আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ একটি বিপ্লবী নাম, একটি আন্দোলন, একটি সংগঠন, একটি ইতিহাস, একটি আপষহীন সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি। এই ভূখন্ডে বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রাম, জাতির উত্থান-পতন, প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী বিরোধী সংগ্রামে জনাব মুজাহিদ একটি অকুতোভয় নাম। তিনি আধিপত্যবাদ ও সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী চেতনার বিপরীতে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। বাংলার জমিনে নাস্তিকতাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের রক্তচক্ষু মোকাবেলা করে তৃণমুল থেকে গড়ে উঠে আসা একজন সংগ্রামী প্রাণপুরুষ। নীতির প্রশ্নে সদা আপোষহীন এই মানুষটি কেবলমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার আপরাধে ফাঁসির মুখোমুখি আজ দন্ডায়মান। সরকার শুধুমাত্র আদর্শিক কারণেই ইসলামী আন্দোলনের এই জনপ্রিয় নেতাকে হত্যার পাঁয়তারা করছে।
জনাব মুজাহিদ ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্ত একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অনুপম কারিগর। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্মানীত আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেছেন। মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে কায়েম করেছেন সততা, ইনসাফ, সত্যবাদিতার উজ্জল উদাহরণ। আতœত্যাগ, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দেশ প্রেমের সাক্ষর রেখেছেন প্রতিটি ক্ষেত্রে। জনগণের মধ্যে জাগিয়ে তুলেছেন সোনার বাংলাদেশ গড়ার মিশন ও ভিশন। আবিষ্কার করেছেন সন্ত্রাস, দূর্নীতিম ও অপরাজনীতিমুক্ত একটি সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন। তাঁদের এই ঐতিহাসিক ভূমিকা দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দু,নেতার এ সাড়া জাগানিয়া আয়োজনে আওয়ামী-বামদের হিংসা, ক্রোধ, জিঘাংসা বৃদ্ধি পেতে থাকে তাদের বিরুদ্ধে। তাই ষড়যন্ত্র আর কুটকৌশলের মধ্যে দিয়ে চলতে থাকে রাষ্ট্রীয় আয়োজনে হত্যা করার ঘৃন্য চক্রান্ত।
আল্লাহর দ্বীনের গোলামদের মধ্যে তবুও যেন নেই উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা! মাবুদের সাথে কৃত ওয়াদা ”রাদিআল্লাহু আনহু ওয়া-রাদু আনহু” আল্লাহর সন্তুষ্টিই যেন জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ পাওনা। ফাঁসির কাষ্ঠেও তাঁরা অটল ও অবিচল। শাহাদাতের অমিয় তৃষ্ণায় যেন তারা পিপাসার্ত। কোন কিছুই যেন তাঁদের কাবু করতে পারছে না! ঠিক একই কায়দায় অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে তাঁরই দু অন্তরঙ্গ সাথী শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান আর শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে। জালিমের জুলুমের শিকার হয়ে চির-বিদায় নিয়েছেন এ আন্দোলনের আধ্যাতিœক নেতা অধ্যাপক গোলাম আযম, মাওলানা এ.কে.এম ইঊসুফ, অধ্যাপক এ.কে.এম নাজির আহমদ সহ আন্দোলনের অসংখ্য নেতা-কর্মীরা। কিন্তু এ বিদায় মুমীন বান্দাহর জন্য শেষ নয়। এটি অনন্ত জীবনের সূচনা মাত্র।
ব্যক্তি জীবনে অল্পে তুষ্ট, নির্লোভ, পরোপোকারী, দৃঢ়চেতা, সংগ্রামী জননেতা মোহাম্মদ মুজাহিদ খুব অল্প সময়ে ৫৫ হাজার বর্গমাইলের এই জনপদ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। নিজের কর্ম তৎপরতায় সদা তৎপর তিনি। যার ফাঁসির রায় নিয়ে সারা বিশ্ব এখন উদ্বিগ্ন! কিন্তু তাঁর মধ্যে নেই কোন হতাশা আর ভয়ের ছাপ! বরং তিনি মৃত্যুদন্ড বহাল রাখার রায় শুনে আইনজীবীদের কাছে বললেন-”সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শাস্তির জন্য আমি মোটেই বিচলিত নই। আমি পত্রিকার মাধ্যমে অবহিত হয়েছি যে, আপীল বিভাগে আমার পক্ষে আইনজীবীরা যথেষ্ট বলিষ্ঠভাবে এবং দৃঢ়তার সাথে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ঐসব মিথ্যা অভিযোগে দোষী আমাকে সাব্যস্ত করার কোনো সুযোগ নেই। রাষ্ট্রপক্ষ আমার বিরুদ্ধে আনীত কোনো অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি।
এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ট্রাইবুনালে জেরার সময় স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশের কোথাও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সংঘটিত কোনো অপরাধের সাথে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম না। এমনকি আমি আদৌ আল বদর, শান্তি কমিটি, রাজাকার, আল শামস বা এই ধরনের কোনো সহযোগী বাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম এমন কোনো তথ্য তিনি তার তদন্তকালে পাননি। এর পরও আমার মৃত্যুদন্ড বহাল রাখা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
আমি আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে বলছি, আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা ও বানোয়াট। ১৯৭১ সালের যুদ্ধকালীন সময়ে কোন ধরনের অপরাধের সাথে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম না। শুধুমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার অপরাধে এত বছর পরে আমার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা অভিযোগ সাজানো হয়েছে।
প্রতিদিন বাংলাদেশে শত শত লোক স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করে। এসব মৃত্যুর সাথে ফাঁসির আদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। কখন, কার, কিভাবে মৃত্যু হবে সেটা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা নির্ধারণ করেন। আল্লাহর সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো সাধ্য কারো নেই। সুতরাং ফাঁসির আদেশে কিছু যায় আসে না। আমি মৃত্যুদন্ড বহাল রাখার ঘোষণায় উদ্বিগ্ন নই।
অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা গোটা মানব জাতিকে হত্যা করার শামিল। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে, যে শাস্তির ব্যবস্থা করেছে তার জন্য আমি মোটেই বিচলিত নই। আমি আল্লাহর দ্বীনের উদ্দেশ্যে আমার জীবন কুরবান করার জন্য সব সময় প্রস্তুত আছি।"
এই ক্ষণজন্মা, মহান ব্যক্তিত্বের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি। তাঁর পিতা প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবীদ মাওলানা আব্দুল আলীর কাছে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার হাতেখড়ি। জনাব মুজাহিদের পিতা মাওলানা আব্দুল আলী একজন ধর্মীয় ও আধ্যাতিœক নেতা হিসেবে আজও ফরিদপুরসহ গোটা অঞ্চলের মানুষের নিকট শ্রদ্ধার পাত্র। তিনি জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬২-১৯৬৪ সাল পর্যন্ত প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যও (এমপিএ) নির্বাচিত হয়েছিলেন।
জনাব আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ফরিদপুর ময়জুদ্দিন স্কুল ও ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশুনা সুসম্পন্ন করে ভর্তি হন রাজেন্দ্র কলেজে। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ¯œাতক ডিগ্রী লাভ করেন। পরে তিনি উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় আগমন করেন। জানুয়ারী এবং ফেব্রুয়ারী মাত্র দুই-আড়াই মাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ক্লাস করার পর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় জনাব মুজাহিদ আর সেখানে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারেননি। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রী লাভ করেন।
ছাত্র রাজনীতি:-
এই মেধাবী চৌকস সচেতন মানুষটি ছাত্র-সমাজের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। শুরুতে রাজেন্দ্র কলেজে কিছুদিন এনএসএফ এ কাজ করেন। পরে তিনি ইসলামী ছাত্রসংঘের সাথে যুক্ত হন। জড়িয়ে পড়েন আল্লাহর জমিনে তাঁর দ্বীন কায়েমের আন্দোলনে। খুব অল্পসময়ের মধ্যে প্রতিভাবান এই সংগঠক তাঁর কর্মের মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ১৯৭০ সালে তিনি ফরিদপুর জেলায় ছাত্রসংঘের সভাপতি এবং ঢাকায় এসে তিনি ইসলামী ছাত্রসংঘের ঢাকা জেলার সেক্রেটারী নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৭১ সালের জুলাই তে ছাত্রসংঘের প্রাদেশিক সেক্রেটারী (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) মনোনীত হন এবং এর মাত্র দুই মাস পর অক্টোবরে তিনি ছাত্রসংঘের প্রাদেশিক সভাপতি নির্বাচিত হন।
কর্মজীবন:
জনাব আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ তার পেশাগত জীবন শুরু করেন নারায়নগঞ্জ আদর্শ স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে। তাঁর ঐকান্তিক চেষ্টার কারনে আদর্শ স্কুল আজও নারায়নগঞ্জ জেলায় সর্বশ্রেষ্ঠ স্কুল হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি নারায়াণগঞ্জের আদর্শ স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে কাজ করেন। যদি তিনি সত্যিই কোন অপরাধ করতেন তাহলে আওয়ামীলীগ অধ্যষিত নারায়ানগঞ্জে তিনি কি টিকে থাকতে পারতেন? পরবর্তীতে সাংগঠনিক প্রয়োজনে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। জনাব মুজাহিদ বাংলাদেশ পাবলিকেশন্স এর চেয়ারম্যান, দৈনিক সংগ্রামের চেয়ারম্যান এবং সাপ্তাহিক সোনার বাংলার পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। গ্রেফতার হওয়ার কিছু দিন পুর্বে তিনি ’রাইজিং সান’ নামক একটি ইংরেজী পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করছিলেন। জনাব মুজাহিদ গ্রেফতার হয়ে যাওয়ায় পত্রিকাটি আজও আলোর মুখ দেখেনি।
বৈবাহিক অবস্থা: জনাব আলী আহসান মো: মুজাহিদ ১৯৭৩ সালের ১৮ অক্টোবর বেগম তামান্না-ই-জাহানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তামান্না-ই-জাহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগরী মহিলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মো: মুজাহিদ এর ৩ পুত্র এবং একজন মেয়ে।
বৃহত্তর ইসলামী আন্দোলনে যোগদান: ছাত্রজীবন শেষ করার পরপরই জনাব আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮২-১৯৮৯ পর্যন্ত ঢাকা মহানগরী জামায়াতের আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও লিয়াজো কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০০ সালের ৮ ডিসেম্বর তিনি জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল মনোনীত হন এবং সেই থেকে আজ অবধি তিনি দায়িত্বশীলতার সাথে এই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
জাতীয় রাজনীতিতে অবদান: আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ বাংলাদেশের গনতান্ত্রিক রাজনীতির ইতিহাসে একটি সুপরিচিত নাম। একটি উজ্জল নক্ষত্র। বাংলাদেশের সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর বলিষ্ঠ ভুমিকা এবং জোট রাজনীতির প্রবর্তক তিনি। বিশেষ করে চার দলীয় জোটের প্রতিষ্ঠায় ঐতিহাসিক অবদান রেখেছেন তিনি। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা ও প্রতিটি গনতান্ত্রিক আন্দোলনেও তিনি কার্যকর ভুমিকা পালন করেন।
২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়। দেশে রাজনৈতিক ও গনতান্ত্রিক কার্যক্রম অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে। গনমাধ্যমে ঐ সময়ে বছরের সেরা আলোচিত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রথম কাতারে। দেশে গনতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে রাজপথে ছিলেন সদাতৎপর।
তিনি ১৯৬৯ এর গন অভ্যুত্থান ও ছাত্র আন্দোলনে, ১৯৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে, ১৯৯৪-১৯৯৬ কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে, ২০০০ সালে জনগনের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার আন্দোলনে এবং ২০০৭ সালে গনতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে তাৎপর্যপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন।
জনাব আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ তিন তিনবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করার পরও তৎকালীন স্বৈরশাসক এরশাদ এবং তার মনোনীত প্রার্থী মহব্বত জান চৌধুরী ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেই বিজয় ছিনিয়ে নেন। সমাজকল্যানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কালীন সময়ে তিনি মাদারীপুর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মাদারীপুর এবং নিজ জেলা ফরিদপুরে অসংখ্য সামাজিক ও কল্যানমুলক কার্যক্রমের সাথে জড়িত।
সামাজিক কার্যক্রম: -
নি:স্বার্থ একজন সমাজ সেবক হিসেবে আলী আহসান মো: মুজাহিদ এর ব্যাপক সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে। দেশজুড়ে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং মসজিদ ও এতিমখানা বিনির্মাণে তার সক্রিয় ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করে। জনাব আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ২০০১ সালের ১০ অক্টোবর গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহন করেন এবং মন্ত্রী হিসেবে সফলতার সাথে ৫ বছরের মেয়াদ সম্পন্ন করেন।
শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান:-
জনাব আলী আহসান মো: মুজাহিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারনে ২০০২ সালে তৎকালীন চার দলীয় জোট সরকার ফাজিলকে বিএ সমমানের এবং কামিলকে মাস্টার্স মানে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিভিন্ন ধরনের আর্থ-সামাজিক ও গবেষনা প্রতিষ্ঠান নির্মাণেও তাঁর ভূমিকা সক্রিয় ছিল।
তিনি বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলায় ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক শিশু সদন (সরকারী এতিমখানা) নির্মাণ করেন। যা সমাজের ভাগ্যহত ও অনগ্রসর কিশোর কিশোরীদের উন্নয়নের মূল ¯্রােতধারায় নিয়ে আসতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে। ২০০১ সালে যখন জনাব আলী আহসান মো: মুজাহিদ সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব নেন, তখন তা একটি দুর্বল বা লো প্রোফাইল মিনিস্ট্রি হিসেবে স্বীকৃত ছিল। কিন্তু তার ৫ বছরের মেয়াদের শেষে এটি হাই প্রোফাইল তথা আলোচিত মন্ত্রনালয়ে পরিণত হয়।
প্রতিবন্ধীদের পূনর্বাসন:-
জনাব মুজাহিদের যোগ্য নেতৃত্বে ২০০৪ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম প্রতিবন্ধী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি ’মুক্তা’ নামক একটি মিনারেল ওয়াটারেরও প্রবর্তন করেন। যা প্রতিবন্ধীদের দ্বারা প্রস্তুতকৃত এবং বাজারজাতকৃত। তার এই উদ্যেগের কারনে বাংলাদেশের নাম তখন বিশ্ব দরবারে ভিন্নভাবে প্রশংসিত হয়। তার সময় প্রতিবন্ধী অলিম্পিকেও বাংলাদেশ সফলতা অর্জন করে।
সুদ মুক্ত ঋন ও এসিডদগ্ধদের ভাতা:-
এছাড়া সুদ মুক্ত ঋন ও এসিডদগ্ধদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ভাতা প্রদান করা হয় তাঁর সময়ে। জনাব মুজাহিদ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় নিজে এই ভাতা বিতরণ করতেন। তাই তাঁর সময়ে গ্রামের অভাবী মানুষ সুদখোর মহাজন এবং বেসরকারী সংস্থার হাত থেকে মুক্ত হয়ে সরকারের কাছ থেকে বিশেষত সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের হাত থেকে ঋন নিতে শুরু করে।
লেখক মুজাহিদ :- আলী আহসান মো: মুজাহিদ একজন জনপ্রিয় এবং স্বনামধন্য লেখক। তার ৩টি বই পাঠক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বইগুলো হলো: আজকের মুসলমান ঃ ইসলামের দাবী, বিশ্বব্যাপী ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামী, তুরস্ক সফর। এছাড়া বেশ কিছু বই ও লেখনী ইংরেজী ভাষায় অনুদিত হয়েছে। জনাব মুজাহিদ ইসলামী শিক্ষা, আর্থ সামাজিক উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুর উপরও নিয়মিতভাবে লেখালেখি করেছেন।
দেশে ভ্রমন:-জনাব আলী আহসান মো: মুজাহিদ বিভিন্ন দেশে ভ্রমন করেছেন। এই সব দেশে তিনি গণ্যমান্য, প্রভাবশালী এবং ইসলামী নেতৃবৃন্দের সাথেও সাক্ষাৎ করেন। তার ভ্রমনকৃত উল্লেখযোগ্য দেশের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমীরাত, কাতার, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন, জাপান, থাইল্যান্ড এবং তুরস্ক।
এমন প্রতিভাসম্পন্ন, দেশপ্রেমিক, ইসলামী চিন্তাবিদকে আজ হত্যা করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। মানব সমাজে আজ মনে হচ্ছে সত্য পন্থীরাই যেন অপরাধী। প্রকৃত অপরাধীরা যেন সাধু!!! জালেমের বিষাক্ত হুংকার মানব সমাজকে আজ কাঁপিয়ে তুলছে। নির্যাতিতের করুণ ফরিয়াদে আকাশ বাতাস দলিত মথিত ও তিক্ত-বিষাক্ত। কিন্তুু তারপরও কি সত্য পথের সৈনিকেরা কি ভিত? না, বরং প্রতিটি মুমিন এই বিপদ সংকুল পথ পাড়ি দেয়াকে নিজের ঈমানী দায়িত্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেই এগিয়ে চলছে। এই রকম কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে সকল নবী রাসুল (স:) কে। যুগে-যুগে যারাই সেই পদাংক অনুসরন করবে, তাদের প্রত্যেককেই একই পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে এটাই স্বাভাবিক। এ পরীক্ষা কোন কারণে আসেনি। বরং এটি চিরন্তন।
অবাক করার ব্যাপার হচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও মিসরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মোহম্মদ মুরসিকে সাজা দিল আদালত একই দিন। একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বাধীনতার বিরোধীতা! অন্যজন ড. মোহম্মদ মুরসি স্বাধীনতার পক্ষের নেতা হয়েও সাজার ধরন কিন্তু একরকম!! অথচ ইখওনুল মুসলিমিন মিসরে স্বাধীনতা এনেছিল। তাহলে কি তাদের অপরাধ? তাদের আপরাধ একটাই। আল্লাহ বলেন -"ওই ঈমানদারদের সাথে তাদের শত্রুতার এ ছাড়া আর কোন কারণ ছিল না যে তারা সেই আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল"
আজ আমাদের প্রিয় নেতা জনাব মুজাহিদ ভাই সেই পরীক্ষায় অবতীর্ণ। কোনো এক ব্যক্তি রাসূলূল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! কবরে সকল মুমিনের পরীক্ষা হবে, কিন্তু শহীদের হবে না, এর কারণ কী? হুজুর (সা.) জবাবে বললেন, তার মাথার ওপর তলোয়ার চমকানোই তার পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট।’
আল্লাহর দ্বীনের দায়ী হিসেবে সারা বাংলাদেশে নয়, বরং ছুটে বেড়িয়েছেন পৃথিবীর অনেক প্রান্তে। মিথ্যা কালিমা আর ষড়যন্ত্রের কালো কাপড় কি সেই আলোচ্ছটাকে আবৃত করতে পারে? যেই শির আজন্ম এক পরওয়ারদিগার ছাড়া কারো কাছে নত হয়নি, ফাঁসির আদেশে সেই শির দুনিয়ার কোন শক্তির কাছে নতি শিকার করতে পারে?
মূলত আধিপত্যবাদী শক্তি এই দেশকে লুটপাটের প্রধান বাঁধা মনে করে এদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী শক্তিকে। এটি আজ আর কারোই বুঝতেই বাকী নেই। দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ এই অকুতোভয় সৈনিক তার সার্বিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে পালন করেছেন আপসহীন ভূমিকা। কোন শক্তির কাছেই তিনি মাথা নত করেননি। এক এগারো সরকার অনেকের মত তাঁকেও গ্রেফতার করেছে তথাকথিত দূর্নীতি মিথ্যা মামলা দিয়ে। কিন্তু সরকার জামায়াতের দু’নেতার সততার কাছে পরাস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কোন দূনীতি আবিস্কার করতে পারেনি। কারণ দূণীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া যাদের মিশন এবং ভিশন তারা কি দূণীতি করতে পারে?
আজ আওয়ামীলীগ জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যা করার দিনক্ষন ঠিক করে যেন আনন্দ উপভোগ করছে, তাদের কি জানা নেই যে, আল্লাহ তায়ালা মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণ, জীবন-মৃত্যু নিজের হাতে রেখে দিয়েছে? জন্মিলেই মৃত্যু অনিবার্য সত্য হল মৃত্যু। এ দুনিয়া থেকে সবাইকে বিদায় নিতেই হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু শহীদ কামারুজ্জামান শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা সহ এই দেশপ্রেমিক সিপাহসালারা মানুষের হৃদয়ে টিকে থাকবে শতাব্দী থেকে শতাব্দী। সুতরাং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে ইসলামী আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না।
যে আইন মানুষের মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী সে আইনইকে কালো আইন ছাড়া কি বলা যেতে পারে? বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ আইন একটি কালো আইন তা নিয়ে এখন আর কোন সন্দেহ নেই। এই আইন দিয়ে ন্যায় বিচার একেবারেই অসম্ভব। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত, সমালোচিত, বিতর্কিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, কালো আইন হিসেবে খ্যাত। যুক্তরাজ্যের হাউজ অব লডর্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফেন জে র্যা প বাংলাদেশ সফর করে সাফ বলেছেন-“১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালে প্রণীত আইন যথেষ্ট নয়।“
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এশিয়া বিভাগ, দ্যা ওয়ার ক্রাইমস কমিশন অব দ্যা ইন্টারন্যাশনাল বার এ্যাসোসিয়েশন, দ্যা ওয়ার ক্রাইমস প্রজেক্ট ও অ্যামনে¯িট ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে প্রয়োজনীয় সংশোধন ছাড়া এই আইনের মাধ্যমে বিচারকাজ চালিয়ে গেলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিতর্ক বাড়বে।” টাইম ম্যাগাজিনের রিপোর্টে আশঙ্কা করা হয়েছে, সরকার তার পরিচিত প্রতিপক্ষ এবং রাজনৈতিক শত্রুদেরকে দমন করতেই এ বিচারকে ব্যবহার করছে”।
জনাব মুজাহিদের মৃত্যুদন্ডের এ রায়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ব্যক্তিত্ব তাদের উদ্বেগ অব্যাহত রেখেছে। খ্যাতনামা বৃটিশ আইনজীবী ও পার্লামেন্টারিয়ান এবং মানবাধিকার প্রবক্তা লর্ড কার্লাইল “এই বিচারকে ন্যায়ভ্রষ্ট ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বিচারের মান, সাক্ষীদের সাক্ষ্যের গ্রহণযোগ্যতা, আদালতের কথিত বৈষম্যমূলক আচরণ, বিচারকদের নিরপেক্ষতা প্রভৃতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এবং বলেছেন যে, যে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে জনাব মুজাহিদকে ফাঁসির দন্ড দেয়া হয়েছে তা নিম্নমানের এবং তার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নেই।”
ব্রাসেলস ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা নো পিস উইদাউট জাস্টিস (NPWJ) নন ভায়েলেন্ট রেডিক্যাল পার্টি ও এনআরপিটিটি এই রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে “রোম সংবিধি অনুযায়ী ভিক্টিমের সঠিক বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। সংস্থার আইন উপদেষ্টা এলিসন স্মীথ কর্তৃক প্রদত্ত এই বিবৃতিতে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ বিচারের যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায্যবিচার নিশ্চিত না করায় তাদের অব্যাহত উদ্বেগের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয় ইতঃপূর্বে এই ট্রাইব্যুনাল যেসব রায় দিয়েছিল তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল যথেষ্ট উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানিয়েছিল, কেননা যে প্রক্রিয়ায় সেখানে বিচার কাজ চলেছে তাতে অভিযুক্তের ন্যায়বিচার পাওয়ার ন্যায্য অধিকার বারবারই লঙ্ঘিত হয়েছে। তাদের মতে মুজাহিদের মৃত্যুদন্ডের রায়টি হচ্ছে সেই ভ্রান্ত বিচার প্রক্রিয়া ও অন্যায্য রায়ের সর্বশেষ উদাহরণ।
বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগের পেছনে আরও যেসব কারণ ছিল তার মধ্যে রয়েছে আইসিটির বিচারকদের আইনের মূলনীতিসমূহ প্রয়োগে ব্যর্থতা, আসামী পক্ষের সাক্ষীর সংখ্যা ভয়াবহভাবে সীমিত করে দেয়া প্রভৃতি। বিবৃতিতে বলা হয় যে, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বকে প্রাধান্য দিয়ে অভিযোগের তদন্ত করা হয়েছে এবং তদন্তে রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিফলিত হয়েছে। এতে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্তদের দন্ড স্থগিত করে বাংলাদেশ কর্তৃক অনুস্বাক্ষরিত রোম সংবিধি অনুযায়ী অভিযুক্তদের জন্য সঠিক বিচার নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া শুরু করার আহ্বান জানানো হয়।”
জনাব মুজাহিদের আইনজীবী এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “'যে অভিযোগের ভিত্তিতে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে সেই হত্যাকান্ডের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তারা (রাষ্ট্রপক্ষ) আনতে পারেনি। এখানে ঢালাওভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, রায়ের পুর্ণাঙ্গ কপি হাতে পাওয়ার পর আমরা রিভিউ করবো। আমরা আশাবাদী সেখান থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসবে।”
মুলত: পৃথিবীর অনেক জায়গায় In the name of law তথা আইনের দোহাই দিয়ে ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। দার্শনিক সক্রেটিসকে হ্যামলক বিষ প্রয়োগে হত্যার রায় দিয়েছিল আদালত। জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিওকেও ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয় আদালতের নির্দেশেই। হাজার বছর পর এসে প্রমাণিত হয়েছে দুটি রায়ই ভুল রায় ছিল। এ জন্য বিচারককে পরকালে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে। বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে সেই অন্যায়টি-ই করছে বে-আইনী ভাবে। এটিও শাসক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণকে এক প্রকার ধোঁকা। দেশের জনগণ এটি খুব ভালোভাবেই জানে। বর্তমান সরকার কালো আইন দিয়েই বিচারের নামে প্রহসন করে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে রাজনীতি অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ইতিহাস সাক্ষী ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে কেউ সফল হয়নি। জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে আদর্শকে স্তদ্ধ করা যায় না।
শহীদ কামারুজ্জামান, শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার পর ইসলামী আন্দোলনের প্রাণপ্রিয় নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে দেশের জনগণ। বিক্ষুব্ধ ও ভারাক্রান্ত গোটা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ। নিরপরাধ এই প্রিয় মানুষগুলোর জন্য মাহে রমযানে আল্লাহর দরবারে বায়তুল্লাহর গেলাফ ধরে আর তাহাজ্জুতে জায়নামাজ চোখের পানিতে ভাসাবে পৃথিবীর লক্ষ-লক্ষ মানুষ। হে! মাবুদ কোন একটি ফরিয়াদকে তুমি কবুল কর। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের প্রানপ্রিয় নেতাকে মর্যাদার সাথে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দাও। হে! আরশের মালিক তুমি আমাদের অশ্রƒসিদ্ধ বিনীত ফরিয়াদ কবুল কর। আমীন।
লেখক: সহকারী সম্পাদক, সাপ্তাহিক সোনার বাংলা।