বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক সমাজকল্যান মন্ত্রী জনাব আলী আহসান মো: মুজাহিদের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগ মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রাখায় লন্ডনে এক তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা ও সিনিয়র আইনজীবী লর্ড কার্লাইল কিউসি বলেন, বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্ট জনাব মুজাহিদের বিরুদ্ধে ট্রাইবুনালের দেয়া মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রাখায় আমি গভীরভাবে হতাশ হয়েছি। কেননা জনাব মুজাহিদের এই মামলা এবং ইতোপূর্বে বিচার সম্পন্ন হওয়া আব্দুল কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের মামলায় বিচারিক প্রক্রিয়া মোটেও আন্তর্জাতিক বিচারের মানসম্মত ছিল না।
আর মুজাহিদের এই আপীল শুনানীটি ছিল দ্রুততম, পক্ষপাতমূলক। আর মামলার প্রতিটি ধাপে প্রত্যক্ষ স্বাক্ষীর অভাব এবং আদালতে আসা স্বাক্ষীদের অসংগতি ও বিচারকদের হস্তক্ষেপ ছিল চোখে পড়ার মত। অভিযুক্ত পক্ষ ট্রাইবুনালে তাদের পুর্নাংগ আইনী লড়াই চালানোর সুযোগ পায়নি। তাছাড়া বিচারিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব এবং বার বার অযাচিত রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিষয়টিও আমাদের নজরে এসেছে।
আমি খুবই উদ্বিগ্ন কেননা এতসব গড়মিল ও অসামঞ্জস্যতা থাকার পরও আরো একজন মানুষ নিশ্চিতভাবেই মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
যে অভিযোগে জনাব মুজাহিদের মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রাখা হয়েছে তা খুবই অসংগতিপূর্ন। এই অভিযোগে প্রত্যক্ষ ও নির্ভরযোগ্য এবং ভিকটিম কোন স্বাক্ষী আদালতে অভিযুক্ত মুজাহিদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দিতে আসেননি। বরং প্রসিকিউশন ট্রাইবুনালে এমন একজন স্বাক্ষী হাজির করে যার বয়স ১৯৭১ সালে ছিল মাত্র ১৪ বছর। তাছাড়া তিনি তার জবানবন্দীতে একটিবারের জন্য কোন হত্যাকান্ডের সাথে অভিযুক্তকে সম্পৃক্ত করেননি।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে পরিস্কারভাবে জানিয়েছিলেন যে, তিনি তার ১৮ মাসের তদন্তকালীন সময়ে জনাব মুজাহিদের নাম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছে এমন কোন সহযোগী বাহিনীর তালিকায় পাননি। তিনি এটাও স্বীকার করেছেন যে, আলী আহসান মো: মুজাহিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে সংঘঠিত কোন অপরাধের দায়ে বাংলাদেশের কোন থানায় বা আদালতে কোনদিন বিগত ৪৪ বছরে কোন মামলা বা জিডি দায়ের হয়নি।
তদন্তকারী কর্মকর্তার এই ধরনের স্বীকারোক্তি এবং মামলায় স্বাক্ষীদের প্রচন্ড অসামঞ্জস্যতা থাকার পর সুপ্রীম কোর্টে মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল থাকা দু:খজনক এবং ন্যায় বিচারের চেতনার পরিপন্থী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন