দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ বহিঃশত্রুর ষড়যন্ত্রের শিকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যতটুকু তার থেকে অনেক বেশি পিছিয়েছে এদেশের মীরজাফরদের উত্তরসূরীদের কারণে। এরা জেলি মাছের মত। জেলি মাছ অনেক সময় যেমন শামুক গিলে ফেলে। শামুকের শক্ত আবরণের জন্য সে না মরে বেঁচে থাকে। কিন্তু, তার বাঁচার জন্য খাদ্যের প্রয়োজন। তাই শামুক জেলির পেটের ভিতর থেকেই জেলি মাছকে খেতে শুরু করে। জেলি মাছকে সম্পূর্ণ খেয়ে সে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
এজন্য বলা হয় ঘরের শত্রু বিভীষণ। ভিতরের শত্রু সমাজকে খেয়ে শেষে ধ্বংস করে ফেলে। এ সমাজে দুই ধরনের বিশ্বাসঘাতক আছে। (ক) সক্রিয় বিশ্বাসঘাতক। (খ) নিষ্ক্রিয় বিশ্বাসঘাতক। সক্রিয় বিশ্বাসঘাতকরা ব্যক্তিগত লাভের আশায় মাতৃভূমিকে বিক্রি করে দেয়। নিষ্ক্রিয় বিশ্বাসঘাতক মাতৃভূমিকে বিক্রি হতে দেখে নীরব থাকে। তারা সরব হয় না। তাই ব্রিটিশরা যখন সমস্ত বাংলা দখল করার প্রয়োজন মনে করল, তখন মীরজাফর এবং নবাবের উচ্চাকাক্সিক্ষত মন্ত্রীরা তাদেরকে এ বিষয়ে সাহায্য করেছিল।
পরবর্তী নবাব হওয়ার লোভে মীরজাফর সিরাজউদদৌলাকে পলাশীর যুদ্ধ ক্ষেত্র হতে সৈন্য পিছানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন, অথচ সৈন্যরা ব্রিটিশ বাহিনীকে পরাজিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছিল। সিরাজউদদৌলা তাঁর বিশ্বাসী মন্ত্রীর উপদেশ গ্রহণ করে সাম্রাজ্য এবং জীবন উভয়ই হারালেন। মীরজাফর বিশ্বাসঘাতকতা করে মাতৃভূমিকে বিদেশীদের হাতে তুলে দিলেন। লোভ বিশ্বাসঘাতকদের একমাত্র ধর্ম। একজন বিশ্বাসঘাতক ব্যক্তিগত লাভের জন্য শয়তানের সাথে রাতের খাবার খেতে পারে। আর এই বিশ্বাসঘাতকতার সাথে যুগে যুগে ক্ষমতার লোভে কতিপয় রাজনীতিবিদরাই জড়িয়েছে বেশি। তরুণ প্রজন্মকে নিজেদের প্রয়োজনেই এদেরকে চিহ্নিত করতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন