লোকরা তাঁকে নিয়ে যেতে চাইলে হাত ধরেন এবং বলেন আপনারা এভাবে তাঁকে নিতে পারেন না।
তখন তাঁর হাত ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয় এবং আরমানকে নিয়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে থাকে।
তাঁর স্ত্রী এবং বোনও পেছনে পছেনে নিচে নামে। নিচে বাসার সামনে অপেক্ষমান একটি সাদা বড় মাইক্রোবাসে তাঁকে উঠানো হল।তারপর তাঁকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে কেউ জানে না।
,
এই ছিল ডেভিড বাগম্যানের ফেইসবুক স্ট্যাটাসে যা উঠে এসেছে আরমানের বোনের বর্ণনায়।
,
প্রশ্ন হচ্ছে এটাই কি আজকের বাংলাদেশের বাস্তবতা?
সুপ্রিমকোর্টের একজন আইনজীবীকে এভাবে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে সবাই নীরব থাকবে-এর নামই কি মানবতা!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন