বাংলাদেশ বার্তা ০১ আগষ্ট ২০১৬ইং সোমবার: আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী আর শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সরব পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল কুমিরা ক্যাম্পাস। বলা যেতে পারে পবিত্র রমজান মাসের শেষের দিকে হঠাত্ শোনা গেলো সিটি ক্যাম্পাসে ছাত্ররা বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শবেক্বদর, ঈদ ইত্যাদী বিবেচনা করে এবং ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সমাধান কল্পে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর শবেক্বদর, ঈদ ইত্যাদী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ১১ জুলাই’১৬ পর্যন্ত ছুটি ছিল। ঈদের ছুটির পর আবার ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য আন্দোলনে নামে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে সমস্যার সাথে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম সম্পর্কে কিছু বিভ্রান্তিও ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকবৃন্দ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। আন্তাজাতক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ ছাত্র-ছাত্রী প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সমাধান করার জন্য জুলাই মাসের বাকি সময় ক্লাস ছুটি ঘোষণা করে।
এই সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, সিন্ডিকেট, ডীন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পর্যায় মতবিনিময় সভা করে সমস্যা সমাধানে সকলের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করে। সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত একটি বিশেষ কমিটি আন্তরিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছিল।
সম্প্রতি আদালত দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার প্রেক্ষিতে সরকার ও ইউজিসি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আউট ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোসণা করায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ কিছুটা বিপাকে পড়ে যায়। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে আন্তাজাতক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে পজিটিভ হিসেবে গ্রহণ করে এবং ইউজিসির শর্ত মেনে শহর থেকে কুমিরাতে নিজস্ব ক্যাম্পাসে সকল একাডেমিক কার্যক্রম স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং পহেলা আগষ্ট থেকেই কুমিরাতে নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত সকল ক্লাসসমূহ শুরু করার পরিকল্পনা করতে থাকে।
ইতো মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের উদ্যোগে সারা দেশে এক যোগে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও র্যালী কর্মসূচী ঘোষণা দেয়ায় আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ ছয়হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশাল মানববন্ধন ও র্যালী কর্মসূচী পালনের মাধ্যমে নিজস্ব ক্যাম্পাসে আগমনের এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার পরিকল্পনা করে। তবে কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষক কর্মকর্তাদের আশংকাও ছিল দীর্ঘ বন্ধের পর এই স্বল্প সময়ের নোটিশে এত বিশাল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত করা সম্বব হবে কিনা।
পহেলা আগষ্ট ২০১৬ইং তারিখ সোমবার সকাল ১০টা থেকেই ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-কর্মকর্তা এবং শহরে অবস্থানরত কর্মচারীগণ আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম কুমিরায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করে এবং বেলা ১১টার মধ্যেই সকল আশংকা মারিয়ে পাঁচসহস্রাধিক ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সরব পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে সমুদ্র ও পাহাড় ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত কুমিরা ক্যাম্পাস।
রং বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুনসহ প্রাণবন্ত হয়ে উঠে এবং উত্সব আমেজে ভড়ে উঠে ক্যাম্পাস। এতে উত্ফুল্ল যেমন ছাত্র-ছাত্রীরা তেমনি শিক্ষক, কর্মকর্তারও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে। সকল দিকে সুশৃংখলা থাকায় পরিকল্পনা এবং জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও র্যালী কর্মসূচী- সফল বাস্তবায়ন হওয়ায় কর্তৃপক্ষ উজ্জীবিত।
তবে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. ফরিদ আহমদ সোবহানীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্র-ছাত্রীরা এখনও কিছু কিছু সমস্যা মোকাবেলা করছে। আর কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা গুলি সমাধান করতে খুবই আন্তরিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা, ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সমাধানে ছাত্র-ছাত্রী, তাদের অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন